বিভিন্ন কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র কর্তৃক নজরদারিতে ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও নির্মিত স্পাইওয়্যার পেগাসাসের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে। এ ধরনের স্পাইওয়্যার ব্যবহারে খরচ কেমন, সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে সামগ্রিক হিসেবে পেগাসাস সস্তা কোনো সফটওয়্যার নয়। ২০১৬ সালের মূল্যতালিকা অনুযায়ী এক প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ১০টি ডিভাইসে নজরদারি করার জন্য এনএসও তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার গ্রহণ করেছে। সেই সঙ্গে ইনস্টলেশন ফি হিসেবে আরো ৫ লাখ ডলার গ্রহণ করেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গতানুগতিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের মতোই এনএসও ডিভাইস বা লক্ষ্যবস্তুর সংখ্যার ভিত্তিতে নজরদারি টুলসের মূল্য বৃদ্ধি করে থাকে। প্রাথমিকভাবে ইনস্টলেশন খরচ হিসেবে ৫ লাখ ডলার গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও ১০টি আইফোন ও ১০টি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে নজরদারি করার জন্য এনএসও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার, পাঁচটি ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসের জন্য ৫ লাখ ডলার এবং পাঁচটি সিম্বিয়ান ডিভাইসের জন্য ৩ লাখ ডলার আদায় করে থাকে বলে জানা গেছে। অতিরিক্ত অর্থ দেয়ার মাধ্যমে যে কেউ লক্ষ্যবস্তুর সংখ্যা বাড়াতে পারতেন।
এনএসও গ্রুপের বিজনেস প্রপোজালের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, অতিরিক্ত আরো ১০০টি ডিভাইসে নজরদারির জন্য ৮ লাখ ডলার, ৫০টির জন্য ৫ লাখ, ২০টির জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার এবং ১০টির জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিতে হবে। এর পাশাপাশি স্পাইওয়্যারের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি বছর মোট মূল্যের ১৭ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে এ মূল্যতালিকা পেগাসাসের পুরনো ভার্সনের জন্য। নতুন ভার্সনে কোনো ফোন নজরদারি করার জন্য জিরো ক্লিক সুবিধা রয়েছে। আর এতে আরো অধিক খরচ হতে পারে।
পেগাসাসের ইউএসপি কোনো ক্লিক ছাড়াই টার্গেটেড ব্যবহারকারীর ফোনে আক্রমণ করতে সক্ষম। দ্য অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) জানায়, পেগাসাসের আগের ভার্সনগুলোতে লক্ষ্যবস্তুর সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি ছিল।
পেগাসাসের অপারেটররা ক্ষতিকর লিংকসহ তালিকাভুক্তদের টেক্সট মেসেজ পাঠাতেন। যদি কেউ এ লিংকে ক্লিক করত, তাহলে সেটা আরেকটি ফেইক ওয়েব পেজে একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করার কথা জানাত এবং এর মাধ্যমে ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দিত।
