নারীদের ইন্টারনেট প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ায় গত এক দশকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর লোকসান হয়েছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। সরকারগুলো যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে আরো ৫০ হাজার কোটি ডলার লোকসান গুনতে হবে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
ডিজিটাল অর্থনীতিতে নারীরা অবদান রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারত, মিসর ও নাইজেরিয়ার মতো ৩২টি দেশের সরকার ১২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার জিডিপি হারিয়েছে।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল অর্থনীতিতে নারী ও পুরুষের সম-উপস্থিতি নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০২০ সালে কর রাজস্ব হারিয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এ আয় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আবাসনের মতো খাতে বিনিয়োগ করা যেত।
জাতিসংঘ নারী-সংক্রান্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং আমলাম্বো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ফুমজাইল এমলাম্বো-এনজুকা বলেন, আমরা ডিজিটাল মাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে এবং ইন্টারনেটের সুবিধা তাদের হাতে তুলে দিতে না পারলে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত হবে না।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশন ও অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট (এ৪এ১) কর্তৃক পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের ৩২টি দেশে লিঙ্গ বৈষম্য সর্বোচ্চ। দেশগুলোতে যেখানে প্রায় অর্ধেক পুরুষের ইন্টারনেট অ্যাকসেস রয়েছে, সেখানে প্রতি তিনজনে এক নারী এ সুবিধা পাচ্ছেন। ২০১১ সালের পর থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্য পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়েছে খুবই সামান্য। এক দশকের ব্যবধানে ডিজিটাল প্লাটফর্মে লিঙ্গ বৈষম্য ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে ৩০ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১০ বছরে তা কমেছে ১ শতাংশীয় পয়েন্টের অর্ধেক। এক দশক আগে ইন্টারনেটে পুরুষের অ্যাকসেস ছিল যেখানে ২১ শতাংশ সেখানে বর্তমানে নিম্ন আয়ের দেশেও ৫২ শতাংশ পুরুষ সুযোগ নিচ্ছে।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে নারী ও কিশোরীদের পক্ষে অনলাইনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ব্যয়বহুল হ্যান্ডসেট, ডাটা ট্যারিফ, সামাজিক রীতিনীতির কারণে অনলাইনে যেতে ভয় পান নারী ও মেয়েরা। তারা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে ভয় পাচ্ছেন নারীরা। বিশ্বে পুরুষদের ১ ডলার আয়ের বিপরীতে ৭৭ সেন্ট আয় করছে নারীরা।
এ৪এ১-এর ২০২০ অ্যাফোর্ডেবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়, নারীদের ইন্টারনেট অ্যাকসেস নিশ্চিতে অল্প কয়েকটি সরকার কিছু সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে ৪০ শতাংশেরও বেশি দেশের এ নিয়ে অর্থবহ পলিসি বা কর্মসূচি নেই।