আফগানিস্তানে শতকোটি ইউরো মানবিক সহায়তা দেবে ইইউ

বণিক বার্তা ডেস্ক

আফগান জনগণকে সাহায্য করার জন্য ১০০ কোটি ইউরো (১১৫ কোটি ডলার) প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একই সঙ্গে শিল্পোন্নত জি২০ভুক্ত দেশগুলো আফগানিস্তানে তাদের সহায়তা ত্বরান্বিত করার কথা জানিয়েছে। দেশটিতে চলমান অনিশ্চিত মানবিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি  সামনে রেখে সহায়তার কথা জানায় জোট দুটি। আসছে শীতে আফগানিস্তানে পরিস্থিতি বিপর্যয়কর মোড় নিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে ধনী দেশগুলো। খবর এপি।

আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ইতালির আয়োজনে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন জি২০ভুক্ত দেশগুলোর নেতারা। তালেবান সরকার সব অঞ্চলে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি দলের প্রবেশের অনুমতি আদায় করতে বৈঠকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সহায়তা পৌঁছানোর জন্য জি২০ভুক্ত দেশগুলো কাবুল বিমানবন্দর দেশটির সীমান্ত উন্মুক্ত দেখতে চায় বলে জানায়। একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘ, মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংগঠন সংস্থার সদস্য কূটনীতিবিদদের নিরাপত্তার দাবিও তোলে তালেবানের কাছে। সময় আফগানিস্তানে নারী অধিকার রক্ষা-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক দাবির পুনরাবৃত্তি করা হয়।

আগস্টে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার-পরবর্তী সময়ে কাবুলের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। গোষ্ঠীটির ক্ষমতা গ্রহণ-পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এটি প্রথম কোনো বহুপক্ষীয় বৈঠক।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি জানান, মানবিক সহায়তা বিতরণ নিয়ে তালেবানের সঙ্গে একটি আলোচনায় আসা প্রয়োজন। তবে আলোচনার মাধ্যমে এটি কখনই  বোঝায় না যে, আন্তর্জাতিক মহল তালেবান সরকারকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন দিচ্ছে। বরং তালেবানকে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিচার করা হবে, শুধু  তাদের মুখের কথায় নয়।

দ্রাঘি বলেন, বর্তমান আফগান সরকার বলে যাদের আমরা চিনি, তারা মোটেই অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়, এটা কোনো প্রতিনিধিত্বকারী সরকার নয়। এখানে নারী অধিকার অনেক দূরে অবস্থান করছেযতদূর আমাদের চোখ যায়। এমনটা মনে হচ্ছে যে তারা ২০ বছর  পেছনে ফিরে যাচ্ছে।

জি২০ভুক্ত দেশগুলোর সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পরিবর্তে মন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে বক্তব্য রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সময় তিনি জাতিসংঘকে মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সমন্বয়ের অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সচল কার্যকর রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

এর আগে জাতিসংঘ সতর্ক করে জানায় যে, আফগানিস্তানের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পূর্বে আফগানিস্তানের মোট বাজেটের ৭৫ শতাংশ ছিল বিভিন্ন বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটির বিপুল সম্পদ যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ  জব্দ করার ফলে দেশটিতে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে  বিতরণকৃত সহায়তাও স্থগিত করা হয়েছে।

ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, তালেবানের কৃতকর্মের জন্য আফগান জনগণের ভোগান্তি পোহানো উচিত নয়। তবে সহায়তা প্রদানের পূর্বে এটি নিশ্চিত করতে চাই যে, তারা কোনোভাবেই অন্তর্বর্তীকালীন তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করছে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন