আফগানিস্তানে যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতিতে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থা, বিদেশি সহায়তা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক সংকটে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি।
সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ৬০৬ মিলিয়ন ডলার জরুরি সহায়তার আহবান জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার আহবানে সাড়া দিয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠি আফগানিস্তানকে ১০০ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কাতারের গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব যে অর্থ সহায়তা চেয়েছেন তার মধ্যে এক তৃতীয়াংশ জরুরি খাদ্য সহায়তা খাতে ব্যবহার হবে। আগস্ট এবং সেপ্টেম্বরে করা এক জরিপে দেখা যায়, ৯৩ শতাংশ আফগান নাগরিকই যথেষ্ট খাবার পায় না। কারণ তাদের কাছে খাবার কেনার অর্থ নেই।
এরইমধ্যে আফগানিস্তানকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির নিকটতম প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তান। বেইজিং গত সপ্তাহে ১ মিলিয়ন ডলারের খাদ্য ও স্বাস্থ্য সামগ্রীর প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ছাড়া গত শুক্রবার আফগানিস্তানে ৩ মিলিয়ন ডোজ করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পাঠাবে বলেও জানায়। পাকিস্তান রান্নার তেল এবং ওষুধ সামগ্রী পাঠিয়েছে। আফগানিস্তানের আটকে থাকা তহবিল মুক্ত করে দেওয়ারও আহবান জানায় দেশটি।
চীন এবং রাশিয়া বলছে, আফগানিস্তানকে সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উপযুক্ত সহায়তা দেয়ার দায় পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর বর্তায়। জেনেভার সম্মেলনে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের জন্য প্রায় ৬৪ মিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন। আফগানদের পাশে দাঁড়াতে ও দেশটির অভাবী জনগণের জীবন বাঁচানোর আহবান জানান তিনি।
জাতিসংঘের আবেদনে সাড়া দিয়ে ফ্রান্স জানিয়েছে, তারা ১০০ মিলিয়ন ইউরো (১১৮ মিলিয়ন ডলার) সহায়তা দেবে আফগানিস্তানকে।
গতকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে আফগানিস্তানে চলমান বিভিন্ন সংকটের কথা উল্লেখ করেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ পরিমাণে অনাবৃষ্টি সংকটে ফেলেছে শস্য উৎপাদনকেও। এ অবস্থায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার জরুরি সহায়তা তাদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং জন সাধারণের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে।
কয়েক দশকের যুদ্ধ-ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতার পর আফগানরা এবার সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়ের মুখোমুখি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব।