ভারতে ২০০% বেড়েছে স্বর্ণ আমদানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

আগস্টে ভারত ৬৭০ কোটি ডলারের স্বর্ণ আমদানি করে ছবি : রয়টার্স

বিয়ে ও উৎসবজনিত চাহিদায় ভারতে গত কয়েক মাসে স্বর্ণ আমদানি অত্যধিক মাত্রায় বেড়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা এবং দাম বাড়ার প্রত্যাশায় অনেকে মূল্যবান ধাতুটি কিনে মজুদ করে রাখছেন। খবর দ্য প্রিন্ট।

বর্তমানে ভারতের তুলনামূলক ধনীদের মধ্যে স্বর্ণ ক্রয়ের আগ্রাসী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। ঠিক একই সময় দেশটির অতি দরিদ্র পরিবারগুলো অত্যধিক অসচ্ছলতার কারণে স্বর্ণ বন্ধক রেখে ঋণ নিচ্ছেন এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে নিজেদের বন্ধকি স্বর্ণের মালিকানা হারাচ্ছেন এসব পরিবার। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মহামারীর মধ্যে ভারতের অসম অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুলাইয়ে ভারতে ৪২০ কোটি ডলারের স্বর্ণ আমদানি করা হয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৫ শতাংশ বেশি। এদিকে আগস্টে আমদানি আরো বাড়ে। এ সময় ৬৭০ কোটি ডলারের স্বর্ণ আমদানি করা হয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮২ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভারত প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের স্বর্ণালংকার আমদানি করে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় স্বর্ণালংকার আমদানি বেড়েছে ২০০ শতাংশ। গত অর্থবছর প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের স্বর্ণালংকার আমদানি করা হয়। গত কয়েক মাসে মোট পণ্য আমদানিতে স্বর্ণের হিস্যাও বেড়েছে প্রবলভাবে। স্বর্ণ আমদানিতে এমন উল্লম্ফন দেশটির নীতিনির্ধারকদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাইয়ে মোট পণ্য আমদানিতে স্বর্ণের হিস্যা ৯ শতাংশ এবং আগস্টে ১৪ শতাংশ বেড়েছে।

ভারতে স্বর্ণ আমদানিকে কম গুরুত্বপূর্ণ আমদানি পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মূল্যবান ধাতুটির আমদানি কমিয়ে আনতে নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে দেশটির সরকার। এর মধ্যে অন্যতম স্বর্ণ আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ভারত নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টার দ্রুত ও প্রাণঘাতী সংক্রমণ রোধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ সময় অর্থনীতিতে আবারো স্থবিরতার উদ্বেগে ভারতের ধনীরা স্বর্ণ কিনে মজুদ করে রাখছেন।

ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্বর্ণালংকার ব্র্যান্ড কেআর সন্সের অংশীদার কারাভ ভাভাডিয়া বলেন, গত বছর লকডাউনজনিত কারণে ভারতে স্বর্ণালংকারের চাহিদায় ভাটা পড়ে। তবে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত চাহিদা বেড়েছে ৪০ শতাংশ। কভিড-১৯ শনাক্তের হার কিছুটা কমে আসায় জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে স্বর্ণের দাম এক লাফে ৬ হাজার রুপি বেড়ে যায়।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে যেসব ক্রেতা আসছেন তাদের মাঝে স্বর্ণ ক্রয়ে আগ্রাসী প্রবণতা দেখা গেছে। ভবিষ্যতে দাম আরো বাড়ার সম্ভাবনায় তারা অতিমাত্রায় স্বর্ণ কিনে মজুদ করছেন। যদিও স্বর্ণের দাম কমে আবারো আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে, কিন্তু ক্রয় বন্ধ হয়নি।

ভাভাডিয়া আরো বলেন, ভারতে বর্তমানে বিয়ের মৌসুম চলছে। ফলে স্বর্ণালংকারের চাহিদা নতুন মাত্রায় বাড়ছে। মানুষ নবদম্পতিদের উপহার দিতে স্বর্ণালংকার কিনছে। তবে চাহিদা বাড়লেও এটি স্বর্ণের দামে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।

এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভারত ১ হাজার ৬০০ ডলারের রত্ন ও অলংকার রফতানি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি ১৬৬ শতাংশ বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন