উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে?

ডা. মোজাহেরুল হক

বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা পেয়েছি ব্রিটিশ শাসন আমলের ধারাবাহিকতা হিসেবে। এর মাঝে ছোটখাটো পরিবর্তন আমরা এনেছি পাকিস্তান বাংলাদেশ আমলে। কিন্তু পরিবর্তন কখনো প্রয়োজন বা যুগোপযোগী করা বা আধুনিকায়ন বলা যায় না।

আমাদের বর্তমান উপজেলা ব্যবস্থাটি শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আমলে স্বাধীনতার শুরুর লগ্নে ১৯৭২ সালে বলা যায়। তত্কালীন স্বাস্থ্য সচিব টি হোসেন সাহেবই এর মূল উদ্যোক্তা এবং ১৯৭২ সাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথম ডাক্তার নিয়োগসহ অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা হয়। চিকিৎসকসহ সেবাদানকারীদের সেখানে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। প্রথমদিকে ডাক্তাররা গ্রামে যেতে অনীহা প্রকাশ করলেও স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম ব্যাচের ডাক্তারদের উপজেলায় যোগ দেয়ার মাধ্যমেই উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যাত্রা শুরু।

সে সময় এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল। আমাদের তখনকার নদী, খাল-বিলের বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আজকাল কেউ ভাবতেও পারবে না এবং এটির মাধ্যমেই গ্রামের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সূচনা হয়, যা উত্তরোত্তর আরো কাঠামোগত সেবার সুযোগগুলো সৃষ্টি হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনকার মতো উন্নত না থাকায় অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা সেবার চেয়ে জনগণ গ্রাম্য চিকিৎসক বিশেষ করে হোমিওপ্যাথি গ্রামডাক্তার বা হেকিম, বৈদ্যদের চিকিৎসা নিতেন। সে সময়ের মা শিশুমৃত্যু এবং আমাদের জীবত্কাল দেখলেই বোঝা যাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কী বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে স্বাস্থ্যসেবা, জীবনমান বাংলাদেশের মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধিতে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় উপজেলা স্বাস্থব্যবস্থা চিকিৎসা সেবার মান জনগণের সন্তুষ্টি অনুযায়ী কতটা হয়েছে সেটি দেখা দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো নেয়া দরকার।

করোনাকালে আমরা লক্ষ করেছি উপজেলা স্বাস্থব্যবস্থা শক্তিশালী, সঠিক কার্যকর থাকলে আমরা অনেক মৃত্যু ঠেকাতে পারতাম, জনগণের ভোগান্তিও কম হতো। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে ধাপগুলো আছে তা হলো কেন্দ্রীয় বা রাজধানীকেন্দ্রিক যেখানে সব বিশেষায়িত হাসপাতাল বেশিসংখ্যক মেডিকেল কলেজ অবস্থিত। এরপর বিভাগীয় জেলা শহরগুলোতে আছে, জেলা হাসপাতাল উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। পরবর্তী ধাপে ইউনিয়ন হেলথ সেন্টার, ইউনিয়ন হেলথ সাব-সেন্টার কমিউনিটি ক্লিনিক।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, উপজেলা থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সক্ষমতা, ব্যবস্থাপনা সেবা নিয়ে জনগণের ক্ষোভ অসন্তুষ্টি আছে। নানা অভিযোগের মধ্যে আছে ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপস্থিতি প্রাপ্যতা। তাদের সেবা কার্যক্রম। এছাড়া তাদের আচরণ ব্যবহার নিয়েও জনগণের আছে বেশ অসন্তুষ্টি।

যেকোনো প্রতিষ্ঠান সেবামূলক হোক বা অন্য ধরনের, প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন। প্রতি উপজেলায় একটি স্বাস্থ্য কমিটি আছে যার প্রধান সেখানকার জাতীয় পরিষদ সদস্য। তাদের দায়িত্ব উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন করা জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। ব্যাপারে উদ্যোগী হয়ে উচ্চতর কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা আনয়ন করা। স্বাস্থ্য কমিটি নিয়মিত এর ব্যবস্থাপনার ওপর একটি রিপোর্টও তৈরি করবে, যেখানে জনগণেরও বক্তব্য থাকবে, বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের।

সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত কমিটির রিপোর্টগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি উপজেলায় প্রয়োজনীয় কাঠামোগত উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় উপকরণ, ওষুধ অন্যান্য সরঞ্জাম যথাসময়ে জোগান দেয়া নিশ্চিত করা। রোগীদের অসন্তুষ্টির কারণগুলো চিহ্নিত করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া।

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। যেমন ধরুন করোনার কোনো চিকিৎসা নেই, একে প্রতিরোধ করতে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি টিকা নিচ্ছি।

ধরুন করোনা রোগ থেকে বেঁচে থাকতে আমাদের যেমন কোনো খরচ নেই, তেমনি কিন্তু যাদের করোনা হয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে, তাদের চিকিৎসা ব্যয় ভোগান্তি, পরিবারের ভোগান্তি সীমাহীন আমরা দেখেছি। দেরিতে চিকিৎসা নেয়ার কারণে ভোগান্তি ছাড়াও অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন, আমরা বাঁচাতে পারিনি।

আমরা যদি উপজেলা হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখতে পারতাম আর করোনা দ্রুত শনাক্ত করে রোগীকে আলাদা রেখে তাকে দ্রুত চিকিৎসার আওতায় আনতে পারতাম, তাহলে অনেক মৃত্যু ঠেকাতে পারতাম।

এছাড়া সময়মতো প্রয়োজনীয় অক্সিজেন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারলেও অনেক জীবন বাঁচানো যেত। এরপর যদি জেলা হাসপাতালগুলোর কথা বলি, সেখানেও নানা সীমাবদ্ধতা দেখেছি আমরা। প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটর সেবার অভাবে অনেকের মৃত্যু ঘটেছে।

ধরনের নানা অনুযোগ, অভিযোগ ব্যর্থতা আমাদের আছে। তাই আমাদের চিন্তা করতে হবে কীভাবে চিকিৎসা সেবার মান সেবাপ্রাপ্তি বাড়ানো যায়। প্রথমেই ভাবি গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যারা দেশের ৬৫ শতাংশ জনগণ এবং উপজেলা হাসপাতালে তারা প্রথম সেবা নিতে আসেন।

আমাদের মুহূর্তে জরুরি ভিত্তিতে ভাবতে হবে: . আমরা একটি শক্তিশালী উপজেলাকেন্দ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি কিনা? যাতে গ্রামের জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়। . উপজেলা থেকে জেলা হাসপাতাল বিশেষায়িত হাসপাতাল পর্যন্ত কার্যকর রেফারেল পদ্ধতি চালু করতে পারি কিনা?

দুটি কাজকে সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিতে পারে। তাতে জনগণ সহজেই সাধারণ চিকিৎসা প্রয়োজনীয় বিশেষ চিকিৎসার সুযোগ পাবে। একটি কার্যকর রেফারেল পদ্ধতি শক্তিশালী কার্যকর সক্ষম উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। আগামীতে রাজধানী ঢাকা বা জেলা শহরভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে রেফারেন্স হাসপাতাল হিসেবে বিশেষায়িত চিকিৎসার সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উপজেলা হাসপাতালগুলোকে শক্তিশালী কার্যকর সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সেবা গণমুখী করতে হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে যতখানি সম্ভব স্ব-শাসিত (Autonomous) করতে হবে, যাতে সেগুলো প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারে। পাশাপাশি তাদের দায়িত্বগুলো চিহ্নিত করে জেলা সিভিল সার্জনের কাছে দায়বদ্ধ করা উচিত।

আমাদের চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থা। ১৯৭১ সালে যেখানে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ছিল আটটি, এখন সেখানে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১২। এর মধ্যে ৩৭টি সরকারি, বাকি ৭৫টি বেসরকারি। লক্ষ করলে দেখা যাবে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যেমন বেড়েছে ঠিক তার কয়েক গুণ ত্বরিত গতিতে সংখ্যায় বেড়েছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চিকিৎসা সেবা চিকিৎসা শিক্ষার ব্যাপারে জনগণের যথেষ্ট অভিযোগ, অনুযোগ অসন্তুষ্টি আছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য জনশক্তি যেমন, বিশেষ করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, ডাক্তার, নার্স বিশেষায়িত নার্স প্যারামেডিকসের কী সংখ্যায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রয়োজন হবে তেমন কোনো সঠিক পরিকল্পনা আছে বলে প্রতিভাত হয় না।

শহরাঞ্চল বা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি বেসরকারি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যত্রতত্র গড়ে ওঠে, সেগুলো থেকে জনগণের প্রকৃত মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পাওয়াও প্রশ্নবিদ্ধ।

মেডিকেল, নার্সিং প্যারামেডিকসে একটি প্রজেকশন থাকা দরকার যে ২০৩০ সালে আমাদের কী ধরনের কতজন চিকিৎসা পেশাজীবী দরকার। ২০৩০ সালটা আমি উল্লেখ করছি এজন্য যে, এসডিজি অর্জনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০৩০ সালে লক্ষ্য অর্জনে আমরা প্রস্তুত কিনা? যদি প্রস্তুত থাকি তাহলে আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনা কী? আমাদের একটি বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলগত পরিকল্পনা থাকা দরকার এবং জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন তাতে থাকবে। কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরির আগে একটি situation analysis দরকার। বর্তমানে আমাদের কোন পেশায় স্বাস্থ্য জনবল কত আছে। এরপর যেটা করতে হবে তা হলো লক্ষ্য নির্ধারণ করা। ২০২১ সালে কী স্বাস্থ্য জনশক্তি আছে আর ২০৩০ সালে জনসংখ্যা অনুপাতে এবং স্বাস্থ্যসেবার পরিস্থিতি বিবেচনায় কী ধরনের কী সংখ্যায় কত জনবল প্রয়োজন হবে। তার মানে এখন কত জনসংখ্যার জন্য কী ধরনের জনবল আছে আর ২০৩০ সালের জনগোষ্ঠীর জন্য কী পরিমাণ কী ধরনের স্বাস্থ্য জনবলের প্রয়োজন আমাদের দেশের জন্য। একটি উদাহরণ দিইএখন আমাদের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে। ষাটোর্ধ্ব লোকের সংখ্যা এখন ১৫ শতাংশ, আগামীতে এটি বেড়ে ২০ শতাংশ হবে ইনশা আল্লাহ। অথচ Geriatric Medicine বা বয়স্কদের চিকিৎসক সংকট আছে। তাহলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঠিক করতে হবে বিষয়ে চিকিৎসা দেয়ার জন্য কতসংখ্যক Geriatric specialist Geriatric সেবার অন্যান্য জনবল লাগবে। এভাবেই পরিকল্পনা করে এগোতে হবে আমাদের। কৌশলগত পরিকল্পনাটি তৈরি করে আন্তরিকভাবে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এখানে একটি জিনিস মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই অগ্রাধিকার নির্ধারণ জরুরি, যেমন কৌশলগুলোর কোনটি তাড়াতাড়ি অধিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে।

যেমন আমাদের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা গ্রামে যেতে চান না লক্ষণীয়, সরকার কিন্তু তাদের পদায়ন করছে গ্রামে অথচ সেখানে তাদের পাওয়া যায় না। এটি একটি হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের বিষয়। এজন্য ডাক্তাররা দায়ী নন, এজন্য দায়ী ব্যবস্থাপনা, তারা পদায়ন করেছে কিন্তু তাদের সেখানে অবস্থান সেবা পাওয়া নিশ্চিত করতে পারছে না। এখানে দায়িত্ব দায়বদ্ধতার বিষয় আছে।

তাহলে আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে থাকতে হবে আমাদের দেশের ২০৩০ সালের জন্য জনমানুষের জন্য কী কী জনবল কত সংখ্যায় লাগবে। সেই জনবল তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠান যেমন মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, প্যারামেডিক ইনস্টিটিউটগুলো আছে কিনা। এতদিন পর্যন্ত যা হয়েছে তা অবৈজ্ঞানিক। যে পরিমাণ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সে অনুপাতে নার্সিং প্যারামেডিক ইনস্টিটিউট হয়েছে কি? হয়নি, তারা মানে এটি বিজ্ঞানসম্মত নয় বরং পরিকল্পনাবিহীন হয়েছে। আগামীতে এটি বিজ্ঞানভিত্তিক সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে করতে হবে।

পাস করে বেরিয়ে একজন ডাক্তার সেই মেডিকেল কলেজে ইন্টার্নশিপ করেন, তার প্রথম পদায়ন হয় গ্রামে। আমরা প্রশিক্ষণের সময় তাকে গ্রামীণ জনগণ বা গ্রামের পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত করেছি। শিক্ষা কার্যক্রমে যা আছে তাও কি বাস্তবায়ন করেছি? আমার অভিজ্ঞতা বলে না।

এটি একটি বড় সমস্যা। এছাড়া রয়েছে নৈতিকতা বা এথিকস, Behavioral science communication জিনিসগুলো গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেখার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন অথচ তাদের কি বিষয়গুলোতে প্রশিক্ষিত করে গ্রামে পাঠানো হয়? না হলে জরুরি ভিত্তিতে কারিকুলামগুলোতে পরিবর্তন এনে তা আধুনিকায়ন করা জরুরি। ব্যাপারে World Federation for Medical Education (WFME) guideline মেনে চিকিৎসকের কারিকুলাম আধুনিকায়ন করে তার সঠিক বাস্তবায়ন জরুরি, ঠিক একইভাবে নার্সিং প্যারামেডিক কারিকুলামগুলোও আধুনিকায়ন করা জরুরি।

মনে রাখতে হবে প্রকৃত ভালো শিক্ষার পরিবেশ কারিকুলাম বাস্তবায়ন যেমন জরুরি, তেমন প্রকৃত প্রয়োজনীয় ছাত্রসংখ্যা অনুযায়ী ভালো শিক্ষক চিকিৎসা শিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারেন। এতে চিকিৎসা সেবার মান বাড়বে। কারণ ভালো শিক্ষা বা প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষকের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ভালো স্বাস্থ্য জনশক্তির জন্য অপরিহার্য। কারিকুলামের জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় হলো ছাত্রদের একটি নির্দিষ্ট সময় গ্রামে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে হলে প্রয়োজনীয় সঠিক প্রশিক্ষণের জন্য মেডিকেল কাউন্সিলের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষক থাকা প্রতিটি কলেজে নিশ্চিত করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের, এটি তদারকির দায়িত্ব কাউন্সিলগুলোর। তাদের ব্যাপারে সক্রিয় হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে চিকিৎসা সেবা চিকিৎসা শিক্ষা দুটোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জাতির জন্য। শিক্ষা মানসম্মত হলে সেবাও মানসম্মত হবে।

সরকারের করণীয় হবে ব্যাপারে কমিশন গঠন করে করণীয় চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। তাহলেই জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মান প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে।

 

ডা. মোজাহেরুল হক: অধ্যাপক, সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন