আগামী বছর মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরবে জ্বালানি তেলের চাহিদা

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক ১০ কোটি ব্যারেলে পৌঁছবে ছবি : রয়টার্স

টানা তিন মাস নিম্নমুখী থাকার পর ফের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী মাস থেকে চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করবে। ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) জ্বালানি পণ্যটির চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ), জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক মার্কিন জ্বালানি প্রশাসন সম্প্রতি তাদের মাসভিত্তিক জ্বালানি তেলের চাহিদা সরবরাহ শীর্ষক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাগুলোর দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক নাগাদ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা দৈনিক ১০ কোটি ব্যারেলে ফিরে আসবে, সর্বশেষ ২০১৯ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা পর্যায়ে ছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ঝুঁকছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো। কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে অপরিচ্ছন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি যুগের অবসান ঘটাতে চায় আধুনিক বিশ্ব। কিন্তু সব ক্ষেত্রে এখনো জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হয়ে উঠতে পারেনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি। মহামারীজনিত বৈশ্বিক সংকট শিথিল হতে শুরু করার পর থেকেই জীবাশ্ম জ্বালানি বিশেষ করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যবহার বাড়ছে। যদিও বছর নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টার প্রাদুর্ভাবে হঠাৎ করেই কমে যায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা। পণ্যটির বিশ্ববাজার সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কিন্তু আগামী মাস থেকে আবারো চাহিদা বাড়ার আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

জার্মানিভিত্তিক কমার্জ ব্যাংকের বিশ্লেষক কারস্টেন ফ্রিৎস বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনরায় গতির সঞ্চার হচ্ছে। মহামারীর ধকল সামলে উঠছে স্থবির অর্থনীতিগুলো। এর ফলে অল্প সময়ের ব্যবধানেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে সক্ষম হবে।

আইইএ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে জানায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে। কিন্তু জুলাইয়ে প্রধান অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী দেশ চীনে চাহিদা হঠাৎ করেই কমে যায়। এটি বৈশ্বিক চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, প্রধান প্রধান জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী দেশ বিশেষ করে এশিয়া অঞ্চলে ডেল্টার দ্রুত সংক্রমণের কারণে চাহিদা এখনো চাপের মুখে রয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাহিদা গড়ে দৈনিক লাখ ১০ হাজার ব্যারেল করে কমে যায়। কিন্তু অক্টোবর থেকে দৈনিক ১৬ লাখ ব্যারেল করে চাহিদা বাড়বে বলে জানিয়েছে আইইএ। বছরের শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।

এদিকে ওপেক চাহিদা বৃদ্ধি নিয়ে আরো বেশি আশাবাদী। জোটটি বলছে, আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক ব্যবহার দৈনিক ১০ কোটি লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছবে। মহামারীর আগের বছরের একই সময় ব্যবহারের পরিমাণ ছিল গড়ে দৈনিক ১০ কোটি ৩০ হাজার ব্যারেল।

আইইএ জানায়, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিশ্বজুড়ে শনাক্তের হার কমেছে। ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং প্রদানে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিনিষেধও অনেক দেশে শিথিল হয়েছে। এসব কারণে চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ৫২ লাখ ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর আরো ৩২ লাখ ব্যারেল করে বাড়বে চাহিদা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন