ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল মুক্ত রাখতে কোয়াডের অঙ্গীকার

বণিক বার্তা অনলাইন

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে স্বাধীন ও উন্মুক্ত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউজে একটি বৈঠকে মিলিত হন এ চার দেশের সরকার প্রধান। তারা অঞ্চলটিতে চীনের আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এদিকে, বিষয়টিকে ভালোভাবে দেখছে না বেইজিং। তারা চার দেশের সরকার প্রধানের বৈঠকের সমালোচনা করে কোয়াডের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার কথা জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার প্রথমবার স্ব-শরীরে কোয়াডের বৈঠকে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউওশিহিদে সুগা। সেখানে তারা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে স্বাধীন ও উন্মুক্ত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হন।

দুই ঘণ্টার বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে চার নেতা বলেন, আমরা আইনের শাসন, নৌ চলাচলের স্বাধীনতা, বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও রাষ্ট্রীয় সীমানার অখণ্ডতার পক্ষে দাঁড়িয়েছি।

রয়টার্সের খবরে আরো বলা হয়েছে, চীনের ব্যাপারে সরাসরি কোনো কথা বলেননি চার নেতা। যৌথ বিবৃতিতেও তারা বেইজিংয়ের ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত দেননি। তবে, তাদের আলোচনায় ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে স্বাধীন ও উন্মুক্ত রাখার বিষয়টি বারবার উঠে আসে। বেইজিংয়ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। এ ছাড়া অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতি সমর্থন জানান তারা।

নেতারা উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিষয়ে কুটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানান। তবে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পিয়ংইয়ং বিষয়টিতে রাজি নয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কোয়াডের চার নেতা বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সম্প্রসারণের পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ভারত অক্টোবরে টিকা রপ্তানি শুরু করবে। কোয়াড এ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এ ব্যাপারে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার সহযোগী নেতাদের জানিয়েছেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডোজ সরবরাহের জন্য গত মার্চে ভারত যে চুক্তি করেছিল, তার অধীনে অক্টোবরের শেষ নাগাদ ৮ মিলিয়ন ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমতি দেবে।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার অকাস চুক্তি সই হওয়ার পর কোয়াডের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে জাপান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইউওশিহিদে সুগা মনে করেন ‘অকাস’ চুক্তির ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে।

এদিকে, শুক্রবারই এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান। তিনি কোয়াডের সমালোচনা করে বলেন, এটি কোনো সমর্থন পাবে না বরং ব্যর্থ হবে। কোয়াডের কর্মসূচি ‘শীতল যুদ্ধের শুরু’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ ছাড়া অকাস চুক্তি আঞ্চলিকভাবে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও জোরদার করবে বলে তিনি মনে করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন