ডিজিটাল মুদ্রা নীতিমালায় স্বচ্ছতা আনতে চায় জি৭

বণিক বার্তা ডেস্ক

ডিজিটার মুদ্রার স্বচ্ছতা এবং গোপনীয় সুরক্ষা নীতিমালা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭-এর নেতারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ডিজিটাল মুদ্রা বিষয়ে একটি সাধারণ নির্দেশিকা নীতিমালার আওতায় এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছার আহ্বান জানাবেন জি৭ভুক্ত যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক খসড়া নীতিমালায় এমনটা দেখা যায়। খবর কিয়োদো নিউজ।

১৩টি পয়েন্টযুক্ত নীতিমালা আজ ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি৭ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রধানদের এক সম্মেলনে অনুমোদন হওয়ার আশা রয়েছে। এমন সময় জি৭ জোট নীতিমালার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছে যখন চীন এরই মধ্যে সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সির (সিবিডিসি) ব্যাপারে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নিজেকে এগিয়ে রাখছে। দেশটির অর্থনীতি জনগণের ওপর আরো শক্তিশালী নজরদারির লক্ষ্যে ডিজিটাল মুদ্রার উন্নয়নে আগ্রহ বাড়াচ্ছে চীনা প্রশাসন।

ধরনের মুদ্রা ইস্যুকরণ একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম বিষয়। তবে জি৭ভুক্ত দেশগুলোর নেতাদের সিবিডিসি নিয়ে নীতিমালার বিষয়ে আহ্বানবিষয়ক তথ্যে বলা হয়েছে, একটি সাধারণ মূলনীতি স্থাপন সিবিডিসিবিষয়ক মানের মৌলিক গুরুত্ব অনুধাবন যেমন- স্বচ্ছতা, আইনের ধারা এবং সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আহ্বান জানানো হবে। এসব মূলনীতি সিবিডিসি সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে জি৭ভুক্ত অঞ্চল তার বাহিরে নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে। তবে জি৭ভুক্ত কোনো দেশই এখন পর্যন্ত নিজেদের দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।

অন্যদিকে বিশ্বের অন্য যেকোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনীতির তুলনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়ে রয়েছে চীন। লক্ষ্যে গৃহীত পাইলট প্রোগ্রামের আওতায় ডিজিটাল ইউয়ান উন্নয়নের ব্যাপারটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।

খসড়া তথ্যের আলোকে দেখা যায়, জি৭ভুক্ত দেশগুলো ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধির বিষয়টিকে স্বীকৃতি প্রদান করবে। কভিড-১৯ মহামারীকালীন প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে, যা লোকজনের মধ্যে স্পর্শবিহীন লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

যেকোনো সিবিডিসির জন্য অপরিহার্য ব্যাপার উল্লেখ করে খসড়া তথ্যে বলা হয়েছে, ধরনের মুদ্রার জন্য একটি উপযুক্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং নতুন পেমেন্ট ব্যবস্থার জন্য তদারকি কাঠামো থাকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে গোপনীয় ব্যাপার সংরক্ষণের কঠোর মান, ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষার দায়িত্ব এসব তথ্য কীভাবে সুরক্ষিত রাখা হবে এবং ব্যবহার করা হবে সে ব্যাপারে স্বচ্ছতা প্রয়োজন।

খসড়ায় বিদেশি নাগরিকদের ব্যবহূত যেকোনো সিবিডিসির ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এর ফলে ইস্যুকৃত দেশ বিদেশি দেশগুলোর মুদ্রার প্রতিস্থাপন এবং আর্থিক সার্বভৌমত্বের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে খসড়ায়।

খসড়ায় বলা হয়, যেখানে এখতিয়াভুক্ত সিবিডিসির বিদেশী দেশগুলোয় প্রবেশের ঘটনা অন্য দেশগুলোয় মুদ্রা প্রতিস্থাপন অন্যান্য মুদ্রার বাড়তি উল্লম্ফনের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে একটি নকশা সুরক্ষাবলয়ের ব্যাপারে যৌথ উদ্যোগ ধরণের নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস করতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক উন্নয়নমূলক সহযোগিতা হিসেবে সিবিডিসির ব্যবহার করা হলে তাও স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়।

স্বচ্ছতার ব্যাপারে জোর গুরুত্ব প্রদানের অন্যতম লক্ষ্য হলো, সিবিডিসির মাধ্যমে চীন সরকার বেসরকারি আর্থিক লেনদেনের একটি বিশাল আকারের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এমন আশঙ্কা। ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি জানায়, সিবিডিসি ব্যবস্থা চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে তার ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ বাড়াতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে তা বিদেশে চীনের প্রভাব বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন