যশোর শিক্ষা বোর্ডে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ

চেয়ারম্যান, সচিবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

যশোর মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে চেক জালিয়াতি করে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান, সচিবসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সোমবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামিরা হলেন যশোর মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক শরিফুল ইসলাম বাবু শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক আশরাফুল আলম। মামলার রাতেই চেয়ারম্যান সচিব তাদের বাংলো থেকে পালিয়ে গেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব হারুণ অর রশিদকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধনী এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রস্তুত কমিটির সদস্য হিসেবে সম্মানী বাবদ ২৫ হাজার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী ২৫ হাজার টাকার বিপরীতে আড়াই হাজার টাকা আয়কর কাটা হয়। গত বছরের আগস্ট আড়াই হাজার টাকা আয়করের চেক বই প্রস্তুত করা হয়। হিসাব সহকারী আবদুস সালাম চেকের মুড়ি বইয়ে আড়াই হাজার টাকা লিখলেও চেকে প্রাপক হিসেবে ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিখে ২৫ লাখ ৮০ হাজার ১০ টাকা ইস্যু করা হয়। এতে সচিব চেয়ারম্যান স্বাক্ষর দেন। সেই চেক শরিফুল ইসলাম বাবু ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখায় তার নিজস্ব অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে টাকা ভাগাভাগি করে নেন। এভাবে আয়কর বাবদ ১০ হাজার ৫৩৬ টাকার স্থলে নয়টি চেকের মাধ্যমে কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা আত্মসাৎ করেন আসামিরা।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের অডিট অফিসার আবদুস সালাম জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের মালপত্র ক্রয় বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার নয়টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায়, যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং সাতটি শাহীলাল স্টোর নামে দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা চেকের মুড়ি বইয়ের সঙ্গে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় জালিয়াতি ধরা পড়ে।

দুদক যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছি। সরকারের টাকা আত্মসাৎ করে কেউ পার পাবে না।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, বোর্ড চেয়ারম্যান তিনদিন এবং সচিব একদিনের ছুটিতে আছেন। গতকাল তারা কেউ অফিসে ছিলেন না।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান জানান, মামলা হওয়ার পর চেয়ারম্যান সচিব মহোদয় সোমবার রাত ৯টার দিকে সরকারি বাসভবন থেকে একটি প্রাইভেটকারযোগে পালিয়ে গেছেন। গতকাল তারা কেউ অফিস করেননি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন