সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক চেয়ারম্যানের ঋণ জালিয়াতি

সাবেক এমডিসহ নয়জনকে তলব করেছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ব্যাংকটির সাবেক এমডিসহ নয় কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে বুধবার একটি নোটিস পাঠিয়েছেন। নোটিসে তাদের আগামী রোববার কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।

যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে তারা হলেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশীদ মোল্লা। ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জিয়াউল লতিফ, ভিপি শাখাপ্রধান এসএম ইকবাল মেহেদী, এফএভিপি অপারেশন ম্যানেজার মোহা. মঞ্জুরুল আলম, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কুমার মণ্ডল ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার তপু কুমার সাহা।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে এরই মধ্যে ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা প্রতিবেদনও সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে খুলনা বিল্ডারস লিমিটেডের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার তথ্য উঠে এসেছে। বাস্তবে নামে কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব বিএফআইইউর তদন্ত টিম সরেজমিন গিয়ে খুঁজে পায়নি। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যাংকঋণ অনুমোদন করে তা আত্মসা করেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

দেশে-বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এসএম আমজাদ হোসেনের বিষয়ে গত আগস্টের মাঝামাঝি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, আমজাদ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন কোম্পানি খুলে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের খুলনা সদর কাটাখালী শাখা ব্যবহার করে আমদানি-রফতানি ঋণের আড়ালে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম, জালিয়াতির মাধ্যমে আমানতকারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। সম্প্রতি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে পর্ষদে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আমজাদ হোসেন।

গত জানুয়ারি ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আমজাদ হোসেনের নামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনে চিঠি দিয়েছিল দুদক। ওই চিঠিতে বলা হয়, আমজাদ হোসেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কর্মাস ব্যাংকের শেয়ারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছেন। এসব অর্থ অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টা করছেন, যা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ।

গত বছরের জানুয়ারিতে এসএম আমজাদ হোসেন তার স্ত্রী সুফিয়া আমজাদ এবং মেয়ে তাজরির বিদেশে যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয় দুদক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন