শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

চামড়া শিল্পের উন্নয়ন খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। গতকাল চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের চতুর্থ সভায় প্রস্তাব করা হয়।

টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সাভারের চামড়া শিল্পনগরী বন্ধের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, রাজউক চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, ট্যানারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী নেতারাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, চামড়া শিল্প খাত একটি বৃহৎ শিল্প। চামড়া রফতানির জন্য বিদেশে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। চামড়া ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য সরকার সব রকম সহযোগিতা করবে। 

সভায় জানানো হয়, ট্যানারি কারখানাগুলো হাজারীবাগ থেকে নির্মাণাধীন অসম্পন্ন চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) এবং অন্যান্য উপাদানের কাজ এখনো শেষ হয়নি। অবস্থায় কয়েকটি ট্যানারির অনুকূলে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও বর্তমানে ছাড়পত্র নবায়নে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। আর পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন প্রাপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় রফতানিকারক হিসেবে এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ইআরসি, আমদানিকারক হিসেবে ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আইআরসি শুল্কমুক্তভাবে পণ্য আমদানির বন্ড সুবিধার ছাড়পত্র পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, আমরা ট্যানারি শিল্পনগরী বন্ধ করার পক্ষে নই। আমাদের কাঁচামাল আছে, জনশক্তি আছে, অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই শিল্পনগরীর চামড়া কারখানাগুলোর সুষ্ঠু উৎপাদন কার্যক্রমের স্বার্থে পরিবেশগত ছাড়পত্রের নবায়ন ত্বরান্বিতকরণ, সিইটিপি কার্যকর করা, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সাভারে ২৫ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য শোধনের ক্ষমতা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে ৩৫-৪০ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে। আমাদের যৌথভাবে সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোরবানির ঈদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা কেন পাননি বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খোঁজ নেয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, চামড়ার মূল্য এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাজার ধরার জন্য দুই মন্ত্রণালয়ের টানাটানি না করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্ত থাকা প্রয়োজন।

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা কেন্দ্রীয়ভাবে চামড়া মজুদ সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বারোপ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন