খাদ্য ও পুষ্টিনিশ্চয়তায় পাঁচ দশকের কৃষি গবেষণা

ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম

প্রায় ৩০০ বছর আগে ফরাসি দার্শনিক জঁ-জাক রুসো বলেছিলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং গৌরবমণ্ডিত শিল্প হচ্ছে কৃষি প্রায় ১০-১২ হাজার বছর আগে মানুষ যখন যাযাবর জীবনের অবসান ঘটিয়ে সামাজিক জীবনের সূচনা করল, তখনই তারা কৃষির গোড়াপত্তন করল। বিশ্বাস করা হয় যে মেয়েরাই প্রথম বন-জঙ্গল থেকে আহরিত খাদ্য উদ্ভিদের বীজ বসবাস অঞ্চলের আশপাশের মাটিতে পুঁতে কৃষি সূচনা করেছিল। অঙ্কুরিত চারাগাছের পরিচর্যা, পশু-পাখি পালন, এদের পর্যবেক্ষণ এবং ভালোভাবে বেড়ে ওঠা বা উন্নত উদ্ভিদ বা জীবকে পরবর্তী সময়ে চাষাবাদ বা লালন-পালনের মাধ্যমে ক্রমেই মানুষ কৃষি গবেষণার সূত্রপাত করে। নিয়ত কৃষি গবেষণার ফলে মানব ইতিহাসে কৃষিতে মোট পাঁচটি প্রযুক্তিগত বিপ্লব, যথা নিওলিথিক (শিকার পর্ব শেষে মানুষের সংঘবদ্ধ বসবাসকালে যা খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১০ হাজার বছর আগে সংঘটিত) কৃষি বিপ্লব, আরব কৃষি বিপ্লব (অষ্টম-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মুসলিম বিশ্বে নতুন ফসলের জাত প্রযুক্তি উদ্ভাবন), ব্রিটিশ কৃষি বিপ্লব (সপ্তদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে জেমস ওয়াট কর্তৃক বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের প্রভাবে কৃষি উৎপাদিকা শক্তির উল্লম্ফন), স্কটিশ কৃষি বিপ্লব (একই সময়) এবং সর্বশেষ বিপ্লবটি হলো সবুজ বিপ্লব। সবুজ বিপ্লবকে মানব ইতিহাসের প্রধান দুটি প্রযুক্তিগত বিপ্লবের একটি মনে করা হয়। আরেকটি হলো শিল্প বিপ্লব। সবুজ বিপ্লবের সূচনা হয় মেক্সিকোতে বিজ্ঞানী . নরমেন বোরলগের নেতৃত্বে বিংশ শতাব্দীর (১৯৪৩ সাল থেকে) মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু ১৭৯০ সালে ব্রিটেনে জেমস ওয়াট কর্তৃক ইঞ্জিন আবিষ্কার ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের সূচনা করে। শিল্প বিপ্লবের ছোঁয়ায় সবুজ বিপ্লবেও গতি সঞ্চার হয়। শিল্প বিপ্লব সবুজ বিপ্লব পৃথিবীতে মানুষকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে। সবুজ বিপ্লবের প্রযুক্তির সম্প্রসারণের ফলে কৃষি উৎপাদনে বিস্ময়কর উন্নতি সাধিত হয়। ফলে বিশেষত এশিয়ায় আফ্রিকার দেশগুলোতে খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়। সবুজ বিপ্লবের ফলে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ ম্যালথাসের মতবাদ জনসংখ্যা বাড়ে জ্যামিতিক হারে, কিন্তু খাদ্যোৎপাদন বাড়ে গাণিতিক হারে। ফলে খাদ্যাভাব অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে পৃথিবীর জনসংখ্যা আপনা আপনিই নিয়ন্ত্রিত হবে, তা ভুল প্রমাণিত হয়। তবে বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে শিল্প বিপ্লব সবুজ বিপ্লব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সবুজ বিপ্লবের জনক . নরমেন বোরলগকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সবুজ বিপ্লবের প্রযুক্তিগুলো হচ্ছে ফসলের উন্নত জাত, পানি সেচ, রাসায়নিক সার বালাইনাশক এবং উন্নত কৃষিতাত্ত্বিক উদ্যানতাত্ত্বিক পরিচর্যা।

যদিও সবুজ বিপ্লবের ফলে বিংশ শতাব্দীর ষাট থেকে সত্তরের দশকে ভারত, পাকিস্তানসহ এশিয়া, আফ্রিকা দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশেই খাদ্যোৎপাদনে বিপ্লব সাধিত হয়। কিন্তু স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের তেমন ঢেউ স্পর্শ করেনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দার্শনিক। স্বাধীনতার পর পরই তিনি কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের সূচনা করার জন্য প্রয়োজনীয় সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কৃষি শিক্ষা, গবেষণা প্রযুক্তি সম্প্রসারণকে অগ্রাধিকার দেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন আমাদের সীমিত ভূমি থেকে ক্রমবর্ধমান বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য পুষ্টির নিরাপত্তার জন্য জ্ঞাননির্ভর কৃষির বিকল্প নেই। তার উপলব্ধি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় প্রদত্ত ভাষণে স্পষ্ট ফুটে ওঠে।

তিনি বলেছিলেন, আমার দেশের এক একর জমিতে যে ফসল হয় জাপানের এক একর জমিতে তার তিন গুণ বেশি ফসল হয়। কিন্তু আমার জমি দুনিয়ার সেরা জমি। আমি কেন এই জমিতে ডবল ফসল করতে পারব না? আমি যদি দ্বিগুণ করতে পারি তাহলে আমাকে খাদ্য কিনতে হবে না। কৃষিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের ৫০১ কোটি টাকার মধ্যে ১০৩ কোটি টাকা (মোট বাজেটের ২০ দমমিক ৫৬ শতাংশ) কৃষি উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেন। জাতির পিতা জাতীয় সংবিধানে কৃষক-শ্রমিকের মুক্তি, গ্রামীণ উন্নয়ন কৃষি বিপ্লব, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ উন্নয়নের নিশ্চয়তা দেন। তিনি কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। জ্ঞাননির্ভর কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), তুলা উন্নয়ন বোর্ড, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড অন্যান্য প্রয়োজনীয় গবেষণা অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মানসে বঙ্গবন্ধু চাকরিতে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদা দেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, আটা, ময়দা আর ভুট্টাকে বোঝায় না। বরং মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি এসবকে বোঝায়। সুতরাং কৃষির উন্নতি করতে হলে এসব খাদ্যশস্যের উৎপাদনে উন্নতি করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশে সবুজ বিপ্লবের ভিত্তি রচনা করেছিল। গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাতির জনকের স্বপ্নের কৃষি বিপ্লব সাধন করেছে। সীমিত ক্ষয়িষ্ণু কৃষিভূমি থেকে ১৬. কোটি মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা অর্জন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গৌরবোজ্জ্বল অর্জন। ফসল উৎপাদন, মত্স্য চাষ, পশু-পাখি পালনসহ কৃষির সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তার দ্বারপ্রান্তে। কৃষি উৎপাদনের উল্লম্ফন কৃষিভিত্তিক নানা শিল্পের বিকাশ ঘটাচ্ছে। সকার কর্তৃক কৃষি গবেষণাকে অগ্রাধিকার দেয়ার ফলে গত এক দশকে দেশে খাদ্যশস্য পুষ্টি উপাদান যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ফল শাকসবজির উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সমস্যাভিত্তিক কৃষি গবেষণা প্রযুক্তি উন্নয়নে এসেছে নতুন গতি। উল্লেখ্য, ২০০৯-২০২০ সাল পর্যন্ত শুধু ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ সিস্টেমের (নার্স) আওতাভুক্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ফসলের ৬৩১টি উচ্চফলনশীল জাত এবং ৯৪০টি উন্নত কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। ফলে ২০০৮-০৯ সালে যেখানে মোট খাদ্যশস্যের (চাল, গম, ভুট্টা) উৎপাদন ছিল ৩২৮.৯৫ লাখ টন, ২০১৯-২০ সালে তা বেড়ে ৪৩২.১৫ লাখ টনে উন্নীত হয়। নিজস্ব প্রযুক্তির প্রয়োগে খাদ্যশস্য, ফল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে রোল মডেল। গত ফেব্রুয়ারি ২০২১ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল ১০০ প্রযুক্তি এটলাস শিরোনামে গত পাঁচ দশকে নিজস্ব গবেষণায় উদ্ভাবিত শ্রেষ্ঠ ১০০ প্রযুক্তির বিবরণ পুস্তকাকারে প্রকাশ করে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির এক মাইলফলক অর্জন হিসেবে বিবেচিত ১০০ কৃষিপ্রযুক্তি এটলাসের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিগত পাঁচ দশকে আমাদের কৃষি খাতে যে আমূল পরিবর্তন উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা কতটুকু টেকসই, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কৃষিতে বর্তমান ভবিষ্যতে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষিশিক্ষা গবেষণায় কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন, তা আলোচনার দাবি রাখে। জাতীয় কৃষিনীতি ২০১৮ ভবিষ্যতে খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তা এবং কৃষিকে লাভজনক শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রণীত হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০-এর প্রধান দুটি অভীষ্ট হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী। কৃষি উন্নয়নের সঙ্গে দুটি প্রধান অভীষ্টসহ আরো কয়েকটি অভীষ্ট সম্পর্কিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমানে প্রচলিত কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষিকে লাভজনক করে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তা অর্জন কতটা সহায়ক হবে। দেশে প্রতি বছর শতকরা এক ভাগ কৃষিভূমি নানাভাবে অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। কৃষিতে বর্তমান উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখার আরো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতগুলো। কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতগুলো হচ্ছে লবণাক্ততা, খরা, বন্যা, উচ্চতাপমাত্রা, হঠাৎ গরম বাতাসের প্রবাহ, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি। এসব অভিঘাত কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, এটি এখন সর্বজনস্বীকৃত। বর্তমান কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় আরো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উচ্চ উপকরণ ব্যয় উপকরণ ব্যবহারের ক্রমহ্রাসমান দক্ষতা। রাসায়নিক সার বালাইনাশক ব্যবহারে ফসল উদ্ভিদের ফলন বৃদ্ধির হার এবং রোগ-পোকা দমনে কার্যকারিতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। উচ্চ উপকরণ ব্যয়ের ফলে অনেক সময় কৃষি লাভজনক হচ্ছে না। এছাড়া ফসলের নিবিড়তা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এবং উচ্চফসলের আশায় অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিক সার বালাইনাশকের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে মৃত্তিকার স্বাস্থ্য পরিবেশদূষণ সংকটাপন্ন আবস্থায় আছে। বর্তমানে ব্যবহূত রাসায়নিক সারের শতকরা ৫০ ভাগের বেশি উদ্ভিদ কর্তৃক গৃহীত না হয়ে পরিবেশ দ্বারা শোষিত হচ্ছে। বালাইনাশকের শতকরা ৯০ ভাগের বেশি নন-টার্গেটেড জীব পরিবেশকে আক্রান্ত করছে। বর্তমানে ব্যবহূত পানি সেচের বিরাট অংশ ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এক হিসাবে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি কেজি চাল উৎপাদনের (বিশেষ করে বোরো ধান চাষে) জন্য গড়ে তিন হাজার লিটারের বেশি পানি খরচ হয়। শুষ্ক মৌসুমে উচ্চচাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলনের ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানি নেমে গিয়ে মরুকরণ শুরু হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ পানি উত্তোলনের ফলে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার ভূমি আর্সেনিক দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্সেনিক মানবস্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তন, উজানে বাঁধ দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানিপ্রবাহে বাধাদান এবং সেচের পানি সরবরাহের ফলে দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদী শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহ হারায়। ফলে স্থলভাগে সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি ক্রমেই প্রবেশ করায় দিন দিন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিভূমিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান কৃষিতে আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ফসল প্রজাতির উদ্ভিদে বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য হ্রাস, যা প্রজননের কাঙ্ক্ষিত জলবায়ুর ঘাত সহনশীল জাত উদ্ভাবনের সম্ভাবনাকে ক্রমেই সংকুচিত করেছে।

উল্লিখিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য কৃষিশিক্ষা গবেষণায় অগ্রসরমান বিজ্ঞানচর্চা প্রয়োজন। কৃষি এখন জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে অগ্রসরমাণ শাখা। কৃষি জীবপ্রযুক্তি জিন প্রকৌশল জিন এডিটিং জীববিজ্ঞানের সবচেয়ে অগ্রগামী। বিজ্ঞানীরা এখন প্রতিটি জীবের ডিএনএ আরএনএ অণুতে বিদ্যমান এডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন, থায়ামিন ইউরাসিল অণুর অণুক্রম সিকোয়েন্সার মেশিনের মাধ্যমে জেনে এবং কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী জিনোম অণুক্রম নির্ণয় করতে পারেন। বিশাল ডিএনএ বা আরএনএ অণুর সিকোয়েন্সের অতি ক্ষুদ্র অংশ, যা জীবের কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী তাকে জিন বলা হয়। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জিন প্রকৌশল বা জিন এডিটিংয়ের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো কোনো উদ্ভিদে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য সংযোজন কিংবা ক্ষতিকর বৈশিষ্ট্য অপসারণ করে উচ্চফলন জলবায়ুর ঘাত সহনশীল উদ্ভিদ জাত তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে বেগুনের কাণ্ড ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধী বিটি বেগুনের চারটি জাত কৃষকের মাঠে অবমুক্ত করেছে। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের বেগুনের ডিএনএতে মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েনসিসের একটি জিন সংযোজন করেছেন। ফলে বেগুনে ফল কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা আক্রমণ করতে পারে না। এতে কোনো কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় উৎপাদন বাড়ে, উৎপাদন খরচ কমে। ফলে পরিবেশ মানবস্বাস্থ্যে কীটনাশকের কোনো কুপ্রভাব পড়ে না। সারা পৃথিবীতে এখন বিটি তুলা, বিটি ভুট্টা, ভিটামিন সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইসসহ নানা রকম বায়ো ইঞ্জিনিয়ার্ড ফসল চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশে ব্রি উদ্ভাবিত ভিটামিন সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইস এখন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক অবমুক্তকরণের অপেক্ষায় রয়েছে। দেশের নানা ফসলে জীবপ্রযুক্তি জিন প্রকৌশল গবেষণা চলছে।

কৃষিতে জীবপ্রযুক্তি, জিন প্রকৌশল জিন এডিটিংয়ের মাধ্যমে জলবায়ুর ঘাত সহনশীল উচ্চফলনশীল ক্লাইমেট স্মার্ট ফসলের জাত তৈরির জন্য পরিকল্পিত গবেষণায় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রয়োজন। প্রধান প্রধান ফসলের কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিন আবিষ্কারের জন্য চাই দেশের জিন ব্যাংকে রক্ষিত ফসল উদ্ভিদের জিনোম অণুক্রম বায়োইনফরমেটিকস বিশ্লেষণ। বাংলাদেশ এরই মধ্যে পাট, ইলিশ, পাটের রোগ সৃষ্টিকারী ছত্রাক, ছাগল, মহিষ, গমের ব্লাস্ট রোগ সৃষ্টিকারী ছত্রাকসহ নানা রকম ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসের জিনোম অণুক্রম নির্ণয় বায়োইনফরমেটিকস বিশ্লেষণ করে আধুনিক জীবপ্রযুক্তির সূচনা করেছে। পৃথিবীতে প্রথম মাঠ পর্যায়ে সর্বাধুনিক জিনোমিকস প্রযুক্তির ব্যবহার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সমঝোতা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিজিইর বিজ্ঞানীরা ২০১৬ সালে দেশের ১৫ হাজার হেক্টর গমের ক্ষতিগ্রস্ত জমিকে আক্রমণকারী মারাত্মক ব্লাস্ট রোগের ছত্রাক জীবাণুর উত্পত্তিস্থল নির্ণয় করেন। ফলে কৃষকদের সঠিক পরামর্শ দেয়া সম্ভব হয় এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ব্লাস্ট রোগ আরো নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও ক্ষতির পরিমাণ খুব কম হয়। সম্প্রতি একই বিজ্ঞানী দল জিন এডিটিং জিনোমিকস প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে কম খরচে গমে ব্লাস্ট রোগ শনাক্তের সহজ জীবপ্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। নতুন প্রযুক্তি দেশের কৃষকের মাঠে, গবেষণাগারে এবং বিশ্বব্যাপী গম আমদানি-রফতানিকালে কোয়ারেন্টিনে ব্যবহারের জন্য বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে ওএমসি হেলথকেয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য ন্যানো পেস্টিসাইড এবং গমের বীজ থেকে আহরিত নভেল ব্যাসিলাস প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। বশেমুরকৃবির আইবিজিইর বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে ধানে সারসাশ্রয়ী জৈবসোনা খ্যাত প্রোবায়োটিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে মাঠ পর্যায়ে সফলতা পেয়েছেন। এসব আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তিকে ব্যাপকভাবে মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে এবং বিশ্ববাজারে রফতানি করতে হলে সরকারি প্রণোদনায় বিশ্ববিদ্যালয়-শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পার্টনারশিপ প্রয়োজন।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন বিজ্ঞানমনষ্ক এবং প্রযুক্তিবান্ধব দূরদর্শী নেতা। বর্তমান কৃষিমন্ত্রী একজন বিশ্বখ্যাত কৃষি বিজ্ঞানী এবং কৃষিতে নতুন একটি প্রযুক্তিগত বিপ্লব আনয়নে অত্যন্ত নিবেদিত। আমাদের রয়েছে অনেক বিশ্বমানের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো ২০৩০ অর্জন এবং ২০৪১ সালে একটি অর্থনীতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কৃষিশিক্ষা গবেষণায় বেশকিছু পরিবর্তন আনয়ন প্রয়োজন বলে মনে করি।

আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে জীবপ্রযুক্তি কম্পিউটার সায়েন্সের (অ্যালগরিদম) মিথস্ক্রিয়ায় নতুন নতুন স্মার্ট প্রযুক্তি আধুনিক রোবট আকারে মানুষের অনেক কাজই অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করে দেবে। কৃষি ক্ষেত্রে জিনোমিকস, পোস্ট-জিনোমিকস, ফিনোমিকস, বায়োইনফরমেটিকস, ন্যানোটেকনোলজি, জিন এডিটিং, বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়ো ফর্টিফিকেশন, বায়ো সেন্সর, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ইত্যাদির ব্যাপক প্রয়োগে নতুন নতুন ক্লাইম-স্মার্ট কৃষিপ্রযুক্তির উদ্ভাবন হবে। এসব প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষিতে বর্তমানে ব্যবহূত উপকরণ ব্যয়সাশ্রয়ী হবে এবং কৃষি হবে টেকসই পরিবেশসম্মত। কৃষিতে ব্যাপক যান্ত্রিকীকরণ এবং প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বিকাশলাভ করবে। শুধু স্থলভাগের কৃষিই নয়, সামুদ্রিক প্রতিবেশে খাদ্য পুষ্টি সরবরাহকারী উদ্ভিদ প্রাণীর চাষও সম্প্রসারিত হবে। বাংলাদেশে স্থলভাগের চেয়ে বড় আয়তনের বঙ্গোপসাগরের জলভাগ। সুতরাং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার আগামী দিনের খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং লাভজনক কৃষির উদ্বৃত্ত বিদেশে রফতানি করে ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে কৃষি শিক্ষা, গবেষণা জাতীয় পরিকল্পনায় নিম্নরূপ পরিবর্তন আনয়ন করা যেতে পারে।

. জাতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় কৃষিতে একটি নতুন বিপ্লব আনয়ন। উল্লিখিত অগ্রসরমাণ বিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যে কৃষি শিক্ষণ গবেষণায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনয়নের জন্যও গুরুত্বারোপ। . জাতীয় কৃষিনীতি, জীবপ্রযুক্তি নীতি, মত্স্য পশু-পাখি পালন নীতি অন্যান্য সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় নীতিকে হালনাগাদ করা। কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে আধুনিক কৌশল ব্যবহার করা। . কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠক্রমে অগ্রসরমাণ আন্তঃবিভাগীয় বিজ্ঞান প্রযুক্তিসম্পর্কিত কোর্স অন্তর্ভুক্তকরণ এবং জিনোমকিস, ফিনোমিকস, বায়োইনফরমেটিকস, এগ্রোপ্রসেসিং ফুড সেফটি, ন্যানোটেকনোলজি, আইওটি, সামুদ্রিক কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনে নতুন বিভাগ খোলা গবেষণায় অগ্রাধিকার প্রদান। জ্ঞান-সৃজন উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরিতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। . কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সভুক্ত কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনামাফিক জাতীয় অভীষ্টানুযায়ী যৌথভাবে গবেষণা করার নতুন সিস্টেম চালু করা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল উল্লিখিত গবেষণার সমন্বয়সাধন করবে। প্রয়োজনে বিএআরসির সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটির পুনর্গঠন করা যেতে পারে। উল্লিখিত গবেষণা অভীষ্ট অর্জনে গৃহীত প্রকল্পগুলোতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞানীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। প্রতিটি গবেষণা প্রকল্পে পর্যাপ্তসংখ্যক পিএইচডি পোস্টডক্টরাল ফেলোকে সংযুক্ত রাখতে হবে। প্রকল্প শেষে অভিজ্ঞ পিএইচডি পোস্টডক্টরদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ব্যবস্থা করলে এসব গবেষণা এবং গবেষণার ফলাফল টেকসই হবে। . পরিকল্পনামাফিক অগ্রসরমাণ বিজ্ঞান প্রযুক্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠান কৃষি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ইত্যাদির জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। . কৃষিতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং বর্তমান উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করতে হবে। . গত কয়েক দশক আমরা মূলত উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেছি। কৃষি উৎপাদনের প্রক্রিয়াকরণ, কৃষক কর্তৃক ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির জন্য বাজার ব্যবস্থাপনা, নিরাপদ উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন কৃষিপণ্য ইত্যাদি বিষয়েও পরিকল্পিত সমন্বিত গবেষণা জরুরি। . কৃষিতে বীমা ব্যবস্থা এবং কম সুদে সহজে ঋণপ্রাপ্তির ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি প্লাটফর্ম টেকনোলজি ব্যবহার করে কৃষি গবেষণায় দক্ষতা, মান উৎপাদিকায় গতি সঞ্চার করতে হবে। প্লাটফর্ম টেকনোলজি হচ্ছে অনেকগুলো অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নতুন পণ্য ব্যবহারকারী পর্যন্ত পৌঁছানো।

কৃষি মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (জিআইএফএস) সঙ্গে প্লাটফর্ম টেকনোলজি ব্যবহারে যৌথ গবেষণার লক্ষ্যে একটা দূরদর্শী সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশ কানাডার বিজ্ঞানীরা চারটি ক্ষেত্রে (থিম) কাজ করবেন।

ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে . উদ্ভিদ প্রজননে জিনোমিকস ফিনোমিকসের প্রয়োগ, . মৃত্তিকার স্বাস্থ্য মান, . মৃত্তিকা পানির অবস্থা প্রয়োগ এবং . ফসল সংগ্রহ-উত্তর প্রক্রিয়া খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ। এক্ষেত্রগুলোকে সমন্বিত করে অগ্রসরমাণ কৃষিপ্রযুক্তি উন্নয়ন সম্প্রসারণের জন্য একটি অ্যাডভান্সড টেকনোলজি সেন্টার স্থাপন, বশেমুরকৃবি, কানাডার জিআইএফএস সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো চেয়ার স্থাপন এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে এসব কাজ সমন্বয়ের জন্য একটি আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করা হবে। আশা করা যায়, বাংলাদেশ কানাডার বিজ্ঞানী দল এবং কৃষি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে বিশ্বমানের অগ্রসরমাণ কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন হবে, যা জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলা করে দেশে লাভজনক কৃষির প্রচলনে গতি সঞ্চার করবে। দেশের খাদ্য পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করে নানা রকম কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে আমাদের রফতানিতে কৃষি অধিকতর ভূমিকা রাখবে। উল্লিখিত প্লাটফর্ম প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাঁঠাল, ঢাকাই মসলিন উৎপাদনকারী ফুটি কার্পাস, ধান অন্যান্য স্থানীয় উদ্ভিদ, প্রাণী, অণুজীব এবং বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্যের জীবন-রহস্য উত্ঘাটন করে দেশে এক নতুন বায়োইকোনমির সূচনা হবে। একটি অর্থনৈতিকভাবে সোনার বাংলা রূপায়ণে গৌরবময় ঐতিহ্যের জ্ঞাননির্ভর কৃষি এক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। সেজন্য চাই পরিকল্পিত সুসমন্বিত সময়োচিত পদক্ষেপ দক্ষ নেতৃত্ব। কৃষিই আমাদের কৃষ্টি। কৃষির বিকল্প কেবল কৃষিই।

 

. মো. তোফাজ্জল ইসলাম: ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন