ইউরোপীয় টেলিভিশন স্বত্ব

অলিম্পিকের সম্প্রচারে বেড়েছে ডিসকভারির গ্রাহক

বণিক বার্তা ডেস্ক

টোকিও অলিম্পিক ২০২০-এর ইউরোপীয় টেলিভিশন স্বত্ব কিনে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পে-চ্যানেল ডিসকভারি। আর এর মাধ্যমে বেশ লাভের দেখা পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। টোকিও অলিম্পিক প্রচারের পর থেকে সংস্থাটির সাবস্ক্রিপশন সার্ভিস গ্রহণ করা ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাহক বাড়ায় ডিসকভারির প্রান্তিক আয় ২১ শতাংশ বেড়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ ৩০০ কোটি ডলারের বেশি।

ডিসকভারির প্রধান নির্বাহী ডেভিড জাসলাভ চুক্তিটিকে দারুণ সাফল্যের বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে টেলিভিশনের দর্শক সংখ্যা বেড়েছে এবং স্ট্রিমিং প্লাটফর্মে গ্রাহকের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদে আমাদের প্রতিশ্রুতি বিনিয়োগের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।

এখন পর্যন্ত ইউরোপের সাড়ে ২৭ কোটি দর্শক এবারের অলিম্পিক গেমস দেখেছেন বলে জানিয়েছে ডিসকভারি নেটওয়ার্ক। এর মধ্যে ১০ কোটি দর্শক এসেছেন ইউরোস্পোর্টস স্ট্রিমিং সার্ভিস ডিসকভারি প্লাসের মাধ্যমে। বাকি ১৭ কোটি দর্শক ইউরোপজুড়ে অংশীদারমুক্ত সম্প্রচারের আওতায় অলিম্পিক গেমস টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছেন।

সব মিলিয়ে ডিসকভারি বলছে, ২০১৮ সালের পিয়ংচ্যাং শীতকালীন গেমসের চেয়ে এবার দর্শক সংখ্যা বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। ইউরোপের ক্রীড়াভিত্তিক পে চ্যানেল ইউরোস্পোর্টসের স্বত্বাধিকারী ডিসকভারি ২০১৮ থেকে ২০২৪ সালের সব অলিম্পিক গেমসের ইউরোপের টিভি স্বত্ব কিনে রেখেছে। ফলে ইউরোপের অন্তত ৫০টি দেশে অলিম্পিক গেমস দেখতে হলে দর্শকদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই দেখতে হবে। ডিসকভারি বলছে, অলিম্পিক সম্প্রচার চুক্তির মাধ্যমে তারা প্রচুর পরিমাণ নতুন সাবস্ক্রাইবার বা গ্রাহক পেয়েছেন। এছাড়া এর মাধ্যমে চলতি ত্রৈমাসিকে তাদের বিক্রি বেড়েছে ৮৮ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে কিছু সরাসরি অনুষ্ঠানের স্বত্ব যুক্তরাজ্যে বিবিসির কাছে বিক্রি করেছে। পাশাপাশি ইউরোপজুড়ে বিভিন্ন স্থানীয় সম্প্রচারকদের কাছেও বিক্রি করা হয়েছে। তবে বিবিসি টিভি চ্যানেল সর্বোচ্চ দুটি অলিম্পিক গেমস সরাসরি সম্প্রচার করতে পারে। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকে তারা একসঙ্গে অনেক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছিল। ফলে বিবিসির মাধ্যমে খুব কম সংখ্যক মানুষই এটি দেখতে পাচ্ছেন।

ফলে বিষয়টির সমালোচনাও শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, ডিসকভারির জন্য নতুন সম্প্রচার নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, যা এত দিন ছিল না। ফলে বিবিসির সাবেক চেয়ারম্যানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। লর্ড গ্রেড স্যার মিকাইল লায়নস ডেইলি মেইলকে বলেন, টোকিও অলিম্পিকের ব্যাপক সম্প্রচারের অভাব খুবই হতাশাজনক। তারা রাজনীতিবিদদের প্রতি এমন নিয়ম করতে অনুরোধ জানান, যার মাধ্যমে আরো বেশি মানুষ বিনা মূল্যে অলিম্পিকের বিভিন্ন ইভেন্ট টেলিভিশনে দেখতে পাবে।

২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিবিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা লর্ড গ্রেড বলেন, আমার মনে হয় পার্লামেন্টের বিষয়টির দিকে নজর দেয়া উচিত এবং কোনো একটি উপায় খুঁজে বের করা উচিত। আমি বলছি না যে, পার্লামেন্ট বাজারে হস্তক্ষেপ করুক, কিন্তু বিনা মূল্যে দেখার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া উচিত। অলিম্পিক গেমস তো সবার। কিন্তু বিবিসির মাধ্যমে এর পরিপূর্ণ সম্প্রচার হচ্ছে না এটা আসলে ভীষণ হতাশার।

একই কথা বলেন বিবিসির সাবেক চেয়ারম্যান লায়নস। তিনি বলেন, আগে বিবিসির মাধ্যমে যেমন সবাই অলিম্পিক গেমস দেখার সুযোগ পেত সেটি ফিরিয়ে আনা দরকার। এটি সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক আসর। এটি কেবল খেলা বা ইভেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর ব্যাপ্তি আরো বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন