জয়ার শাড়ি নকল করে ডলারে বিক্রি হয়

ফিচার প্রতিবেদক

ঢাকা কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান আফসোস করে বলেছেন, তিনি যে শাড়ি পরেন সেগুলোর ডিজাইন নকল করে ডলারে বিক্রি হয়। সম্প্রতি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি কথা বলেন। গেরিলা সিনেমার অভিনেত্রী বলেন, আমি যে শাড়িগুলো পরি, কয়েক দিনের মধ্যেই সেগুলো নকল করে আরো অনেক শাড়ি বাজারে চলে আসে। তারপর সেই শাড়িগুলোই আবার কম দামে বিক্রি হয়। এতে শিল্পের ক্ষতি হয়। লোকসান হয় তাঁতি ভাইদের। আমার পরা শাড়ির ডিজাইনের শাড়ি আমার কাজিনরা বিদেশ থেকে ডলার দিয়ে কেনে। তবে শাড়ি নিয়ে বাছবিচার করেন না জয়া। ভালোবাসেন সবকিছুই। কিন্তু বাংলাদেশের জামদানি ছাড়াও মসলিন, চিরকালীন তাঁত রয়েছে তার পছন্দের তালিকায়। পোশাকশিল্পীর ভাবনায় তৈরি হয় তন্তুজ শাড়ি। তাঁতিরা দীর্ঘ সময় ধরে শাড়ি বোনেন জয়ার জন্যই। সেসব শাড়ি ঘিরেই তার যত আবেগ আর অফুরান ভালোবাসা।

বছর পূজার পোশাক নিয়ে অভিনেত্রী বললেন, পূজায় আমি শাড়ি পরতেই বেশি পছন্দ করি। কিন্তু কাজকর্মের সুবিধার্থে অনেক সময় কুর্তিও পরি। এবার নীল রঙের ওপর জারদৌসি কাজ করা কুর্তা পরব। সঙ্গে শারারা ধাঁচের প্যান্ট।

জয়া আহসান ঋত্বিক চক্রবর্তী অভিনীত বিনিসুতো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে গত আগস্টে। উপলক্ষে কলকাতায় আছেন জয়া। এছাড়া প্রায় প্রতি বছর পূজার মৌসুমে কলকাতা যান তিনি। গত বছর এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, কলকাতা ছাড়া পূজা ভাবতেই পারি না। বছরও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। শিউলির গন্ধ মেখে আপাতত চারটা দিন কীভাবে কাটাবেন সেই পরিকল্পনায় ব্যস্ত তিনি। পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, কলকাতা আমার প্রাণের শহর। ভালোবাসার শহর। পূজায় সেই চেনা শহর যেন একটু অচেনা হয়ে যায়। কোনো প্রিয় মানুষ আচমকা সেজে উঠলে যেমন অবাক লাগে, শারদ-কলকাতাও যেন তাই। চারদিকে কত আলো, মাইকে অনবরত গান, পথঘাট ছেয়ে থাকা ছাতিমের মিষ্টি গন্ধ। রাতারাতি আরো সুন্দরী কলকাতা। অনেকগুলো পূজাই এখানে কাটিয়েছি। এবারো আমি কলকাতায়। পূজার চারটা দিন নিজের মতো করে কাটাব।

জয়া যোগ করেন, আমার পূজা মানেই আড্ডারূপেণ সংস্থিতা! বন্ধুদের বাড়ি যাওয়া, মন খুলে কথা, হাসাহাসি। পূজায় বেশকিছু বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার নিমন্ত্রণ পেয়েছি। তাই কোথায় আড্ডা দেব, তা নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করতে হচ্ছে না। কিন্তু পেটপূজা ছাড়া আবার আড্ডা হয় নাকি। আমি খুবই ভোজনরসিক। অভিনয় করলেও খাওয়াদাওয়ায় কোনো রকম বিধিনিষেধ মানি না। যখন যা ইচ্ছা তাই খেয়ে নিই। পূজায়ও ভালোমন্দ খাবার চাই- চাই। যেদিন যে বন্ধুর বাড়িতে ভালোমন্দ রান্নাবান্না হবে, সেদিন সেখানেই গিয়ে হাজির হব। তবে দিনভর যা- খাই, যতই খাই, শেষ প্লেটে মিষ্টি লাগবেই আমার।

ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী নির্মাতা অতনু ঘোষ পরিচালিত বিনিসুতোয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে কলকাতায় বেশ প্রশংসা পেয়েছেন জয়া। সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। 

অভিনয়ের পাশাপাশি জয়া এবার কলকাতার দর্শককে মুগ্ধ করেছেন গায়িকা হিসেবেও। ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি একটি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। গানের শিরোনাম সুখের মাঝে তোমায় দেখেছি গান নিয়ে বেশ আলোচনা চলেছে দেশটির গণমাধ্যমে। জয়ার গানের প্রশংসা করেছেন পরিচালক অতনুও। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জয়ার অভিনয়ের সঙ্গে দর্শকের জন্য বাড়তি পাওয়া হিসেবে এসেছে তার কণ্ঠের গান। গানটির কথা আলাদা করে বলছেন দর্শক। গণমাধ্যমেও লেখালেখি হচ্ছে।

বিনিসুতোয় ছবিতে কাজল শ্রাবণীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ঋত্বিক জয়া। মধ্য তিরিশের দুই মানুষের একে অন্যের সঙ্গে পরিচয় হয় একটি রিয়েলিটি শোর অডিশনে। দুজনের জীবনের গল্পে বেশকিছুটা মিল থাকায় খুব তাড়াতাড়িই পরস্পরের সঙ্গে মিশে যান তারা। কিন্তু এরই মাঝে এক দুর্ঘটনায় আহত হন শ্রাবণী। দ্রুত তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান কাজল। যাওয়ার পথে তারা একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করেন জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতের গল্প। নিয়েই বিনিসুতোয় জয়া-ঋত্বিক ছাড়াও ছবিতে অভিনয় করেছেন চান্দ্রেয়ী ঘোষ, কৌশিক সেন, রেশমি সেন, খেয়া চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন