দিনে ৪০ হাজার শিশু-কিশোর টিকা পাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ১২-১৭ বছর বয়সীদের নভেল করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় আনছে সরকার। লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের  শতাধিক শিক্ষার্থীর ওপর টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। এদিকে দৈনিক টিকাদান পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করেছে মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিন ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক . সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক গতকাল জানান, স্কুল-কলেজে পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে ১২-১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এবার ব্যাপক পরিসরে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে মাউশি।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রতিদিন ১২-১৭ বছর বয়সী ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে। কার্যক্রম শুরু হতে পারে ৩০ অক্টোবর থেকে। ঢাকা মহানগরীর স্কুল কলেজ মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৭৮৩টি। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা লাখ ১৫ হাজার। আমরা এদের প্রথম ধাপে টিকার আওতায় আনব। টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার জন্য এতে ২০০টি বুথ থাকবে।

গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করার পর তারা যেন সুরক্ষা অ্যাপসে নিবন্ধন করতে পারে, সে বিষয়ে মাউশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এরপর আমরা স্কুল অনুযায়ী তারিখ নির্ধারণ করে দেব যেন সুশৃঙ্খলভাবে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।

তিনি বলেন, সব শিক্ষার্থীকে সমান গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আশা করছি টিকার প্রাপ্যতা নিয়ে সংকট হবে না। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এলেই জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান মাউশি মহাপরিচালক।

সারা দেশে ২১টি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরিকল্পনা গত সপ্তাহে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রাজধানীতে টিকাদান কার্যক্রম শেষ হলে পরে দেশের অন্যান্য কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে চারটি সরকারি বিদ্যালয়ের ১২০ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষামূলক ফাইজার বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হয়। মানিকগঞ্জের সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ৫০ জন, সরকারি এস কে বালিকা বিদ্যালয়ের ৫০ জন, গড়পাড়া জাহিদ মালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ জন আটিগ্রাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফাইজারের টিকা দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে সারা দেশে ৩০ লাখ শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়া হবে। তবে দেশে এক কোটির বেশি শিশুকে করোনার টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

উল্লেখ, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি গণপরিসরে টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। প্রথমে ৪৫ বছর বয়সীদের টিকা দেয়া হলেও কয়েক দফায় বয়সসীমা কমানো হয়। পরে সর্বশেষ ২৫ বছরে আনা হয় টিকা দেয়ার বয়সসীমা। তবে ১২-১৭ বছর বয়সীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে কয়েক মাস ধরে আলোচনা করে আসছিল সরকার। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মতি পাওয়ায় শিশু কিশোরদের টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করল সরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন