সূচক ও লেনদেন কমেছে

বিক্রির চাপে শুরুর উত্থান ধরে রাখতে পারেনি পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারের। এদিন লেনদেন শুরুর দিকে কিছুটা উত্থান হলেও বিক্রির চাপে দিনশেষে বাজারের সব সূচক কমেছে। এদিকে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের প্রবণতা অব্যাহত থাকায় বিক্রির চাপ ছিল বলে জানিয়েছে বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাই মূলত প্রথম দিকের উত্থান বাজার ধরে রাখতে পারেনি বলে জানান তারা। গতকাল সূচক লেনদেনের সঙ্গে কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ইউনিট দর।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর থেকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এর কিছু সময় পর সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এরপর আবার উত্থান পতনের মাধ্যমে দিনশেষে পতন অবস্থায় লেনদেন শেষ হয়। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৬ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে হাজার ১৯১ দশমিক ৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ২২৮ দশমিক ৩১ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লিমিটেড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেক্সিমকো লিমিটেড, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড।

এদিকে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিনশেষে ১০ দশমিক ৩০ পয়েন্ট কমে হাজার ৫৬৬ দশমিক ৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা আগের দিন ছিল হাজার ৫৭৭ দশমিক ১০ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ১৮ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট কমে গতকাল হাজার ৬৫৫ দশমিক ৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ৬৭৪ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে হাজার ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ১৭১ কোটি ৩১ লাখ ৮৩ হাজার। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ২৪৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে আর্থিক খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ দশমিক শূন্য শতাংশ দখলে নিয়েছে বস্ত্র খাত। ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ওষুধ রসায়ন খাত আর দশমিক ৩৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ডমিনেজ স্টিল লিমিটেড, ইসলামিক ফাইন্যান্স লিমিটেড, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যাল লিমিটেড এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিডি অটোকারসের দশমিক ৯৪ শতাংশ, আজিজ পাইপসের দশমিক ৮৩ শতাংশ, আমরা টেকনোলজিসের দশমিক ৭৮ শতাংশ, ইউনিক হোটেলের দশমিক ৯১ শতাংশ, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের দশমিক ৯০ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দশমিক ৫৬ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সের দশমিক ২১ শতাংশ, আমরা নেটওয়ার্কের দশমিক শূন্য শতাংশ, কেডিএস অ্যাকসেসরিজের দশমিক শূন্য শতাংশ এবং সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের শেয়ারদর দশমিক ৩৪ শতাংশ  বেড়েছে।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ৮৯ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৫৯৩ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১২ হাজার ৬৮২ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩১৬টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮টির, কমেছে ২১৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৫টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৬৬ কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮২ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৮৪ কোটি ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ২৪৩ টাকার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন