সম্প্রতি পুঁজিবাজারে
তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ লিমিটেড (আইসিবি)
ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডকে এক বছরের
মধ্যে বাজারে ন্যূনতম ১০ শতাংশ ফ্রি ফ্লোট শেয়ার থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে
নির্দেশনা দিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে শেয়ার ছাড়ার জন্য সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে বলে
জানিয়েছেন কমিশনের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল বাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে ওয়ালটনের শেয়ার ছাড়ার
পরিমাণ কমতে পারে। এ বিষয়ে কমিশন অনুমোদন দেয়ার বিষয়টিও ছড়িয়ে পড়ে। তবে বণিক
বার্তার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটির একজন
শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জানান,
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা
হয়েছে। তারা বলছেন, এ মুহূর্তে তাদের এত অর্থের প্রয়োজন নেই। তাই তারা এক বছরের
পরিবর্তে দুই বছর বা আরো বেশি সময় নিয়ে শেয়ার ছাড়তে চান। আমরা তাদের জানিয়েছি যে
১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তেই হবে এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া সম্ভব নয়। তবে সময় বাড়ানোর
বিষয়ে তাদের লিখিতভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, গত বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক
ইন্ডাস্ট্রিজের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার মাত্র দশমিক ৯৭ শতাংশ। ১০ শতাংশের বাধ্যবাধকতা
পূরণ করতে হলে কোম্পানিটিকে আরো ৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।
২০২০ সালে পুঁজিবাজারে
তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের পরিশোধিত মূলধন ৩০২ কোটি ৯২ লাখ ৮০
হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩০ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৩টি। এর
মধ্যে ৯৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে।
এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৩৯, বিদেশী দশমিক ১০ ও সাধারণ
বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে ৯
দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে ওয়ালটনের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ২ কোটি ৭৩ লাখ
৫৪ হাজার ৪২৯টি শেয়ার ছাড়তে হবে। গতকালের বাজারদর অনুযায়ী এ শেয়ারের মূল্য ৩ হাজার
৬০৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
তিন কোম্পানির উদ্যোক্তা
পরিচালকদের ধারণ করা শেয়ার থেকেই এ শেয়ার ছাড়তে হবে। এক্ষেত্রে নতুন করে কোনো
শেয়ার ইস্যু করা হবে না। শেয়ার ইস্যুর জন্য কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ এক বছর সময়
পাবে। এক্ষেত্রে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ করে শেয়ার ছাড়া যাবে। বিদ্যমান বাজারদরে
শেয়ার ছাড়তে হবে। প্রতি মাসে শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে কমিশনকে অবহিত
করতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে পুঁজিবাজারে
আইসিবির ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের পরিমাণ ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। কোম্পানিটিকে আরো ৬ দশমিক ৮১
শতাংশ শেয়ার ছাড়তে বলেছে বিএসইসি। বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টসের ফ্রি ফ্লোট
শেয়ারের পরিমাণ ৫ শতাংশ। কোম্পানিটিকে ছাড়তে হবে আরো ৫ শতাংশ শেয়ার।