কভিড টিকা উৎপাদন

সিনোফার্ম-ইনসেপ্টার সঙ্গে সরকারের চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক

চীনের টিকা দেশে উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চীনের সিনোফার্ম, স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ইনসেপ্টার চেয়ারম্যান আবদুল মুক্তাদির। গতকাল রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) মিলনায়তনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।

চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। কভিড-১৯ মোকাবেলায় চীন সবসময়ই বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর মতো হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ভ্যাকসিন চুক্তির মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিনের ঘাটতি মেটাতে চীন আরেকবার তার বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমাণ করেছে। চুক্তি দেশের জন্য এক বিরাট মাইলফলক হয়ে থাকবে। দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে চুক্তি বিরাট ভূমিকা পালন করবে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে আর কোনো ভ্যাকসিন ঘাটতি থাকবে না। তবে ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি শুরুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশের কাছ থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণকাজ চলমান রাখবে। চুক্তির ফলে বাংলাদেশ খুব তাড়াতাড়ি দেশেই ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

ভ্যাকসিনের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানান, দেশে পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রায় তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন চলে এসেছে, যা থেকে প্রথম ধাপে দেড় কোটি ডোজ এবং দ্বিতীয় ধাপে ৫৪ লাখ ডোজ মানুষ গ্রহণ করেছে। অবশিষ্ট এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন মুহূর্তে দেশে মজুদ আছে। ২২ আগস্টের পর চীন থেকে সিনোফার্মের আরো ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। চীনের পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকেও আরো ভ্যাকসিন নেয়া হবে। সুতরাং ভ্যাকসিন নিয়ে আগামীতে আর কোনো ঘাটতিতে থাকবে না বাংলাদেশ।

দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার অর্থ হচ্ছে ১৩ কোটি মানুষের জন্য মোট ২৬ কোটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত রাখতে হবে। বিশালসংখ্যক ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণ করতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আজকের চুক্তি অনেক বড় ভূমিকা রাখবে বলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন বলেন, দেশে আর টিকার সমস্যা হবে না। দেশেই টিকা উৎপাদন হবে। সরকার বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে টিকা কেনে। প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে সবাই বিনা পয়সায় টিকা পাচ্ছে। করোনার টিকা হলো সংক্রমণ রোধের একটি পদ্ধতি। সবচেয়ে বড় পদ্ধতি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। তিনি দেশের মানুষকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন