দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক শীতলের চেষ্টা, ফের খুলছে লিয়াজোঁ অফিস

বণিক বার্তা অনলাইন

দুই কোরিয়ার মধ্যে আবারো সম্পর্ক শীতলের চেষ্টা চলছে। এ জন্য যৌথভাবে ফের লিয়াজোঁ অফিস খোলার চিন্তা করা হচ্ছে। কোরিয় দ্বীপে উত্তেজনা কমিয়ে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য একটি যৌথ সম্মেলনের আয়োজনের বিষয়েও ভাবছে দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের শীর্ষ তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স

দুই দেশেই সীমান্তবর্তী পানমুনজামে লিয়াজোঁ অফিস চালু করা হতে পারে। তবে দুই নেতার মধ্যে আলোচনার দিনক্ষণ এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে আলোচনা সময় নির্ধারণটি ঝুলে আছে। 

ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে দুই কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্কে শীতলের চেষ্টা বেশ আলোচনায় ছিল। ওই সময় সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে লিয়াজোঁ অফিস খুলে দুই দেশ। কিন্তু সম্পর্ক অবনতির জেরে গত বছর এ অফিস গুঁড়িয়ে দেয় পিয়ংইয়ং। 

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্পর্ক উন্নয়নের পন্থা বের করার চেষ্টা করছেন। দেশ দুটোর তৈরি হওয়া উঞ্চ সম্পর্ক শীতলের জন্য দুই নেতা গত এপ্রিল থেকে একাধিকবার চিঠি চালাচালিও করেছেন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুন জে ও কিমের মধ্যে অনন্ত ১০ বারেরও বেশি চিঠি আদানপ্রদান হয়েছে। মূলত সিউলের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ ও কিমের বোন কিম ইয়ো জংয়ের মধ্যেকার যোগাযোগ চ্যানেল ব্যবহার করে এটি সিম্পন্ন হয়েছে। সম্পর্ক উন্নয়নে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দুই পক্ষই প্রথমে দুই দেশের মধ্যে পুনরায় হটলাইন সেবা চালু করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর নিভৃতচারী উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেন। সে সময় ট্রাম্প-কিমের মধ্যে বাগযুদ্ধ বিশ্ব গণমাধ্যমে নিয়মিত শিরোনাম হয়েছে। আবার অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই কিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার দাবি করেন ট্রাম্প। তার ইচ্ছাই সে সময় দুই কোরিয়ার মধ্যেও সম্পর্ক শীতল হয়। লিয়াজোঁ অফিস চালু করা হয়। দুই কোরিয়ার শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে একাধিকবার সাক্ষাতও হয়। কোরিয় দ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সমঝোতার জন্য ত্রাতা হিসেবে নিজের কৃতিত্ব দেখাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। এ জন্য তিন নেতার মধ্যে আলোচনাও হয়। সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামে ট্রাম্প-কিমের মধ্যে বৈঠক হয়। এমনকি দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে দুই দেশের সীমান্তবর্তী অসামরিক নিরপেক্ষ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ডিমিলিটারাইজড জোনেও সাক্ষাৎ করেন দুই নেতা। 

মূলত পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা ও ব্যবহারের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার লাগাম টেনে ধরার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। অন্যদিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিমও এ আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি। গত বছর থেকে আবারো দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে লিয়াজোঁ অফিস গুঁড়িয়ে দেয় পিয়ংইয়ং। 

তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই কোরিয়ার মধ্যে আবারো লিয়াজোঁ অফিস চালু হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সেই পুরনো উদ্যোগে গতি আসবে। আর উত্তর কোরিয়া নেতা কিমও চাইছেন জো বাইডেনের নেতৃত্বে হোয়াইট হাউজের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন