ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় আবারো বাড়ল দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক দাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

টানা তৃতীয় নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক বেড়েছে। মূলত নিউজিল্যান্ডের প্রধান রফতানি পণ্যটির চাহিদায় ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত থাকায় দুগ্ধপণ্যের দাম বাড়ছে। গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের সর্বশেষ নিলামে পণ্যটির মূল্যসূচক শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এর আগের নিলামে দাম বেড়েছিল শতাংশ। এটি ছিল মার্চের প্রথম নিলামের পর সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা।

নিউজিল্যান্ডে প্রতি মাসে দুবার গ্লোবাল ডেইরি ট্রেডের (জিডিটি) সবচেয়ে বড় নিলাম বসে। ফন্টেরা কো-অপারেটিভ গ্রুপ নিলামের আয়োজন করে। বিশ্বের বড় বড় দুগ্ধপণ্য প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নেয়। গত মঙ্গলবার সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বোচ্চ ২৭ হাজার ৪৯৫ টন দুগ্ধ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে ২৪ হাজার ৪৭৬ টন। নিলামে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম উঠেছে টনপ্রতি হাজার ১১ ডলার। এবারের নিলামে ১৭৫ জন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অংশ নেন। এর মধ্যে ১১২ জন সর্বোচ্চ দামে দুগ্ধপণ্য কিনতে সক্ষম হন।

চলতি বছরের মার্চের প্রথম নিলামে বড় পরিসরে দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচক বৃদ্ধি পায়। এক বছরের ব্যবধানে মূল্যসূচক বাড়ে ১৫ শতাংশ। কিন্তু এর পর থেকেই ধারাবাহিক দরপতন দেখা দেয়। আগস্টের দ্বিতীয় নিলাম থেকে দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসে। এর পর থেকেই দুগ্ধপণ্যের দামে ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত আছে।

এনজেডএক্সের দুগ্ধপণ্যের বাজার বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট ডেভিসন বলেন, চলতি মাসের প্রথম নিলামে দুগ্ধপণ্যের দাম বড় পরিসরে বৃদ্ধি পায়। ওই নিলামে প্রায় সব পণ্যই প্রস্তাব করা হয়। এটি চলমান বাজার পরিস্থিতিকে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ নিলামেও দাম বেড়েছে। বিশ্ববাজারে দুগ্ধপণ্যের চাহিদা ক্রমে বৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে এটি।

জিডিটি নিলামে সবচেয়ে প্রভাবশালী পণ্য ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধ (ডব্লিউএমপি) পণ্যটি থেকে সরসরি লাভবান হন খামারিরা। জিডিটি প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, সর্বশেষ নিলামে ডব্লিউএমপির দাম দশমিক শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টন ডব্লিউএমপির গড় দাম উঠেছে হাজার ৭৭৭ ডলার পর্যন্ত। পণ্যটির গড় দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

ফন্টেরা কো-অপারেটিভ গ্রুপ নিলাম কেন্দ্রে ডব্লিউএমপির স্বাভাবিক সরবরাহ মাত্রা কমিয়ে আনছে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, চলতি মৌসুমে অত্যন্ত জোরালো চাহিদা এবং তরল দুধের সরবরাহ বাড়ার প্রত্যাশা উৎপাদন বৃদ্ধির সক্ষমতা সীমিত করতে পারে। কারণেই ডব্লিউএমপির সরবরাহ নিয়ন্ত্রিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফন্টেরা।

ডেভিসন জানান, স্বাভাবিকভাবে উত্তর এশিয়ার ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি ডব্লিউএমপি ক্রয় করে থাকেন। তবে সর্বশেষ নিলামে ডব্লিউএমপি ক্রয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ক্রেতারা এগিয়ে ছিলেন।

অর্থনীতিবিদ নেট কেইল বলেন, দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। কিন্তু ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা অস্ট্রেলিয়ার মতো শীর্ষ উৎপাদনশীল অঞ্চলগুলোতে এখনো দুগ্ধপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিকের তুলনায় কম। তবে নিউজিল্যান্ডে দুগ্ধপণ্য উৎপাদন সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

জিডিটির ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের (এসএমপি) দাম দশমিক শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের গড় দাম উঠেছে সর্বোচ্চ হাজার ৩০২ ডলার পর্যন্ত। ল্যাকটোজের দাম দশমিক শতাংশ বেড়ে টনপ্রতি হাজার ১৮৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন