বছরে সাড়ে ১৮ শতাংশ হারে বাড়ছে দেশের ওষুধের বাজার। খাতসংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি ওষুধ বিক্রি হয়েছে। ওষুধের এ বাজারের ৭১ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে ১০ কোম্পানি। আর যে ওষুধের ওপর ভর করে বাজার বড় হচ্ছে তার সর্বাগ্রে রয়েছে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস বা অ্যাসিডিটির ওষুধ। সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধের তালিকায় এর পরেই আছে অ্যান্টিবায়োটিক।
মোট বিক্রীত ওষুধের ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ অ্যাসিডিটির। অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে এ হার ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। অ্যাসিডিটি, অ্যান্টিবায়োটিকের পরই দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ডায়াবেটিসের ওষুধ। ইনজেকশনের আকারে ব্যবহূত এ ওষুধের হিস্যা মোট বাজারের ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের মোট বিক্রীত ওষুধের প্রায় ২৫ শতাংশই দখল করে আছে অ্যাসিডিটি, অ্যান্টিবায়োটিক ও ডায়াবেটিস।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ফাস্টফুড ও ভেজাল খাবার মানুষের মধ্যে অ্যাসিডিটি সমস্যা বাড়াচ্ছে। অ্যাসিডিটির ওষুধ বিক্রিও তাই সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধটি কিনতে পারাও এর বিক্রি বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ। এদিকে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে ব্যবহূত হওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি বাড়ার কারণ মূলত ক্রেতার অসচেতনতা। আর এক্ষেত্রে বিক্রেতাদেরও রয়েছে অতিমুনাফার প্রবণতা।
দেশে ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির ওষুধ বিক্রি ও ধরন নিয়ে জরিপ চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে ওষুধের বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকায়। বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
ওষুধের প্রকারভেদ বা থেরাপিউটিক ক্লাস বিবেচনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে অ্যাসিডিটির ওষুধের বিক্রি ছিল ৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। দেশের বাজারে এটাই সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধ। গত বছর ওষুধটির বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ শ্রেণীর ওষুধ সবচেয়ে বেশি বিক্রি করেছে হেলথকেয়ার। সারজেল নামে এ ধরনের ওষুধ বিক্রি করছে হেলথকেয়ার। ম্যাক্সপ্রো নামে বিক্রি করছে রেনাটা। এ শ্রেণীর ওষুধ বিক্রয়ে হেলথকেয়ারের পরেই আছে রেনাটা, ইনসেপ্টা, স্কয়ার ও রেডিয়েন্ট। এ কোম্পানিগুলো অ্যাসিডিটির ওষুধ বিক্রি করছে ম্যাক্সপ্রো, প্যানটনিক্স, সেকলো ও এক্সিয়াম নামে।
গত বছর দ্বিতীয় সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধ ছিল সেফালসফোরিন্স অ্যান্ড কম্বিনেশন, যা অ্যান্টিবায়োটিক। এ শ্রেণীর ১ হাজার ৮৪১ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি হয় গত বছর। ওষুধটির বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির শীর্ষ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। সেফ-থ্রি ব্র্যান্ড নামে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করছে কোম্পানিটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু অ্যাসিডিটি বা অ্যান্টিবায়োটিকই নয়, সব ধরনের ওষুধ অপ্রয়োজনীয়ভাবে সেবন বেশি হচ্ছে। বিক্রির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ না থাকা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তদারকির দুর্বলতার সুযোগে ওষুধের এমন প্রয়োগ বাড়ছে। রোগ প্রতিরোধ বা চিকিৎসার চেয়ে ওষুধের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে মানুষের। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যেমন কমে যাচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নানা রোগের ঝুঁকিও। অ্যান্টিবায়োটিকের এমন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও।
বাংলাদেশে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ওষুধের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষার হার আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে এ শিক্ষার দূরত্ব রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসকের কাছে যায় না। তারা সহজেই ওষুধের দোকানে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা বলে এবং ওষুধ নিয়ে আসে। এক্ষেত্রে তাদের অসচেতনতার পাশাপাশি বিক্রেতাদের অসাধু মনোভাব দায়ী।
ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ক্যান্সার থেকে শুরু করে চর্মরোগ—সব ধরনের রোগেই ওষুধের অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ লক্ষণীয়। ফার্মেসিগুলোতে ফার্মাসিস্ট থাকার কথা, কিন্তু তা নেই। অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় মূলত সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ওষুধ বিক্রিতে বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে দ্রুত আরোগ্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে মানুষ সহজেই অ্যান্টিবায়োটিকের শরণাপন্ন হচ্ছে। কোনো বাধা ছাড়া তা কিনতেও পারছে তারা। এতে তাত্ক্ষণিক ফলাফল পেলেও দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় পড়তে হয়। ওষুধের এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বন্ধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের বাজারে তৃতীয় সর্বোচ্চ বিক্রীত ওষুধ থেরাপিউটিক ক্লাস হিউম্যান ইনসুলিন। ডায়াবেটিকের ওষুধ হিসেবে পরিচিত এ শ্রেণীর ওষুধ গত বছর বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩ কোটি টাকার। ওষুধটির বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এ ওষুধ বিক্রির শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম নভো নরডিস্ক ও ইনসেপ্টা।
হিউম্যান ইনসুলিনের পরেই গত বছর সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধ থেরাপিউটিক ক্লাস ক্যালসিয়াম। হাড় ও অস্থিসন্ধির চিকিৎসায় ব্যবহার হয় এ শ্রেণীর ওষুধ। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ ওষুধের বিক্রি ছিল ১ হাজার ২ কোটি টাকার। বিক্রির এ পরিমাণ ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। গত বছর এ ওষুধ বিক্রয়কারী শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠান হলো স্কয়ার, রেডিয়েন্ট ও এসকায়েফ।
২০২০-২১ অর্থবছরে পঞ্চম সর্বোচ্চ বিক্রীত ওষুধ ছিল অ্যান্টিএপিলেপটিকস। স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগের এ ওষুধ বিক্রি হয়েছে ৯৬০ কোটি টাকার। বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।
শীর্ষ ১০ থেরাপিউটিক ক্লাসের মধ্যে ষষ্ঠ থেকে দশম অবস্থানে ছিল নন-নারকোটিক অ্যানালেসিকস, অ্যান্টিরিউমেটিক নন-স্টেরয়েড, ডিপিপি-আইবি ইনহিবিটর-ডায়াবস, অ্যানজায়োটেন-অ্যানট্যাগ ও অ্যান্টিলিউক অ্যান্টি-অ্যাজমাটিকস। গত বছর এ ওষুধগুলোর বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৮, ২৫ দশমিক ৩১, ১৫ দশমিক ৫৭, ২৫ দশমিক ৩৯ ও ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
আইকিউভিআইএর তথ্যমতে, বাংলাদেশের ওষুধের বাজারের ৭০ দশমিক ৬৯ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে স্কয়ার, ইনসেপ্টা, বেক্সিমকো, হেলথকেয়ার, রেনাটা, অপসোনিন, এসকায়েফ, অ্যারিস্টোফার্মা, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল ও একমি। এর বাইরে শীর্ষ বিশে থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল, রেডিয়েন্ট, জেনারেল, ইউনাইমড অ্যান্ড ইউনিহেলথ, পপুলার, নভো নরডিস্ক, সানোফি বাংলাদেশ, ইবনে সিনা, বিকন ও নোভারটিস।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, শুরু থেকেই স্কয়ার পণ্যের গুণগত মান ও গ্রাহকের আস্থার প্রতি সচেতন। এখন পর্যন্ত স্কয়ার এ মানসিকতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। স্কয়ার সেই কোম্পানি যারা বাজারের চাহিদার প্রতি তাত্ক্ষণিকভাবে সক্রিয় ভূমিকা নেয়। ওষুধের থেরাপিউটিক ক্লাসের সবই আমরা কভার করি ভোক্তার সুবিধার্থেই।
টানা তৃতীয় বছরের মতো সবচেয়ে বেশি বিক্রীত ১০ ওষুধের শীর্ষে রয়েছে হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্র্যান্ড সারজেল। বছর তিনেক আগে ওষুধের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সেকলো।
ওষুধ শিল্প খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিক্রিতে শীর্ষস্থানে পরিবর্তন ওষুধ পণ্যের লাইফ সাইকেলের স্বাভাবিক গতি। সেকলোর জেনেরিক নাম ওমিপ্রাজল। দেশে অনেক আগে থেকেই এ জেনেরিকের ওষুধ বাজারে আছে। তবে তুলনামূলক নতুন জেনেরিক ইসোমিপ্রাজল। এ জেনেরিকেরই একটি ওষুধের ব্র্যান্ড সারজেল। সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসকের পছন্দ, ওষুধের কার্যকারিতাসহ নানা দিক বিবেচনায় ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা কমছে ওমিপ্রাজলের। অন্যদিকে ব্যবহার বাড়ছে ইসোমিপ্রাজল, র্যাবেপ্রাজল ও লেন্সোপ্রাজল জেনেরিকের ওষুধের, চিকিৎসাবিজ্ঞানে যাকে বলা হয় ‘নতুন ভালো বিকল্পের সূচনা’। এ পরিবর্তনের প্রভাবেই জেনেরিক ইসোমিপ্রাজলের ব্র্যান্ড সারজেল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
আইকিউভিআইএর তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের বাজারে সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধের শীর্ষ ১০ ব্র্যান্ডে সারজেলের পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে যথাক্রমে রেনাটার ম্যাক্সপ্রো, ইনসেপ্টার প্যানটোনিক্স, স্কয়ারের সেকলো, রেডিয়েন্টের এক্সিয়াম, বেক্সিমকোর বাইজোরান, স্কয়ারের সেফ-থ্রি, একমির মোনাস, বেক্সিমকোর নাপা ও নাপা এক্সট্রা।
বিক্রীত ওষুধের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে শুধু গ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ওষুধই রয়েছে পাঁচটি। প্যারাসিটামল গ্রুপের দুটি ব্র্যান্ড ছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিক ও উচ্চরক্তচাপের ওষুধও রয়েছে এ তালিকায়। সবচেয়ে বেশি বিক্রীত ব্র্যান্ড সারজেলের বিক্রয় প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছর ছিল ২৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। বিক্রি হয়েছে ৭১১ কোটি টাকার সারজেল।
হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ হালিমুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশের ওষুধের বাজারে উৎপাদিত পণ্য কমবেশি সব প্রতিষ্ঠানেরই এক। হেলথকেয়ার কোনো পণ্য প্রথম বাজারে নিয়ে এসেছে, এমনটা নয়। আমি মনে করি, হেলথকেয়ারের কর্মী বাহিনী তুলনামূলক বেশি উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করছে বলেই আমাদের পণ্য বিক্রি বেড়েছে।
সারজেলের পর সবচেয়ে বেশি বিক্রীত ওষুধ ছিল রেনাটার ম্যাক্সপ্রো। গত অর্থবছর এ ওষুধ বিক্রি হয়েছে ৩৬৯ কোটি টাকার। বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। ভ্যাকসিন উৎপাদনে বিখ্যাত হলেও গ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ওষুধ বিক্রি বিবেচনায় তৃতীয় অবস্থানটি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যানটোনিক্স। গত অর্থবছরে ওষুধটি বিক্রি হয়েছে ৩৩৩ কোটি টাকার, প্রবৃদ্ধির হার ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে সেকলো বিক্রি হয়েছে ৩৩০ কোটি টাকার। অবস্থান ছিল চতুর্থ। পঞ্চম অবস্থানে থাকা রেডিয়েন্টের এক্সিয়াম বিক্রি হয়েছে ২১৮ কোটি টাকার।
বিক্রির দিক থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে বেক্সিমকোর বাইজোরান। গত অর্থবছর এ ওষুধ বিক্রির অর্থমূল্য ছিল ১৯০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সপ্তম অবস্থানে থাকা ওষুধটি হলো স্কয়ারের অ্যান্টিবায়োটিক সেফ-থ্রি। ২০২০-২১ অর্থবছরে ওষুধটি বিক্রি হয়েছে ১৮১ কোটি টাকার। বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অষ্টম, নবম ও দশম অবস্থানে থাকা সর্বোচ্চ বিক্রীত ওষুধ হলো যথাক্রমে মোনাস, নাপা ও নাপা এক্সট্রা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন ব্র্যান্ডের ওষুধ বেশি বিক্রি হচ্ছে, তা মানুষের শরীরে কার্যকারিতার পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানির বিপণন কৌশলের ওপরও নির্ভর করে।
এ বিষয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. স্বপন চন্দ্র ধর বণিক বার্তাকে বলেন, গ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ওষুধের বিক্রি বৈশ্বিকভাবেই বেশি। এর ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে। সে কারণে বাজারে অ্যাসিডিটির ওষুধের চাহিদা বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে ওমিপ্রাজলের চেয়ে ইসোমিপ্রাজলের চাহিদা যেমন বাড়ছে, তেমনি চিকিৎসকরা র্যাবেপ্রাজল, লেন্সোপ্রাজল ব্যবহারের পরামর্শও দিচ্ছেন। ব্র্যান্ড যেটাই হোক সেটার পরিচিতি বা জনপ্রিয়তার পেছনে কোম্পানির বিপণন কৌশলও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।