অ্যামাজনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে বুকশপ

বণিক বার্তা ডেস্ক

এ পর্যন্ত বইয়ের দোকানগুলোকে ১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বুকশপ ছবি: বুকশপ ডট ওআরজি

করোনা মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে যখন ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্থবির, তখনই বেড়েছে বই বিক্রি। ঘরে বসে থাকা মানুষ সময় কাটাতে বই কিনেছেন, বই পড়েছেন। কারণ অনলাইনে বই বিক্রির সেবাগুলো তখন চালু ছিল। নতুন নতুন অনেক বই বিক্রির অ্যাপ সে সময় ভালো ব্যবসা করেছে। আর এটা বিশ্বজুড়েই দেখা গেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ সময় ভালো ব্যবসা করলেও একটি প্রতিষ্ঠানের কথা বলতে হয় যারা অল্প সময়েই দ্রুত প্রচুর পাঠকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়েছে। আর সে প্রতিষ্ঠানটির নাম হলো বুকশপ ডটওআরজি। বিশেষ করে স্বাধীন স্থানীয় বই বিক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে তারা। অনলাইনে বই বিক্রির সবচেয়ে বড় প্লাটফর্ম অ্যামাজনের পরই নিজেদের নিয়ে গেছে তারা। খবর টেকক্রাঞ্চ।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে বুকশপ প্রতিষ্ঠা করেন বইপ্রেমী অ্যান্ডি হান্টার। এরপর পেরিয়েছে দেড় বছর। আর এ সময়ের মধ্যেই বদলে গেছে গোটা দৃশ্যপট। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি বাজারে বেশ শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে অনলাইনে বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি। তাদের পরিকল্পনা শিগগিরই বিশ্বব্যাপী সেবা বিস্তৃত করা। সর্বশেষ গত আগস্টেও জুলাইয়ের চেয়ে ১০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় ২০২১ সালে বিক্রি বেড়েছে ১৩০ শতাংশ।

নিজেদের প্লাটফর্মে বুকশপ এখন ১ হাজার ১০০টি বইয়ের দোকানকে স্থান দিয়েছে। এর সঙ্গে কাজ করছেন ৩০ হাজারের বেশি সহযোগী বা অ্যাফিলিয়েট, যারা বইয়ের রিভিউ লেখেন। যারা রিভিউ লেখেন তারা মূলত বইপ্রেমী।

বুকশপ মূলত পাবলিক বেনিফিট করপোরেশন। অনলাইনে ব্যবসা করেও তারা অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট ও বইয়ের দোকানগুলোকে তাদের পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। অ্যামাজনের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের বিপরীতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ শেয়ার করছে বুকশপ। বই বিক্রির অর্থ থেকে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ পান অ্যাফিলিয়েটরা। আর বইয়ের দোকানগুলো পায় ৩০ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বইয়ের দোকানগুলোকে ১ কোটি ৫৮ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বুকশপ।

বইপ্রেমীদের জন্য নানা রকমের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বুকশপের ওয়েবসাইটটিতে। আর সে কারণেই এত দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তারা। এ মুহূর্তে তাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যামাজন। হান্টার বলেন, অ্যামাজনের কিন্ডেল বইপ্রেমীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। আর এটিই অ্যামাজনকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়েছে। প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বছরে পদাপর্ণের শুরুতে বইপ্রেমীদের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে বুকশপ। মানুষ যেন সর্বোচ্চ সেবা ও প্রয়োজনীয় বই খুঁজে পায় সেদিকেই নজর তাদের।

হান্টার বলেন, অনলাইন প্লাটফর্মে বই অনেক ক্ষেত্রে ব্লকবাস্টার কোনো মুভির চরিত্র ধারণ করছে। একটি বই কিংবা টপ ২০টি বই নিয়ে এত আলোচনা ও প্রচারণা চলে যেখানে কিছুটা অপরিচিত কিংবা নবীন লেখকের গুরুত্বপূর্ণ বই সামনে আসে না। বইয়ের সাজেশনে বুকশপ শুধু অ্যালগরিদমের ওপর নির্ভর না করে কিছুটা মানবীয় অনলাইন অভিজ্ঞতা উপহার দেয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন