বিশ্লেষণ

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন যাত্রায় সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে

ড. সৈয়দ আখতার মাহমুদ

চলতি বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে। অতীতের দুর্ভিক্ষ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ ভূখণ্ডটি আজ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে এগিয়ে চলছে। নিবন্ধে বাংলাদেশের অভাবনীয় রূপান্তরের পেছনে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরার চেষ্টা করব। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে দেশে-বিদেশে আজকাল প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে। সেসব লেখায় ঘুরেফিরে আমরা একই ধরনের বক্তব্য দেখছি, যেমন বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি, তৈরি পোশাক খাতের সাফল্য, অভিবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স প্রেরণ, ক্ষুদ্রঋণের বিস্তার এবং এনজিগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। 

সেখানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা অনেকটা আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। আবার কিছু লেখায় সরকারকে রীতিমতো খলচরিত্র হিসেবে তুলে ধরা হয়। বলা হয়, দুর্বল, অদক্ষ সরকার সত্ত্বেও বাংলাদেশের উন্নতি ঘটেছে। বেশির ভাগ বর্ণনায় সরকার কতটা দুর্বল, সেকথা বলা হয় এবং দীর্ঘ সময় সম্ভাব্য সুযোগগুলোকে কীভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি, তা তুলে ধরা হয়। কেউ কেউ সরকারের ভূমিকাকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেন, সরকার নিজে কী করেছে সেজন্য নয়, অন্যদের যেমন এনজিওগুলোর জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছে সে কারণে।

আমি এক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণ করি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমায় বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম সরকার অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্বাসন নানা ধরনের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় ব্যতিব্যস্ত থাকলেও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের একটি রূপরেখাও তৈরি করেছিল, যার প্রতিফলন প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় আমরা দেখতে পাই। বিশেষ করে দুটি অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা হয়েছিল, একটি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, আরেকটি খাদ্যনিরাপত্তা (যার সঙ্গে কৃষির উন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল) কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল সে সরকারের সময়; পরবর্তী সরকারগুলো কাজ আরো এগিয়ে নিয়েছে। ধারা এখনো অব্যাহত আছে। 

ষাটের দশকের নানা উত্থান-পতন পেরিয়ে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে অঞ্চলের প্রধান শস্য ধান উৎপাদনের পরিমাণ টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে চলেছে। ষাটের দশকে প্রবর্তিত উচ্চফলনশীল জাতের ধান উৎপাদন প্রসারিত হয় সত্তরের দশকে এসে। এছাড়া সেচ সহায়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুম অর্থাৎ শীতকালেও ধান চাষের উল্লেখযোগ্য প্রসার ঘটে।

সেচ ব্যবস্থা উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদের মাধ্যমে উৎপাদনের সম্ভাবনা বৃদ্ধির ফলে ১৯৮০-এর দশকে সরকার কৃষির বাজারকে উদারীকরণ করা শুরু করে। এর আওতায় সেচের জন্য ব্যবহূত পাম্প ডিজেলচালিত ইঞ্জিন আমদানির বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং উচ্চফলনশীল জাতের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান; অর্থাৎ সার, এর বিতরণ আমদানিও ব্যক্তি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা যদিও বড় ধরনের সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছিলেন, সরকার প্রাথমিকভাবে ছোট বর্ধনমূলক সংস্কারের মাধ্যমে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু আশির দশকের মাঝামাঝি সময় কৃষি উৎপাদনের ধীরগতির কারণে সরকারকে আরো উল্লেখযোগ্য হারে সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়। সংস্কার আশির দশকের শেষ দিকে শুরু হয়ে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে চলে।

১৯৯৪ সালে বাংলাদেশে সার সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে এবং সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ১৯৯৫ সালের বোরো উৎপাদনে। কেউ কেউ এজন্য দায়ী করেন কৃষিপণ্যের বাজার উদারীকরণ এবং আমদানি দেশীয় বাজারে সরবরাহের দায়িত্ব প্রধানত বেসরকারি খাতের ওপর দেয়াকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এটি উল্লেখযোগ্য যে নব্বইয়ের দশকের দ্বিতীয়ার্ধে কৃষি উপকরণের বাজারের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ কিছুটা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া হলেও বেসরকারি খাতের প্রাধান্য বজায় রাখা হয়েছিল। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর সরকারি নীতি বা কৌশলে কিছু পরিবর্তন আসা কিংবা নতুন কিছু মাত্রা যোগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নীতি প্রণয়নের ইতিহাসে আমরা এক ধরনের ধারাবাহিকতা দেখি, অন্ততপক্ষে বড় দাগের কৌশলের ক্ষেত্রে।    

আশির দশকে আরো একটি ঘটনা ঘটেছিল, যা বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। আশির দশকের মাঝামাঝি বড় শহরগুলোর সঙ্গে মফস্বলের বেশ ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়, এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের অন্যতম বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ভালো যোগাযোগ গড়ে ওঠার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। তবে গ্রামীণ এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল দুর্বল। গ্রামের সঙ্গে গ্রামের গ্রামের সঙ্গে শহরের সংযোগ স্থাপনকারী বেশির ভাগ রাস্তা তখনো পাকা হয়নি এবং তা বছরের সবসময় ব্যবহারযোগ্য ছিল না। তবে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৭ সাল অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে ফিডার রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশে ফিডার রাস্তা ছিল তিন হাজার কিলোমিটার। ১৯৯৭ সাল নাগাদ যা বেড়ে হয় ১৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। ধরনের সড়ক বাংলাদেশের গ্রামগুলোকে গোটা দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সাহায্য করে।

যুগান্তকারী ওই সড়ক নির্মাণ কর্মসূচির পূর্বাভাস পাওয়া যায় বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের ১৯৮৪ সালের একটি প্রতিবেদনে। পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প কৌশল নামের সেই নথির উপসংহারে বলা হয়, বেশ কয়েক বছর ধরে পল্লী উন্নয়নের বিবিধ প্রকল্প গ্রহণের পরেও গ্রামীণ দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, গ্রামীণ অবকাঠামোর অবদানকে উপেক্ষা করে শুধু কৃষি প্রবৃদ্ধিতে অনেক বেশি মনোনিবেশ করা। কৌশলপত্রটিতে যুক্তি দেখানো হয় যে ভবিষ্যৎ গ্রামীণ উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সড়ক নির্মাণ বাজার কাঠামোর মতো ভৌত অবকাঠামো অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এটি উল্লিখিত গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ কর্মসূচির অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।     

আশির দশকের মাঝামাঝি মূলত পোশাক শিল্পের জন্য দুটো নতুন নীতি গ্রহণ করা হয়। একটি ব্যাক টু ব্যাক এলসি এবং অন্যটি ডিউটি ড্র ব্যাক সুবিধা, যা দেশের উদীয়মান পোশাক শিল্পের প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের পথ কিছুটা হলেও মসৃণ করে দেয়। প্রথমটি শিল্পের একজন ব্যবসায়ীকে বিদেশী ক্রেতার কাছ থেকে প্রাপ্ত লেটার অব ক্রেডিট প্রদর্শনপূর্বক পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য দেশীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি ইস্যু করতে সক্ষম করে। দ্বিতীয় নীতির মাধ্যমে খাতের ব্যবসায়ীরা বন্ডেড ওয়্যারহাউজগুলোয় আমদানীকৃত কাঁচামাল রাখতেন এবং তা শুল্কমুক্ত রফতানীকৃত তৈরি পোশাকের জন্য ব্যবহূত হবে বলে গণ্য হতো।

নীতিগত পদক্ষেপগুলো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলে। ফলে নব্বইয়ের দশকের শেষ দুই হাজার দশকের শুরুতে শস্য উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা এর পেছনে আশি নব্বইয়ের দশকের কৃষিনীতি সংস্কার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের অবদানকে গুরুত্ব দিয়েছেন। একইভাবে আশির দশকের গোড়ার দিকে পরিমিত প্রবৃদ্ধির পর তৈরি পোশাক রফতানি আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে। আশি নব্বইয়ের দশকের নীতিগত পরিবর্তন এবং সরকারি বিনিয়োগ কার্যক্রম বাংলাদেশের উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র কৃষক, তৈরি পোশাকের রফতানিকারকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তৈরি পোশাক রফতানি বৃদ্ধি দেশকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

তাছাড়া পোশাক শিল্পে কর্মরতদের বেশির ভাগই গ্রামীণ নারী হওয়ায় এর মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও এক ধরনের আর্থিক প্রবাহ সৃষ্টি হয়। এরপর এটি অভিবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সপ্রবাহ দিয়ে পূর্ণতা লাভ করে। ১৯৯৭ সালে রেমিট্যান্সপ্রবাহ দশমিক বিলিয়ন ডলার থাকলেও ২০২০ সাল নাগাদ এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলগুলোয় আয় বৃদ্ধি পায়, যা গ্রামে অকৃষি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করে। ফলে কৃষির পাশাপাশি ধরনের কার্যক্রমের প্রসার ঘটে।

নীতিগত পদক্ষেপের ধারাটি পরবর্তী দশকগুলোয় অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্রমাগত বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে। উদাহরণস্বরূপ, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উদারীকরণ একই দশকের দ্বিতীয়ার্ধে খাতে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর ফলে ২০২০ সালের মধ্যে দেশের প্রায় সব নাগরিকের কাছে সেলফোন পৌঁছে যায়। ২০১০ সালের দিকে জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে ২০১৯ সাল নাগাদ ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়, যেখানে ২০০৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। এদিকে ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল আর্থিক পরিষেবা নীতি সংস্কার করলে ২০১৩ সালের শুরু থেকে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত মোবাইল আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ ১৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। ২০০৮ সালে অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে যে কাজ শুরু হয়, গত এক দশকে সেই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা কর্মসূচির প্রশংসনীয় বাস্তবায়ন বাংলাদেশে শিল্পায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।

একথা ঠিক যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা কার্যকারিতার প্রচলিত সূচকগুলোয় বাংলাদেশের সরকারগুলো সবসময় ভালো করতে পারেনি। তবে এর মধ্যেও সরকার নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক ধরনের দক্ষতা দেখিয়েছে, যা রূপান্তরকামী পরিবর্তনের সূত্রপাত ঘটিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের কিছু নীতিগত পদক্ষেপ উন্নয়ন অংশীদারদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে তাদের অর্থায়ন পরামর্শের মাধ্যমে। তবে অনেক সময়েই বাংলাদেশের সরকার অন্যদের কথা বিবেচনায় নিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো নিজের মতো করেই নিয়েছে, নিজের পছন্দসই গতিতে। তাতে যারা একবারেই অনেক পদক্ষেপ চেয়েছে বা আরো দ্রুতগতিতে নীতি প্রণয়ন বা সংস্কার চেয়েছে, তারা হয়তো অনেক সময় অসন্তুষ্ট হয়েছে, কখনো কখনো হতাশও হয়েছে। আর সে কারণেই সম্ভবত বাংলাদেশের সরকারের ভূমিকা নিয়ে অনেক মহলে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে।

এটি অনস্বীকার্য যে অনেক সময় সরকার তার করণীয় কাজ করেনি এবং যা করা উচিত নয়, তা করেছে। কিন্তু যখন ভালো উদ্যোগ নিয়েছে তখন বাংলাদেশের বাস্তবতার আলোকেই তা করেছে। সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ, অর্থাৎ নীতি বা প্রকল্প নিয়েছে, অর্থনীতিতে তার কী প্রভাব হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং প্রয়োজনে আরো পদক্ষেপ নিয়েছে। নিজের মতো করে হলেও নিজের তালে, নিজের গতিতে চললেও স্বাধীনতা-উত্তরকালে বিভিন্ন সরকার উন্নয়নের তাগিদে নীতি প্রণয়ন বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের একটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যার মর্ম সবাই উপলব্ধি করতে না পারলেও এর ফলাফল আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত হয়েছে।

এটাও স্বীকার করতে হবে যে বিশ্ব দ্রুত পাল্টাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ক্রমে জটিলতর হচ্ছে। প্রযুক্তির অভাবনীয় অগ্রগতির ফলে নতুন নতুন সম্ভাবনার পাশাপাশি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন আমাদের হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আগের তালে চলার দিন বোধহয় শেষ হয়ে এসেছে। আগামী দিনগুলোয় সরকারকে আরো কর্মদক্ষ হতে হবে, আরো দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। স্বজনবান্ধব নীতি প্রণয়ন থেকে সরে এসে সত্যিকার অর্থে বাজারবান্ধব নীতির দিকে যেতে হবে। নতুন পথযাত্রায় আমরা অবশ্যই অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করব। তাই গত ৫০ বছর বিভিন্ন সরকার যে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, তা আমরা স্বীকার করব, সেই পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করব, সেসব নীতি প্রণয়নের পটভূমি অভিঘাত বোঝার চেষ্টা করব। 

 

. সৈয়দ আখতার মাহমুদ: অর্থনীতিবিদ, বেসরকারি খাত বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক সংস্থায় উর্ধ্বতন পদে দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতালব্ধ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন