গ্যাস সরবরাহে অবনতি

বড় বস্ত্র কারখানায় উৎপাদন সক্ষমতার ৭০% অব্যবহৃত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের রফতানিমুখী পোশাক তৈরির কারখানাগুলোর মূল কাঁচামাল সুতা-কাপড়, যা পোশাকের পশ্চাদসংযোগ বা ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প-কারখানা থেকে সরবরাহ হয়। কারখানাগুলোর বেশির ভাগই অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর চট্টগ্রামে। এলাকাগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস সরবরাহের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এতে করে কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে ৪০-৪৫ শতাংশ অব্যবহৃত থাকছে। বড় কারখানাগুলোর ক্ষেত্রে হার ৭০ শতাংশ।

গ্যাস সরবরাহের নেতিবাচক পরিস্থিতি প্রকটতায় গতকাল জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সংবাদ সম্মেলনে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির প্রভাবে সমস্যাকবলিত কারখানাগুলোর সংকট উপস্থাপনের পর বস্ত্র খাতের বড় ১৩ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা ব্যাখ্যা করেন বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট। তিনি জানান, কারখানাগুলো খাতটির মোট উৎপাদনের ৩০ শতাংশ সরবরাহ সক্ষমতা রাখে। বর্তমানে গ্যাস সংকটে কারখানাগুলোর সক্ষমতার ৭০ শতাংশই অব্যবহৃত থাকছে।

বিটিএমএর তথ্যমতে, গ্যাসের সরবরাহ সমস্যায় থাকা বড় ১৩ কারখানার মধ্যে আছে দ্বীপ টেক্সটাইল মিলস, লিটল স্টার স্পিনিং মিলস, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, হাজী হাশেম স্পিনিং মিলস, ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইলস, বেঙ্গল সিনথেটিক ফাইবারস, এমএএইচ স্পিনিং মিলস, এসিএস টেক্সটাইলস (বাংলাদেশ), মোশাররফ কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস, স্কয়ার টেক্সটাইলস, আকিজ টেক্সটাইলস, টেকনো টেক্সটাইল মিলস টেকনো স্পিনিং মিলস। কারখানাগুলোর নয়টিরই অনুমোদিত পিএসআই ১৫। এর মধ্যে কোনো কোনো কারখানা গ্যাসের পিএসআই পাওয়া যাচ্ছে মাত্র দশমিক ৫।

বিটিএমএ সদস্য মিলের তথ্য অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ, গাজীপুর চট্টগ্রামে অবস্থিত বিটিএমএর কিছু সদস্য মিলগুলোতে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি সর্বনিম্ন পর্যায় দশমিক পিএসআইতে নেমে গেছে। ফলে মিলগুলো স্থাপিত মেশিনারিজ ক্ষমতার ৭০ শতাংশের বেশি বন্ধ রেখে চালু রয়েছে।

বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, আমাদের মিলগুলোর যারা ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনের মাধ্যমে মিল পরিচালনা করে, ওই মিলগুলোতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড মেশিনের ব্যবহার হয়। ফলে গ্যাসের পর্যাপ্ত এবং অব্যাহত সরবরাহ না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত মেশিনারিজ এবং স্পেয়ার পার্টসের ক্ষতিসাধন হচ্ছে, উৎপাদনও সর্বনিম্ন পর্যায়ে। আমরা প্রধানমন্ত্রীসহ জ্বালানি উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ যে, গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এলএনজি আমদানির ব্যবস্থা করেছেন। আমরা জানি, বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি মূল্যের ওঠা-নামা হয়ে থাকে। তবে এলএনজি নিয়মিত ক্রয় বা প্রকিউরমেন্ট অব্যাহত থাকলে দেখা যাবে যে, এর গড় মূল্য একটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় থাকবে, যা পরবর্তী সময়ে সরকারের আমদানি ব্যয়কে প্রভাবিত করবে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফজলুল হক, পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন, ইঞ্জি. রাজীব হায়দার, ইঞ্জিনিয়ার ইশতিয়াক আহমেদ সৈকত আজিজুর আর চৌধুরী প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন