ভারতীয় বিমানবন্দরগুলো ৬৩ শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতীয় বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী সংখ্যা সাড়ে ১১ কোটি নেমেছে ছবি: রয়টার্স

২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের বিমানবন্দরগুলোর আনুমানিক লোকসান ব্যয় দাঁড়িয়েছে হাজার কোটি রুপি। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিমানবন্দরগুলোর আনুমানিক মুনাফার পরিমাণ ছিল হাজার ১৬০ কোটি রুপি। সম্প্রতি সিএপিএ ইন্ডিয়ার ইন্ডিয়া এয়ারপোর্টস রিভিউ এফওয়াই২০২১ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য প্রিন্ট।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৩১ মার্চ শেষ হওয়ার অর্থবছরে ভারতীয় বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী সংখ্যা ৬৩ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১১ কোটি ৫০ লাখে নেমে এসেছে। বিমানবন্দরগুলোর পরিচালনা বাবদ রাজস্ব আয় ৬৪ দশমিক শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে হাজার ৩১০ কোটি রুপিতে।

চলতি অর্থবছরে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এএআই) বিমানবন্দরগুলো থেকে ৬৯ শতাংশ লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে পরিচালিত বিমানবন্দরগুলো ৩১ শতাংশ লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বিমানবন্দরগুলোর মোট মূলধন ব্যয় ১৩ হাজার ৫৯০ কোটি রুপিতে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। ভারতের বেশকটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর উল্লেখযোগ্য এয়ারলাইনস বিমান চলাচল পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিএপিএ ইন্ডিয়ার সেবা গ্রহণ করে থাকে।

ভারতীয় সংসদে দেশটির কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান চলাচলবিষয়ক মন্ত্রী ভি কে সিংয়ের উপস্থাপিত তথ্যে দেখা যায়, নভেল করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালে ভারতীয় বিমানবন্দরগুলো ক্রমাগতই লোকসানের মুখ দেখছে। ১৩৬টি বিমানবন্দরের মধ্যে এএআই পরিচালিত ১০৭টি বিমানবন্দর লোকসান ব্যয়ের সম্মুখীন। এসব বিমানবন্দরের ৯১ শতাংশের মোট লোকসান ব্যয়ের পরিমাণ আনুমানিক হাজার ৩৬৯ কোটি রুপি। মন্ত্রী উপস্থাপিত তথ্যে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ অর্থবছরে এএআই পরিচালিত ১০১টি বিমানবন্দরের লোকসান ব্যয়ের পরিমাণ ছিল হাজার ৬৬৯ কোটি রুপি।

সিএপিএ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ যাত্রী সংখ্যার পরিমাণ ৬১ দশমিক শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১০ কোটি ৫০ লাখে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে দেশটির আন্তর্জাতিক যাত্রীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে আরো বৃহৎ আকারে। সময় ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক যাত্রী সংখ্যা ৮৪ দশমিক শতাংশ হ্রাস পেয়ে কোটি লাখে দাঁড়িয়েছে, যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বর্তমানে ভারত থেকে যেকোনো ধরনের আন্তর্জাতিক বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। তবে এয়ার বাবল প্রক্রিয়ায় কয়েকটি দেশে ভ্রমণে অনুমতি রয়েছে।

সিএপিএ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেশকটি রাজ্যের সরকার কভিডবিষয়ক নীতিমালার কারণে বিমানবন্দরগুলোর ওপর ঘন ঘন নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা পরিবর্তন না করলে এসব রাজ্যে যাত্রী পরিবহন সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে ৭০ লাখ থেকে এক কোটি বৃদ্ধি পেত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব প্রতিক্রিয়ায় মহারাষ্ট্রের মুম্বাই বিমানবন্দর একাই আনুমানিক ৩৫-৪৫ লাখ যাত্রী হারাতে পারে। বর্তমানে ভারতের অন্যান্য বিমানবন্দরের চেয়ে মুম্বাই বিমানবন্দর সবচেয়ে বেশি যাত্রী সংকটে ভুগছে। মুম্বাই বিমানবন্দর ৭৫ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে এবং তাদের লোকসান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩১৭ দশমিক ৪১ কোটি রুপি। চেন্নাই বিমানবন্দর তাদের ৭৫ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে। অন্যদিকে দিল্লি বিমানবন্দরের ৬৬ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়ে লোকসান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩১৭ দশমিক ৪১ কোটি রুপি। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর ৬৬ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে, হায়দরাবাদ বিমানবন্দর তাদের ৬৩ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়েছে এবং কলকাতা বিমানবন্দরের ৬৪ দশমিক শতাংশ যাত্রী হারিয়ে লোকসান ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক শূন্য কোটি রুপি। সংসদে উপস্থাপিত তথ্যানুসারে একমাত্র পুনে বিমানবন্দর মুনাফার মুখ দেখেছে। সময়ে বিমানবন্দরটির মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক শূন্য কোটি রুপি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন