রোহিঙ্গারা দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করছে —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আটকে পড়া পাকিস্তানিরা দেশের জন্য দেশের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বাংলাদেশে নবনিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যানা জেরার্ড ভ্যান লিউয়েনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্কালে কথা বলেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা চার বছর ধরে বাংলাদেশে আছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু পাকিস্তানি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আটকা পড়ে আছে। তারা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বন পরিবেশ ধ্বংস করছে।

সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, এনজিও কর্মকর্তা আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে সবাই মনে করেন। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে একটি বদ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে।

বাংলাদেশের উন্নয়নে নেদারল্যান্ডসের অবদান এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়নে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকার দেশের নদীগুলোর পানির ধারণক্ষমতা বাড়াতে ড্রেজিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নেদারল্যান্ডস সফর স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, নেদারল্যান্ডসে কৃষির সংরক্ষণে গ্রিন হাউজ প্রকল্প দেখে অভিভূত হয়েছি। বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক দেশ এবং তার সরকার কৃষির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয় বলে জানান তিনি।

সময় ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে এর স্থপতি হিসেবে উল্লেখ করেন। পর্যটন জেলা কক্সবাজারের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

সাক্ষাত্কালে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন। পরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্র। সাক্ষাত্কালে নেপালের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন সংকটে দেশটিকে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসাসামগ্রীসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশের মোংলা পায়রা বন্দর এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

বাংলাদেশের ইপিজেড, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে তার হূদয় স্পর্শ করেছে বলেও মন্তব্য করেন নেপালের রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের হাড়িভাঙ্গা আম উপহার দেয়ায় বংশীধর মিশ্র তার দেশের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন