সাতসতেরো

আমাদের পর্যটন: মিথ ও মিথস্ক্রিয়া

মো. আব্দুল হামিদ

আমাদের অঞ্চল একসময় মসলিন রেশম কাপড়, সুগন্ধি চাল, মসলাসহ অসংখ্য উপাদানের জন্য পৃথিবীর নানা অঞ্চলের মানুষের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য ছিল, সে কথা সত্য। আর সেজন্যই তো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসংখ্য পর্যটক, নাবিক বণিক অঞ্চলে পৌঁছতে চেষ্টা করেছেন। ইবনে বতুতা, ভাস্কো দা গামা, পর্তুগিজ-ইঙ্গ-ফরাসি বেনিয়াদের আগমন হওয়ার প্রধান হেতুও ছিল এটাই। অন্যদিকে বুদ্ধের জন্মভূমি হওয়ায় প্রাচ্যের এক বড় গোষ্ঠীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ভারতবর্ষ। হিউয়েন সাঙ বা ফা-হিয়েনরা এসেছিলেন মূলত সেই আকর্ষণ থেকেই।

হালাকু চেঙ্গিস খানেরা দেশ দখলে মোটেই আগ্রহী হতেন না, যদি পূর্বসূরিরা এটাকে শস্যভাণ্ডার বা নিয়ামতপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত না করতেন। ঐতিহাসিক সিল্করুটের অংশ হওয়ার কারণও ছিল কৃষিজাত পণ্যে আমাদের সমৃদ্ধি। কিন্তু অতীতে ছিল বলেই এখনো তা বিশ্ববাসীর কাছে সমভাবে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে তা বোধহয় ঠিক না। বাংলাদেশের পর্যটন খাত সম্পর্কে অসংখ্য মিথ চালু রয়েছে। তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করছি:

হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া প্রায় সবাই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের জন্য পর্যটন খুবই সম্ভাবনাময় এক শিল্প খাত। আমার বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই কথাটি শুনছি। কিন্তু ব্যবসার দৃষ্টিকোণ থেকে সম্ভাবনার সঙ্গে একটি বিষয় খুবই নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সেটা হলো সময়। কোনো সম্ভাবনা থেকে সত্যিকারের উপকার পেতে হলে যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই তা বাস্তবায়ন করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে পর্যটন উন্নয়নের গতি দেখে আপনার কী মনে হয়, সে সম্ভাবনা ধরতে আমরা সত্যিই প্রস্তুত?

বিভিন্ন আলোচনা সভা, এমনকি আমাদের দেশে সেমিনারে পপুলার অনেক কথা বলা যায়। কেউ চ্যালেঞ্জ করে বসে না যে কিসের ভিত্তিতে আপনি এটা বলছেন? কোনো রিসার্চ হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ডাটাবেজ আছে, থাকলেও সেটা কখনো বিশ্লেষণ করেছেন? তাছাড়া যদি সত্যিই সম্ভাবনাময় হয়, তবে পর্যন্ত কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যা থেকে আমাদের রাষ্ট্র উপকৃত হতে পারে? সম্প্রতি কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু বহুদিন শুধু সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।

তাছাড়া আমরা ভাবি না যে সাপ্লাই আর ফিনিশড প্রডাক্ট এক জিনিস নয়। আমরা না চাইতেই প্রকৃতি আমাদের যা দিয়েছে সেগুলো হলো ট্যুরিজম সাপ্লাই। কিন্তু সম্ভাব্য ট্যুরিস্টদের চাহিদা মোতাবেক সেগুলোকে ভোগের উপযোগী করা এবং তা বিক্রির জন্য অফার করলে তবেই তা ট্যুরিজম প্রডাক্ট হয়। হামহাম জলপ্রপাত ১০ বছর আগে আলোচনায় এলেও এখনো পর্যটনবান্ধব উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তাহলে আমরা কি সেখান থেকে সত্যিকারের সুফল প্রত্যাশা করতে পারি?

আরো সহজ করে বললে, আমাদের দেশে পথে-ঘাটে অসংখ্য মেধাবী শিশু জন্মায়। কার্টুনিস্ট রণবী যাদের টোকাই বলে পরিচিত করেছেন। এখন কথা হলো তাদের মেধা কি দেশ জাতির কল্যাণে খুব একটা কাজে লাগে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই না। কারণ প্রকৃতিপ্রদত্ত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে কৃত্রিম সহযোগিতা (অন্যান্য সাপোর্ট) যুক্ত করলে তবেই সর্বোত্তম সুফল মেলে। কিন্তু কেন যেন অসংখ্য সম্ভাবনা অকালে ঝরে যায়।

দীর্ঘদিন থেকে সিলেটের লালাখালের বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে কথা হচ্ছে। আজও সেখানে পর্যটন উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে তেমন কিছু করা হয়নি, বরং বালি উত্তোলনকারীদের দৌরাত্ম্যে দূর-দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা মানুষ কোণঠাসা থাকে। অথচ ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ছোট্ট লেকে স্বচ্ছ তলাযুক্ত স্পিডবোটে চড়ে পর্যটকদের জলজ সম্পদ দেখার সুযোগ করে দিয়ে বিপুল অর্থ আয় হচ্ছে। আমরা সেটা পারছি না। ঠিক তেমনিভাবে সাধারণ মানুষ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ সাদাপাথরকে জনপ্রিয় করছে। কিন্তু জনসমাগম বাড়লে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বড় ভূমিকা দরকার হয়, না হলে স্পটটি টেকসই হয় না।

অনেকেই মনে করেন, বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। বিষয়টা রীতিমতো বিস্ময়কর! এত বিপুল জনগোষ্ঠীর দেশে আমাদের অভ্যন্তরীণ মার্কেট সাইজ নিয়ে আমরা মোটেই মাথা ঘামাই না। যেকোনো প্রচার-প্রচারণার কথা উঠলেই বিদেশীদের জন্য জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে যায়। অথচ রাফ হিসাবে দেশে গড়ে বিদেশী পর্যটকের পরিমাণ দেড় শতাংশের মতো!

তাহলে যে ৯৮ ভাগ অভ্যন্তরীণ পর্যটক আমাদের দেশের শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, এগিয়ে নিচ্ছেন তাদের নিয়ে আমাদের খুব একটা মাথাব্যথা নেই। তাদের জন্য ন্যূনতম স্যানিটেশন সুবিধাটুকুও নিশ্চিত করতে পারছি না, নিরাপদে গন্তব্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে পারছি না। অথচ আমরা বিদেশী ট্যুরিস্টদের এখানে আনতে চাই!

বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া শুধু ছুটি কাটাতে দেশে ঘুরতে আসা পর্যটকের সংখ্যা ঠিক কত, ব্যাপারে একটি সার্ভে করলে আশা করি আমাদের বোধোদয় হবে। তাছাড়া দেশে প্রকৃতপক্ষে প্রতি বছর কতজন পর্যটক কোন দেশ থেকে আসে, তারা কী চায়, তাদের সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি জানার জন্য ইনটেনসিভ রিসার্চ প্রজেক্ট হাতে নেয়া দরকার। কিন্তু ওই বৃত্ত থেকে আমরা বের হতে পারছি না।

আসলে কোথাও হুট করে বিদেশী পর্যটক আসে না। প্রথমে অভ্যন্তরীণ ট্যুরিস্টরা সেখানে যায়। নানা দিক এক্সপ্লোর করে। সেগুলো তারা নানা মাধ্যমে শেয়ার করে। মিডিয়াকর্মীরা সেগুলো কাভার করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী নিত্যনতুন সুযোগ-সুবিধা অফার করতে থাকে। তখন বিদেশীরা অন্যান্য কাজের ফাঁকে সময় পেলে সেগুলোতে ঘুরতে যায়। এভাবে দু-চারজন আসার পর যদি সত্যিই সেটা আকর্ষণীয় হয়. তবে বিদেশী পর্যটক সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। প্রক্রিয়াটি মোটামুটি গোটা দুনিয়ায় এভাবেই কাজ করে।

তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশীয় পর্যটক। তাদের উন্নয়নে কাজ করলে একসময় বিদেশী পর্যটকও পাওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু ডোমেস্টিক ট্যুরিস্টদের ব্যাপারে উদাসীন থাকলে তাদের বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। ঢাকা শহরে এখন অনেক শিশু আছে যারা সোনারগাঁ দেখেনি কিন্তু কাঠমান্ডু ভ্রমণ করেছে; লালবাগ কেল্লা দেখেনি কিন্তু সিঙ্গাপুর ঘুরে এসেছে! অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের আকর্ষণীয় স্পটগুলোর ব্যাপারে তাদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। তাহলে একদিকে তাদের স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা বাড়বে, অন্যদিকে দেশের অর্থও বিদেশ যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

অসংখ্য শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করেছি, বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নে সবচেয়ে সহায়ক হতে পারে কোন বৈশিষ্ট্যটি? তাদের বড় অংশ বলেছে, বাংলাদেশের মানুষ খুব অতিথিপরায়ণ। কথাটা শুনতে ভালো লাগলেও পর্যটনের আলোকে যুক্তির বিচারে তা খুব একটা টেকে না। কারণ বিদেশী পর্যটকরা দেশে বেড়াতে এসে নিশ্চয়ই আপনার বা আমার বাসায় উঠবে না। তারা যেখানে উঠবে, পথে যাদের সাহায্য নেবে, যাদের কাছে কেনাকাটা করবে, মানুষগুলো কি সত্যিই অতিথি আপ্যায়নের মনোভাব নিয়ে কাজ করে?

এয়ারপোর্টে নামার পর দীর্ঘসময় বেল্টের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের লাগেজটা খুঁজে না পেয়ে যখন একজন বিদেশী পর্যটক উদ্বিগ্ন তখন সেখানে কর্মরত একজন তার ট্রলিটা সামনে এনে উচ্চ বখশিশ দাবি করে। বা ১০ ডলার তারা হাতেই ধরে না! বড় নোটের ডলারের জন্য পীড়াপীড়ি করার করুণ অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের দেশে যাত্রা হয়। অনেকের তো লাগেজ কেটে ভেতরের দামি সব জিনিসপত্র আগেই রেখে দেয়া হয়।

যে মাইক্রোবাস বা ট্যাক্সি ড্রাইভাররা গেটের কাছাকাছি থাকে, দেশের নাগরিক হওয়ার পরও আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পাই। একজন বিদেশীকে একা পেলে তারা কীভাবে যে হেনস্তা করে দু-চারটা ঘটনা চোখের সামনে দেখেছি, অবিশ্বাস্য! এরপর হোটেলবয়, রিকশাওয়ালা, এমনকি বাদাম বিক্রেতা সবার দৃষ্টি থাকে ডলারের দিকে, মানুষটির দিকে নয়। তাহলে পুরো জাতি অতিথিপরায়ণ হয়ে লাভ কী, তারা যাদের সংস্পর্শে যাবে তাদের পেশাদারিত্ব বৃদ্ধির জন্য আমরা যথেষ্ট উদ্যোগ কি নিয়েছি?

এক নামি রেস্টুরেন্টে কিছুদিন আগে কয়েকজন বিদেশী মেহমান নিয়ে গেলাম। রাতের খাবার খাওয়ার পর বিল আসে অবিশ্বাস্য পরিমাণ। তখন আমার এক সহকর্মী বলেন, ওরা কিন্তু অনেক সময় বিল বেশি রাখে। আপনি উঠে কাউন্টারে গিয়ে বিলটা চেক করে তারপর পরিশোধ করবেন। প্রথমে আমি তার কথা বিশ্বাস না করলেও বাস্তবে দেখি, আমরা যেসব খাবারের নাম মুখেও আনিনি, তেমন সব আইটেমের দাম ধরে বিল করেছে ১১ হাজার টাকা!

আরেক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে এক বন্ধুসহ খাওয়া শেষে বিল হলো ৯০০ টাকা। হাজার টাকার নোট হাতে নেয়ার সময় ওয়েটারের ভঙ্গি এমনধন্যবাদ স্যার, খুব খুশি হইছি! কিন্তু আমি দাঁড়িয়ে থাকলাম, দেখি সে কী করে? এক পর্যায়ে সে ১০০ টাকা ফেরত দিলে আমি তার হাতে ৫০ টাকা দিলাম। স্পষ্ট বুঝতে পারলামতার মনটা বেজার! অথচ ওয়েটারকে আমি কোনো বখশিশ না দিলেও সে সন্তুষ্ট থাকার কথা, তাই না? ফলে ট্যুরিস্টরা যাদের সংস্পর্শে যাবে, তাদের অতিথিপরায়ণ হতে হবে। না হলে আমাদের সম্পর্কে কখনই বিদেশী মেহমানদের ভালো ধারণা হবে না।

অনেকে মনে করেন, বিদেশীরা যেহেতু ডলারে হিসাব করে সেহেতু আমাদের দেশের সবকিছুই তাদের কাছে সস্তা মনে হয়। সত্যিই কি তাই? একজন বিদেশী এসে যে মানের হোটেলে থাকবে তার প্রতিদিনের ভাড়া কত? আর যদি কোনো রিসোর্টে থাকতে চায় তাহলে তো কথাই নেই। প্রতি রাত থাকার খরচ ১০-১২ হাজার টাকার কম নয়! তারা তো চাইলেই লো কস্ট হোটেলে থাকতে পারবে না, যেকোনো রেস্টুরেন্টে বসতে পারবে না, পাবলিক বাসে জাফলং যেতে পারবে না, তাহলে তার প্রতি ঘণ্টায় খরচের মাত্রা কেমন হবে, ভেবেছেন কখনো?

তাছাড়া বিদেশে ছাত্রছাত্রীদের জন্য শেয়ারড রুমের কালচার আছে। সেখানে মাত্র ১০-১২ ডলার দিয়েও রাত কাটানো যায়। এমনকি অনেকে তাঁবু খাটিয়ে ফুটপাতে রাত কাটিয়ে দেয়, কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু আমাদের দেশে একা কেউ যদি ঘুরতে চায়, তার খরচ নিরাপত্তা উভয় দিকই অনেক বেশি ভাবতে হয়। অন্যান্য জায়গায় ব্যাকপ্যাকাররা পর্যটন মার্কেটের বড় একটি সেগমেন্ট। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো গ্রুপ ট্যুর ছাড়া মা-বাবা স্বস্তিবোধ করেন না। অনেকেই পরিবার নিয়ে নির্জন এলাকায় ঘুরতে ভয় পান। বিষয়গুলো দূর করা না গেলে মাথাপিছু ভ্রমণ খরচ কমানো সম্ভব নয়। তরুণদের ভ্রমণপ্রবণতা বাড়ছে। তাই বিষয়গুলো ভাবা দরকার।

বিষয় হিসাবে পর্যটনের বড় সুবিধা হলো ইতিবাচক ইমেজ। পর্যটন নিয়ে কাজ করি কথাটা শুনলেই লোকজন এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখান, বাহ্, খুব ভালো। অর্থাৎ আমি খুব ভালো একটি বিষয়কে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। কিন্তু সত্যিই কি তাই? পর্যটন উন্নয়ন কি শুধুই কল্যাণ বয়ে আনে? ক্ষতিকর দিক অবশ্যই আছে, বেশ ভালোমাত্রায়ই সেগুলো আমাদের ক্ষতি করে।

পর্যটন উন্নয়ন মানেই হলো বিপুল পরিমাণ মানুষের পদচারণা। আর সেই মানুষগুলো থাকে পার্টি মুডে। ফলে খাও দাও ফূর্তি করো স্টাইলে তারা চলে। যেহেতু খুবই স্বল্প সময়ের জন্য তারা সেখানে বেড়াতে আসে সেহেতু তাদের সেই স্থান, জনগোষ্ঠী সংস্কৃতির প্রতি কোনো দায়বোধ থাকে না। ফলে এই প্রবাহ বাড়তে থাকলে তা একসময় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা সংস্কৃতির ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে থাকে।

ব্যবসায় সম্ভাবনা বাড়ায় বড় বিনিয়োগকারীরা এসে নানা প্রলোভন বা কৌশলে সেখানে বড় প্রজেক্ট হাতে নেয়। স্থানীয় দুর্বল গোষ্ঠী সেখান থেকে উচ্ছেদ হয়। স্থানীয় তরুণ জনগোষ্ঠীর জীবনদর্শন অনেক সময় পর্যটকদের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাছাড়া জঙ্গলে এসি লাগানো, উচ্চৈঃস্বরে মাইক বাজানো, দৃষ্টিকটু পোশাক পরিধান বিষয়গুলো স্থানীয় প্রকৃতি প্রতিবেশের জন্য অনেক সময় হুমকি হয়।

যা হোক, অনেক নেতিবাচক কথা বলে মনে হয় আপনাদের হতাশ করে দিলাম। আসলে সবাই একই সুরে পর্যটন উন্নয়ন বিষয়ে কথা বলে। তাই আপনাদের দৃষ্টি একটু অন্যদিকে ফেরানোর লক্ষ্যে কথাগুলো বললাম। আশা করি ভেবে দেখবেন। আর ভ্রমণের সময় নিজের যেমন খেয়াল রাখেন, তেমনি দয়া করে চারপাশের প্রকৃতি পরিবেশের প্রতি মনোযোগী হবেন। কারণ তারা টেকসই না হলে আমাদের সন্তানদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তাদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে আমাদের পক্ষে তৃপ্ত হওয়া কি আদৌ সম্ভব?

 

মো. আব্দুল হামিদ: শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক বিশ্ব-প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পর্যটন বইয়ের লেখক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন