পিপলস রিপাবলিক অব চায়না। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্র। ইরান, ভারত ইনকা, মায়ার মতো প্রাচীন চীনের সভ্যতা। ১৯৪৯ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে বিপ্লবের পর এক নতুন চীনের যাত্রা হয়। নানা রকম সংস্কার ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমান বিশ্বে চীন অন্যতম এক পরাশক্তি। জিডিপির হিসাবে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ফসল নয়া চীন এখন পুঁজিবাদী বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র। ঐতিহাসিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে চীনের শক্তি-দুর্বলতা, সাফল্য-ব্যর্থতা ও ধারাবাহিক পরিবর্তনগুলো নিয়ে লিখেছেন আনু মুহাম্মদ
কমিউনিস্টদের আন্তর্জাতিক ঐক্যমঞ্চের নাম ছিল ‘তৃতীয় আন্তর্জাতিক’ বা ‘কমিনটার্ন’। এর নীতি, সমর্থন ও পরামর্শ প্রাথমিক পর্যায়ে চীনে কমিউনিস্ট পার্টি গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তবে তাদের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক ও বিরোধিতাও সৃষ্টি হয়েছিল। মাও সে তুংসহ নেতাদের কেউ কেউ কোনো কোনো পর্যায়ে কমিনটার্নের নীতি বা পরামর্শ অগ্রাহ্য করেছেন।
১৯২০ থেকে ১৯২৭ সময়কাল পর্যন্ত চীনের বিপ্লবী আন্দোলন সম্পর্কে তৃতীয় আন্তর্জাতিক বা কমিনটার্নের যে নীতি ছিল, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের একজন বিশেষজ্ঞ পরে সারসংক্ষেপ করেছেন এভাবে:
‘ক. কমিউনিস্ট পার্টিতে বিপ্লবী মার্ক্সবাদী শক্তিগুলোর সমাবেশ ও সংহতকরণে সহযোগিতা করা। মার্ক্সবাদী ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেয়া। সংকীর্ণতাবাদ, একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মুক্ত হয়ে যাতে এ পার্টি সর্বহারার ব্যাপক জনভিত্তিক সংগঠন হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, তাতে সহযোগিতা করা। খ. শ্রমিক শ্রেণীর আন্দোলনের মতাদর্শ হিসেবে মার্ক্সবাদের প্রতিষ্ঠায় যথাযথ সহযোগিতা, কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মৈত্রী এবং কমিউনিস্ট নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন গণ ও শ্রেণী সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করা। গ. জাতীয় বিপ্লবী আন্দোলনে কমিউনিস্টদের সমবেত করা, যে আন্দোলনে তখন নেতৃত্ব দিচ্ছিল কুওমিনটাং পার্টি এবং একটি ঐক্যবদ্ধ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ফ্রন্টের মাধ্যমে লড়াই পরিচালনা করা। এর মধ্যেই শ্রেণী সংগ্রামের ভিত্তিতে প্রলেতারিয়েত তার আধিপত্য তৈরি করে চীনকে অধনবাদী বিকাশের পথে নিয়ে যাবে।’
সান ইয়াৎ সেনের মৃত্যুর পর কুওমিনটাং দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন চিয়াং কাই শেক। সোভিয়েত ইউনিয়নের উপদেষ্টারাও তাঁর নেতৃত্বের স্বীকৃতি দেন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি তখন কুওমিনটাংসহ একসঙ্গেই জাপানসহ বিদেশী আগ্রাসনবিরোধী লড়াই করছিল। বিরোধ তৈরি হয় চীনের অভ্যন্তরে সমর ও সামন্তপ্রভুদের বিরুদ্ধে লড়াই সংঘটিত করার ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ১৯২৬ সালে মাও সে তুংয়ের লেখা প্রথম কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ চীনা সমাজের শ্রেণী বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়। ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয় পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিচালিত অনুসন্ধানের প্রতিবেদন, হুনানে কৃষক আন্দোলনের অনুসন্ধান রিপোর্ট। এসবের মধ্য দিয়ে মাও চীনের বিপ্লবী সংগ্রামের রণনীতি রণকৌশল নতুনভাবে বিন্যস্ত করার তাগিদ উপস্থিত করেন। বাস্তব পরিস্থিতির এ তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে কৃষকদের মধ্যে কাজ, কৃষক সংগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে কমিনটার্ন ও পার্টির নেতৃত্বের অনেকেই একমত ছিলেন না। কৃষকই বিপ্লবের প্রধান শক্তি, ভূস্বামীদের জমি বাজেয়াপ্ত করতে হবে এ লাইনে মাও উত্থাপিত বক্তব্য কেন্দ্রীয় কমিটি তখন প্রত্যাখ্যান করে।
পার্টি তখন বস্তুত দুই স্তরেই কাজ করছিল। একদিকে পার্টির সাংগঠনিক কাঠামোতে কাজের বিস্তার ঘটছিল, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লক্ষ্য নিয়ে কুওমিনটাং দলের মধ্যে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে পার্টি নেতা-কর্মীরা কাজ করছিলেন। যেমন মাও সে তুং তখন ছিলেন কুওমিনটাং কৃষক ব্যুরো এবং যৌথভাবে পরিচালিত কৃষক আন্দোলন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সহপরিচালক। কৃষকসহ জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব বৃদ্ধিতে কুওমিনটাং নেতৃত্বের ভয় একপর্যায়ে বৈরী আক্রমণে পরিণত হয়। ১৯২৭ সালে চিয়াং কাই শেক কমিউনিস্টদের প্রভাব কমানোর জন্য পার্টির মধ্যে কমিউনিস্ট সদস্য কমানো এবং নানা পর্যায়ে কমিউনিস্টবিরোধী অভিযান শুরু করেন। ক্রমে এ অভিযানের তীব্রতা বাড়তে থাকায় পার্টি আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়।
মাও সে
তুং
হুনানে
গণঅভ্যুত্থান
সংগঠিত
করার
চেষ্টা
করে
ব্যর্থ
হন,
পশ্চাদপসরণ
করে
পর্বতমালায়
শক্তিশালী
ঘাঁটিতে
আশ্রয়
নেন।
ক্যান্টন
গণঅভ্যুত্থান
চেষ্টাও
ব্যর্থ
হয়।
কমিউনিস্টবিরোধী
সামরিক
অভিযানের
মধ্য
দিয়ে
সমগ্র
চীনে
চিয়াং
কাই
শেকের
দলের
একক
আধিপত্য
প্রতিষ্ঠিত
হয়।
এ
পরিপ্রেক্ষিতে
১৯২৮
সালে
হুনান
এলাকায়
সশস্ত্র
বিপ্লবী
ও
সেনাবাহিনীর
বিদ্রোহী
সদস্যদের
নিয়ে
মাও
এবং
চু
তে-র
নেতৃত্বে
গঠিত
হয়
রেড
আর্মি
বা
লালফৌজ।
কিয়াংসীর
পার্শ্ববর্তী
এলাকায়
বেশকিছু
অঞ্চল
মুক্ত
করে
তাঁরা
‘সোভিয়েত
সরকার’
ঘোষণা
করেন।
সে
সময়
বিদেশী
দখলে
থাকা
সাংহাইতে
লিলি
শানসহ
পার্টির
কেন্দ্রীয়
অন্য
নেতারা
গোপনে
কাজ
করছেন।
লিলি
শান
গ্রুপ
দৃঢ়ভাবে
শহরে
গণঅভ্যুত্থান
কেন্দ্রিক
লাইন
নিয়ে
সক্রিয়
ছিলেন।
তাঁদের
সঙ্গে
মাও-এর
গ্রামীণ
সোভিয়েত
সরকার
লাইনের
সংঘাত
এ
সময়
তীব্র
হয়।
১৯৩০
সালে
লালফৌজ
হুনানের
রাজধানী
চাংশা
দখল
করেও
ধরে
রাখতে
পারেনি।
চিয়াংয়ের
বাহিনী
এ
সময়
লালফৌজের
ওপর
প্রবল
আঘাত
করে
হটিয়ে
দেয়
এবং
অন্য
অনেকের
সঙ্গে
মাও
সে
তুংয়ের
স্ত্রী
ও
বোনকেও
হত্যা
করে।
১৯৩১ সালে
সাংহাইতে
আত্মগোপন
অবস্থায়
পার্টির
গোপন
সভায়
ওয়াং
মিংকে
পার্টির
সাধারণ
সম্পাদক
নির্বাচিত
করা
হয়।
অন্যদিকে
গভীর
অরণ্যে
চীনা
সোভিয়েতগুলোর
সম্মিলিত
কংগ্রেসে
সর্বচীন
সোভিয়েত
সরকারের
চেয়ারম্যান
হিসেবে
নির্বাচিত
হন
মাও
সে
তুং,
সামরিক
কমান্ডার
হিসেবে
মনোনীত
হন
চু
তে।
এ
সময়
জাপান
মাঞ্চুুরিয়া
দখল
করার
পর
চিয়াং
কাই
শেক
লালফৌজ
ধ্বংস
অভিযান
স্থগিত
করেন।
উত্তর-পশ্চিম
চীন
ভয়াবহ
দুর্ভিক্ষ
অতিক্রম
করে
তখন।
দুর্ভিক্ষে
নিহতদের
সংখ্যা
বিভিন্ন
হিসাবে
পাওয়া
যায়
৫০
লাখ
থেকে
১
কোটি।
এরই মধ্যে
কমিউনিস্ট
পার্টি
কৃষক
শ্রমিকদের
মধ্যে
ব্যাপক
সমর্থন
ও
সক্রিয়
সদস্য
বাড়াতে
সক্ষম
হয়েছে।
তার
দ্রুত
শক্তিবৃদ্ধি
ও
বিকাশের
উৎস
ছিল
জনভিত্তি
নির্মাণের
মধ্যেই।
পার্টির জনভিত্তির বিস্তার ও
লংমার্চ
চীনা
কমিউনিস্ট
পার্টি
গঠন
করেছিলেন
প্রধানত
বিপ্লবী
চেতনাসম্পন্ন
মধ্যবিত্ত
বুদ্ধিজীবীরাই।
তবে
১৯২৭
সালের
মধ্যে
পার্টি
শ্রমিক
ও
কৃষকদের
মধ্যে
একটি
শক্ত
ভিত্তি
তৈরি
করতে
সক্ষম
হয়।
তৃতীয়
আন্তর্জাতিক
বা
কমিনটার্নের
বিশ্লেষণেও
এর
স্বীকৃতি
পাওয়া
যায়।
তাদের
দলিলে
বলা
হয়
যে
নবগঠিত
এ
পার্টির
প্রথম
কংগ্রেসে
মোটামুটি
উপস্থিতি
ছিল
৫০
জনের,
১৯২৫
সালের
জানুয়ারিতে
অনুষ্ঠিত
চতুর্থ
কংগ্রেস
পর্যন্ত
সদস্য
সংখ্যা
দাঁড়ায়
৯৫০
জন।
এ
বছর
থেকেই
পার্টির
জনভিত্তি
বিস্তৃত
হতে
শুরু
করে।
‘৩০
মে
আন্দোলন’
নামে
পরিচিত
জনআন্দোলনের
মধ্য
দিয়ে
সদস্য
সংখ্যা
৪
হাজারে
উন্নীত
হয়,
যার
শতকরা
৫০
ভাগই
ছিলেন
শ্রমিক।
১৯২৫
সালের
শেষ
পর্যন্ত
কৃষক
সংখ্যা
ছিল
১০০
জন,
তাঁরা
সবাই
ছিলেন
কুয়ানটাং
এলাকার।
কিন্তু
১৯২৭
সালে
যখন
পার্টি
পঞ্চম
কংগ্রেস
আহ্বান
করে,
তখন
তার
সদস্য
সংখ্যা
পৌঁছে
গেছে
৬০
হাজারে,
যার
বৃহৎ
অংশ
ছিলেন
কৃষক।
কমিনটার্নের
মতে,
‘১৯২১
থেকে
১৯২৭
সাল
ছিল
বস্তুত
মার্ক্সবাদী
প্রচারণা
গ্রুপ
থেকে
চীনা
কমিউনিস্ট
পার্টির
প্রকৃত
জনভিত্তিসম্পন্ন
রাজনৈতিক
দলে
রূপান্তরের
কাল।’
পার্টির এ
অব্যাহত
বিকাশ
জেনারেল
চিয়াং
কাই
শেকের
আতঙ্কের
যথেষ্ট
কারণ
ছিল।
সেজন্য
তিনি
শুধু
কুওমিনটাং
পার্টিকে
কমিউনিস্ট
প্রভাবমুক্ত
করা
নয়,
তাদের
ভিত্তি
নির্মূল
করতে
উদ্যত
হন।
আগেই
বলেছি,
এ
১৯২৭
সালেই
পার্টির
বিভিন্ন
পর্যায়ে
চিয়াং
বাহিনীর
আক্রমণ
শুরু
হয়।
পার্টি
সদস্য
এবং
সমর্থকদের
পাইকারি
গ্রেফতার,
বিচার,
খুন
চলতে
থাকে।
এ
প্রতিকূল
পরিস্থিতিতে
গ্রাম
ও
পাহাড়ে
ঘাঁটি
প্রতিষ্ঠা,
সোভিয়েত
বা
মুক্তাঞ্চল
গঠন
এবং
লালফৌজ
শক্তিশালী
করার
মাধ্যমে
পার্টি
নিজেদের
টিকিয়ে
রাখতে
ও
ভিত্তি
সম্প্রসারণে
মনোযোগী
হয়।
১৯৩২ সালে
জাপান
সাংহাই
আক্রমণ
করলে
পার্টি
জাপানের
বিরুদ্ধে
যুদ্ধ
ঘোষণা
করে।
কিন্তু
চিয়াং
কাই
শেকের
বৈরিতার
কারণে
জাপানবিরোধী
যুদ্ধে
পার্টি
বাহিনী
বেশিক্ষণ
টিকতে
পারেনি।
প্রবল
চাপের
মধ্যেই
আত্মগোপনে
এবং
মুক্তাঞ্চলকে
ঘাঁটি
করে
পার্টির
তত্পরতা
চলতে
থাকে।
১৯৩৪
সালে
দ্বিতীয়
সর্বচীন
সোভিয়েত
কংগ্রেসে
মাও
সে
তুং
চেয়ারম্যান
নির্বাচিত
হন।
এ
বছরই
শুরু
হয়
লংমার্চ।
১৯৩৫
সালের
শুরুতে
আত্মগোপন
অবস্থাতেই
পলিটব্যুরোর
সভা
অনুষ্ঠিত
হয়,
সেখানে
লংমার্চ
কালে
মাও
সে
তুংকেই
প্রধান
নেতৃত্ব
হিসেবে
স্বীকৃতি
দেয়া
হয়।
একের পর
এক
হামলা
মোকাবেলা
করতে
করতেই
পার্টি
পরিচালিত
লংমার্চ
(১৯৩৪-৩৫)
অতিক্রম
করতে
থাকে
বিভিন্ন
রাজ্য।
প্রায়
ছয়
হাজার
মাইল
অতিক্রম
করে
এ
লংমার্চ
যখন
শেষ
হয়,
ততদিনে
পার্টি
সামরিক,
রাজনৈতিক
ও
মতাদর্শিকভাবে
অনেক
শক্তিশালী
অবস্থান
তৈরি
করে
চীনের
মানচিত্রে
হাজির।
কমিউনিস্ট
আন্তর্জাতিক
বা
কমিনটার্নের
সঙ্গে
পার্টির
সম্পর্ক
তখন
শিথিল,
বরং
পার্টি
কমিনটার্নের
উপদেষ্টাদের
দেয়া
নীতি
অগ্রাহ্য
করে
তার
সমালোচকের
ভূমিকায়
গেছে
লংমার্চের
সময়
থেকেই।
এ
লংমার্চের
মধ্য
দিয়েই
মাও
সে
তুং
পার্টির
প্রধান
নেতা
হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত
হয়েছেন।
পার্টির
ভেতরের
অন্যান্য
লাইন
তখন
চীনের
পরিপ্রেক্ষিতে
ভুল
বা
অকার্যকর
প্রমাণিত।
সে সময়
বাইরের
দুনিয়ায়
এ
পার্টির
বিকাশধারা
সম্পর্কে
খবরাখবর
প্রকাশিত
হতো
সামান্যই,
যা
হতো
তার
প্রায়
সবই
ছিল
ভুল
বা
অপপ্রচার।
চিয়াং
কাই
শেক
বাহিনী
ছিল
বিশাল,
তার
সহযোগী
হিসেবে
অনেক
ব্রিটিশ
জার্মান
উপদেষ্টাও
ছিল।
গোয়েন্দা
সংস্থাগুলোও
ছিল
সুসংগঠিত।
এসবের
মোকাবেলা
করে
কুওমিনটাংয়ের
প্রতিপক্ষ
হিসেবে
কমিউনিস্ট
পার্টির
পক্ষে
যে
বেশিদিন
টিকে
থাকা
সম্ভব
নয়
সে
বিষয়ে
এরা
সবাই
নিঃসন্দেহ
ছিলেন।
পার্টি
ঠিকই
অনেক
প্রতিকূলতার
মধ্যে
পতিত
হয়।
বারবার
ঘাঁটি
ছেড়ে
দিতে
হয়,
পশ্চাদপসরণ
করতে
হয়।
মাও
সে
তুং
এবং
চু
তে
পরাজিত,
ধৃত
ও
নিহত
হওয়ার
খবর
প্রকাশিত
হয়
বহুবার।
কমিউনিস্ট
পার্টি
তখন
‘লালদস্যুদের
গ্যাং’
হিসেবেই
পরিচিত।
একপর্যায়ে
‘১
নম্বর
লালদস্যু’
মাও
সে
তুংকে
জীবিত
বা
মৃত
ধরে
দিতে
পারলে
লাখ
ডলার
পুরস্কারও
ঘোষণা
করা
হয়েছে।
একটানা
বিপ্লবীদের
বিরুদ্ধে
অপপ্রচারে
বাইরের
দুনিয়া
তো
বটেই,
চীনের
বড়
শহরেও
তখন
ভুল
ধারণা
তৈরি
হয়েছে
অনেক।
চীনা কমিউনিস্ট
পার্টির
কার্যক্রম
ও
অবস্থা
সম্পর্কে
পশ্চিমা
বিশ্বের
মানুষ
প্রথম
বিস্তারিত
জানতে
পারেন
মার্কিন
সাংবাদিক
এডগার
স্নোর
মাধ্যমে।
স্নো
১৯২৮
সাল
থেকেই
চীনে
ছিলেন।
পিকিংয়ে
তিনি
সস্ত্রীক
অবস্থান
করতে
থাকেন
১৯৩২
সাল
থেকে।
চীনা
ভাষায়
যোগাযোগে
দক্ষতা
অর্জন
করেন।
মিসেস
সান
ইয়াৎ
সেনের
সুপারিশেই
তিনি
পার্টির
নেতাদের
সঙ্গে
যোগাযোগ
স্থাপনে
সক্ষম
হন।
অনেক
ঝুঁকি
নিয়ে
স্নো
যখন
পার্টির
নেতাদের
ঘাঁটি
এলাকায়
যান
তখন
লংমার্চ
চলছে।
তাঁর
পাঠানো
রিপোর্টের
মাধ্যমেই
প্রথম
সবাই
চীনা
কমিউনিস্ট
পার্টির
রাজনীতি,
কর্মকৌশল,
জনভিত্তি,
সামরিক
বিজয়
এবং
কাজের
বিস্তৃতি
সম্পর্কে
জানতে
পারেন।
সে
সময়
চীনের
বিপ্লবী
আন্দোলনের
দীর্ঘদিনের
প্রত্যক্ষ
পর্যবেক্ষক
এডগার
স্নোর
লেখা
নিয়মিত
প্রকাশিত
হয়,
যেখান
থেকে
পার্টির
ওঠানামা,
সংকট
ও
ক্রমবিকাশের
চিত্র
পাওয়া
যায়।
১৯৩৭
সালেই
স্নোর
প্রত্যক্ষ
অনুসন্ধান
ও
অভিজ্ঞতার
ভিত্তিতে
লেখা
বিখ্যাত
গ্রন্থ
‘রেড স্টার
ওভার চায়না’র
প্রথম
সংস্করণ
প্রকাশিত
হয়,
যা
চীন
বিপ্লবের
যাত্রাপথ
অনুধাবনের
জন্য
অবশ্যপাঠ্য।
[চলবে]
আনু মুহাম্মদ: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়