কভিড-পরবর্তী অফিসে ফেরা

স্বাস্থ্যসংক্রান্ত উদ্বেগে ৮৯% কর্মী

বণিক বার্তা ডেস্ক

বাড়িতে বসে কাজ করা ৩০ শতাংশ কর্মী পদোন্নতি নিয়ে শঙ্কিত ছবি: এপি

যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকাদানের হার বাড়তে শুরু করেছে। ফলে সংক্রমণ ঠেকাতে যেসব কর্মক্ষেত্রের কর্মীরা বাড়িতে বসে কাজ করছিলেন, তাদের ফিরিয়ে আনতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু নতুন একটি গবেষণা বলছে, অফিসে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত কর্মীরা। গত -১২ জুলাই পর্যন্ত চালানো এক জরিপে উঠে এসেছে তথ্য।

ইয়াহু ফাইন্যান্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রায় দেড় বছর ধরে বাড়িতে বসে নিরাপদে কাজ করা কর্মীরা অফিসে ফেরার বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।

জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থা গ্লাসডোরসের করপোরেট কমিউনিকেশন ম্যানেজার অ্যালিসন সুলিভান বলেন, আমাদের জরিপ বলছে এখনো মানুষের মনে কভিডসংক্রান্ত নানা প্রশ্ন রয়েছে। তারা এখনো উত্তেজনা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

মোট হাজার ৪২ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর জরিপ চালানো হয়, যার মধ্যে ২৭৮ জন পুরো মহামারীকালে বাড়িতে বসে পূর্ণকালীন অফিস করেছেন। এদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ কর্মী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের মধ্যে অফিসে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বিশ্বজুড়ে যেভাবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে অফিসে ফিরে যাওয়াটা কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে তারা শঙ্কিত। ৩৫ শতাংশ আবার কর্মস্থলে গিয়ে সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভয়ে আছেন।

গত সপ্তাহেই দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) মাস্ক পরার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, টিকা গ্রহণ করার পরও উচ্চ বা মাঝারি মানের সংক্রমণ ঘটতে পারে এমন আবদ্ধ স্থানে মাস্ক পরতে হবে। ফলে কর্মীরা অফিসে ফিরলে সেখানেও তাদের মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকবে, যা বিষয়টিকে আরো জটিল করে তুলবে।

জরিপে অবশ্য বাড়িতে বসে কাজ করার বিষয়ে বেশ দ্বিধাবিভক্ত মত উঠে এসেছে। অফিস থেকে দূরে বসে কাজ করার নানা অসুবিধার কথাও উল্লেখ করেছেন কর্মীরা। বাড়িতে বসে কাজ করেছেন এমন ৩০ শতাংশ কর্মী মনে করেন, ব্যবস্থা চলতে থাকলে তাদের পদোন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। ২৭ শতাংশ আবার তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির কথা বলছেন। এদের মধ্যে ২৬ শতাংশ মনে করছেন, দূরে বসে কাজ করায় প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতির সঙ্গে তারা একাত্ম হতে পারছেন না। এক-তৃতীয়াংশ বলছেন, বাড়িতে বসে কাজ করার ফলে তাদের চাকরি ছেড়ে দেয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।

যেহেতু একটা দীর্ঘ সময় পর কর্মীরা কাজে ফিরবেন, তাই তাদের স্বাভাবিক করতে বা আশ্বস্ত করতে নিয়োগকর্তাদের কিছু ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছেন গ্লাসডোরের কর্মকর্তা অ্যালিসন সুলিভান। তিনি বলেন, নিয়োগকর্তাদের সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে। পাশাপাশি কর্মীদের মনের অবস্থাও বুঝে চলতে হবে। কারণ কর্মীরা তার প্রতিষ্ঠানের জন্যই কাজ করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে সে সম্পর্কে নিয়োগকর্তাদের স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কেবল কর্মীদের মুখগুলো অফিসে দেখতে চাই কারণ দেখিয়ে তাদের ফিরিয়ে আনা যাবে না। এটা কোনো কারণ হতে পারে না। এজন্য নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনতে হলে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে, তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, তারা যেন অফিসে নিরাপদ সুরক্ষিত বোধ করেন সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন