ভোক্তা ও ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাসে ঊর্ধ্বগতি

ইইউর অর্থনীতিতে দৃঢ় পুনরুদ্ধার

বণিক বার্তা ডেস্ক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইইউর খুচরা বিক্রি বেড়ে প্রাক-কভিড স্তরের কাছাকাছি পৌঁছেছে ছবি: এপি

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কভিডজনিত বিধিনিষেধে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) চলতি বছরের শুরুর দিকে শিথিল করা হয় বিধিনিষেধ। এর পরই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে অঞ্চলটির অর্থনীতি। দীর্ঘদিনের লকডাউন শেষ হওয়ায় বেড়েছে ভোক্তা ব্যবসায়িক আত্মবিশ্বাস। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ইইউর অর্থনীতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় (জানুয়ারি-মার্চ) প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশ বেশি। ইইউর পরিসংখ্যান অফিস তথ্য জানিয়েছে।

রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইউরো মুদ্রা ব্যবহারকারী ১৯টি ইউরোপীয় দেশের অর্থনীতি বার্ষিক ১৩ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। আগের প্রান্তিকের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার শতাংশ। প্রবৃদ্ধি রয়টার্সের পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি। বার্তা সংস্থাটির জরিপে অর্থনীতিবিদরা দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এপ্রিল-জুন সময়কালে বার্ষিক দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। দেশটির প্রবৃদ্ধি প্রাক-মহামারীর স্তরকেও ছাড়িয়ে গেছে। তবে ইউরোপীয় জিডিপি এখনো প্রাক-মহামারীর স্তরে ফিরে আসেনি। জার্মানিভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক বেরেনবার্গের অর্থনীতিবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, বছরের শেষ দিকে ইইউর জিডিপি প্রাক-কভিড স্তরে ফিরতে পারে।

জিডিপি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ইইউজুড়ে বার্ষিক মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। গত মাসে মূল্যস্ফীতির হার দশমিক শতাংশে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা শতাংশের চেয়ে বেশি। জুলাইয়ে জ্বালানি ব্যয় ১৪ শতাংশ, খাদ্য দশমিক শতাংশ পরিষেবা খাতের ব্যয় বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিতে অবদান রেখেছে।

মার্কিন ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংয়ের পরিচালক তেজ পারিখ বলেন, দোকানগুলো পুনরায় খোলার ফলে অঞ্চলজুড়ে খুচরা বিক্রি প্রাক-কভিড স্তরের দিকে ফিরতে দেখা গেছে। পাশাপাশি সংস্থাগুলোর বিনিয়োগ পরিকল্পনাও বাড়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা ক্রমাগত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ভালো। চলতি তৃতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতি আরো ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অঞ্চলজুড়ে কভিডের ডেল্টা ধরন প্রবৃদ্ধিতে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ইউরোপের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য বেশ আশাব্যঞ্জক। গত সপ্তাহে প্রকাশিত আইএইচএস মার্কিটের পারচেজিং ম্যানেজার সূচকে দেখা যায়, ইউরো মুদ্রা ব্যবহারকারী দেশগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলতি মাসে ২১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। সময় পরিষেবা খাতের কার্যক্রমও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়ায় উৎপাদন খাত প্রভাবিত হয়েছে। অঞ্চলের রফতানিনির্ভর জার্মানির জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে কম ছিল। অন্যদিকে ভ্রমণ হটস্পট ইতালি, স্পেন পর্তুগালের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গেছে।

আইএইচএস মার্কিটের প্রধান ব্যবসায়িক অর্থনীতিবিদ ক্রিস উইলিয়ামসন বলেন, কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে ইউরোজোনের অর্থনীতি গ্রীষ্মকালীন বৃদ্ধির গতি উপভোগ করেছে। কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম বিস্তৃত হওয়ায় অঞ্চলের আতিথেয়তা, ভ্রমণ পর্যটন খাতে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

যদিও মহামারী নিয়ে এখনো উদ্বেগ রয়ে গেছে। কভিডের ডেল্টা ধরনের বিস্তার পর্যটননির্ভর অর্থনীতিগুলোর প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে।

একটি গবেষণা নোটে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস লিখেছে, এখন পর্যন্ত পাওয়া সূচকগুলোতে মহামারীর খুব কম প্রভাব দেখা গেছে। তবে জরিপে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের বিষয়গুলোও উঠে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন