তৃতীয় ডোজ নেয়ার পরামর্শ

৩ হাজার কোটি ডলারের টিকা বিক্রির পূর্বাভাস ফাইজারের

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২১ সালে ৩০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে ফাইজার ছবি: এপি

২০২১ সালে হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের টিকা বিক্রি করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ফাইজার ইনকরপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি মনে করে, জার্মান অংশীদার বায়োএনটেকের সঙ্গে মিলে তারা যে টিকা তৈরি করেছে তার তৃতীয় ডোজও মানুষের দেয়া উচিত। এতে করে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে সুরক্ষা শক্তিশালী হবে। রয়টার্স।

ফাইজার জানিয়েছে, আগামী আগস্টের মধ্যেই জরুরি ব্যবহারের জন্য বুস্টার ডোজ ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হবে। তথ্য বলছে, তৃতীয় ডোজ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বেশি কার্যকর। বিশেষ করে দ্রুত সংক্রমণশীল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এটি অধিক কার্যকর।

ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিকাইল ডলস্টেন বলেন, সব মিলিয়ে আমি মনে করি টিকার তৃতীয় ডোজ ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা জোরদার করবে। পাশাপাশি ভাইরাসের বিস্তার রোধেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, তৃতীয় ডোজের টিকা প্রয়োগ করার পর অ্যান্টিবডির কার্যক্রম ১০০ গুণ বেড়ে যায়।

টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কিত একটি সমীক্ষাও প্রকাশ করেছে ফাইজার। সেখানে বলা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টিকার কার্যকারিতা কমতে থাকে। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের চার মাস পর কার্যকারিতা ৯৬ শতাংশ থেকে ৮৪ শতাংশে নেমে আসে।

চলতি মাসের শুরুতেই তৃতীয় ডোজের টিকার অনুমোদন চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করে ফাইজার। তবে এর জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাদের। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে এখনো কোনো গবেষণার তথ্য পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাগুলোর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন মানুষদের জন্য তৃতীয় ডোজ টিকার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।

তবে বুস্টার টিকা দেয়া হোক বা না হোক, ২০২১ সালে আগের চেয়ে অনেক বেশি বিক্রি বাড়বে ফাইজারের। বছর ৩০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তারা। গত ডিসেম্বর থেকে পর্যন্ত সংস্থাটি ১০০ কোটি ডোজ টিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করেছে। এখন পর্যন্ত সব লভ্যাংশ বায়োএনটেকের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছে ফাইজার।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ফাইজারের টিকা অনুমোদন পেয়েছে। চলতি বছর এসে চাহিদার পরিমাণ আরো বেড়েছে। বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাস্ট্রাজেনেকা জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার উৎপাদন সুরক্ষা সম্পর্কিত নানা সমস্যার কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফাইজার। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার সঙ্গেও প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে মডার্না দ্রুত অনেক বেশি পরিমাণে উৎপাদন করতে সক্ষম। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্প্রতি মডার্নাকে শিশুদের ওপর কভিড প্রতিরোধী টিকার পরীক্ষার বিষয়ে জোর দিতে বলেছে।

গত সপ্তাহে জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, বছর ২৫০ কোটি ডলারের কভিড প্রতিরোধী টিকা বিক্রি করবে তারা। একই সময়ে মডার্নার পূর্বাভাস হলো, হাজার ৯২০ কোটি ডলারের টিকা বিক্রি।

এরমধ্যে যৌথভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ফাইজার বায়োএনটেক। তারা জানিয়েছে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা প্রতিরোধে বিশেষভাবে তৈরি করা একটি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হবে সামনের মাসে। টিকার প্রথম ব্যাচ এরই মধ্যে উৎপাদিত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন