আইডিআরএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে ডিএসই চেয়ারম্যান

এখন পর্যন্ত ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরে আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বলছি, ইমারজিং টাইগার। সব কথা যথাযথ। তার পরও উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো নির্ণয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এখন পর্যন্ত ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরে আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান।

বৃহস্পতিবার ডিএসইর চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান . এম মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাত্কালে তিনি মন্তব্য করেন।

ডিএসইর প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম সাইফুর রহমান মজুমদার, প্রোডাক্ট অ্যান্ড মার্কেট ডেভেলপমেন্টের প্রধান সৈয়দ আল-আমিন রহমান, পিআর প্রধান মো. শফিকুর রহমান, কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড মনিটরিং বিভাগের প্রধান শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, মার্কেট ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান মিয়া।

বৈঠকে মো. ইউনুসুর রহমান দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আমাদের প্রধান প্রধান উন্নয়ন সূচক হলো শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস, মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন স্যানিটেশন। এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশের পক্ষ থেকে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন। কাজগুলো হয়েছে বর্তমান সরকারের সঠিক নেতৃত্ব সিদ্ধান্তের ফলে। আমাদের সমাজের প্রান্তিক জনগণের কারণেই অর্জনগুলো সম্ভব হয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্যানডেমিক পরিস্থিতির মধ্যেও আমাদের খাদ্য সরবরাহের কোনো ঘাটতি হয়নি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা তিন ধরনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম হচ্ছেন কৃষক, দ্বিতীয়ত দক্ষ শ্রমিক বাহিনী, তৃতীয়ত গার্মেন্টস শ্রমিক। তাহলে বলা যায় যে বিগত দেড় দশকে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আমাদের প্রান্তিক জনগণের কারণেই হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রভাগে রয়েছে সামাজিক খাত। সামাজিক খাতের অনেক সূচকেই আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোকে বিশেষ করে পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। কিছু সূচকে আমরা ভারতকেও অতিক্রম করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজকের আলোচ্য বিষয় অর্থাৎ পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে আমরা ভারত থেকে অনেক বেশি এবং পাকিস্তান থেকেও কিছুটা পেছনে রয়েছি।

বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান . এম মোশাররফ হোসেন বলেন, ডিএসই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলছে। বর্তমানে ডিএসইতে ৫১টি বীমা কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এই তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলো সব ধরনের সুরক্ষা বা সেবামূলক কাজ করে চলেছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ডিএসইর নতুন উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী বাস্তবধর্মী একটি পদক্ষেপ। পদক্ষেপকে আমি স্বাগত জানাই। সম্পূর্ণ নতুন ভিন্ন ধরনের বিষয় হওয়ায় বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ডিএসইর উদ্যোগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা যেমন উপকৃত হবেন এবং পুঁজিবাজারের প্রতি তাদের আস্থা বাড়বে। ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূইয়া বৈঠকের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়কারী তাদের বৈশ্বিক মান নিরূপণকারী প্রতিষ্ঠান আইওএসসিও আগামী -১০ অক্টোবর বিশ্বের সব সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২১ কর্মসূচি ঘোষণা করে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আগামী -১২ অক্টোবর পঞ্চমবারের মতো বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ ২০২১ ঘোষণা করে। বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সপ্তাহব্যাপী পুঁজিবাজারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ টু আইডিয়েট সিকিউরিটিজ ইনভেস্টরস প্রটেকশন ইন্স্যুরেন্স শীর্ষক এক সেমিনার আয়োজন করতে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ নতুন এবং ভিন্ন ধরনের হওয়ায় অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং দেশের পুঁজিবাজারে কীভাবে তা কার্যকর করা যায় তা তুলে ধরেন। তিনি আরো বলেন, সামাজিক উন্নয়নে আমরা এগিয়ে থাকলেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কিছু ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। সবার উদ্ভাবনী চিন্তাধারাকে কাজে লাগিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আগেই আমরা পুঁজিবাজারের স্বার্থে অনেক কিছু করতে চাই।

ডিএসই, সিএসই, সাধারণ বীমা করপোরেশন সিডিবিএলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য মইনুল ইসলাম, সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান এবং ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম সাইফুর রহমান মজুমদার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন