ঋণখেলাপি ও দুর্বলভাবে পরিচালিত ব্যাংকগুলোকে কভিড সম্পর্কিত সহায়তা প্যাকেজের আওতায় আসার সুযোগ দেয়া উচিত হবে না। একই সঙ্গে ব্যাসেল-থ্রি বা ব্যাংকিং কোম্পানি অ্যাক্টের আওতায় না থাকা ব্যাংকগুলোকে এ সুযোগ দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। গতকাল মুদ্রানীতি বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
‘সাম্প্রতিক মুদ্রানীতি কী অর্থনীতির বর্তমান চাহিদা মেটাতে পারবে? সিপিডির তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক ব্রিফিংটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ব্রিফিংয়ে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি বলেন, স্বচ্ছ ও বস্তুনিষ্ঠ মানদণ্ড তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাকে চিহ্নিত করা উচিত। সহায়তা প্যাকেজ বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে এবং মাসিক ভিত্তিতে বিতরণ পর্যায়ের আরো বিভাজিত তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন রয়েছে। এসব সহায়তা প্যাকেজ দ্রুত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক ও স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
মুদ্রানীতি বিষয়ে সিপিডির ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিকে এ অতিমারীর বিশৃঙ্খল সময়ের বিবেচনায় একটি সতর্কতামূলক নীতি বলেই মনে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অতিরিক্ত তারল্য কমাতে কোনো সক্রিয় পদক্ষেপ না নিলেও প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না বলে আশ্বস্ত করেছে। সামগ্রিকভাবে এ মুদ্রানীতি সম্প্রসারণমূলক এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নীতিকে প্রয়োজনে পুনর্বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে। বর্তমানে দ্রুত অবনতিশীল কভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পূরণ নাও হতে পারে।
এছাড়া কভিড অতিমারীর বাস্তব চিত্র বিবেচনা করে তারপর কভিড-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের জন্য নীতিনির্ধারকদের সুনির্দিষ্ট এবং লক্ষ্যভিত্তিক নীতি প্রণয়ন করা উচিত। কভিড অতিমারীর অভিঘাতের ব্যাপ্তি, সহায়তার পরিমাণ এবং কাদের সহায়তা দেয়া উচিত তা নিয়ে একটি বিস্তারিত মূল্যায়নের প্রয়োজন রয়েছে। সরকারি সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশব্যাপী প্রচার-প্রচারণার চালানো দরকার; যেন এসব সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক ও যোগ্য মানুষ এই প্যাকেজগুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারে। তারল্য সহায়তা ছোট ঋণগ্রহীতা ও নতুন ঋণগ্রহীতার এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য অনুপযুক্ত। এজন্য সরকার কর্তৃক সরাসরি নগদসহায়তা প্রদান করা উচিত, যাতে এ গোষ্ঠীগুলো কভিড অতিমারীর ধাক্কা সামলে উঠতে পারে।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান; গবেষণা পরিচালক, ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান মিডিয়া ব্রিফিংয়ে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
