বরিশালে পানের দাম পাচ্ছেন না চাষীরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বরিশাল

বরিশালে নথুল্লাবাদ এলাকায় পাইকারদের অপেক্ষায় পানচাষীরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

চলতি বছর বরিশালে পানের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই চাষীদের মুখে। ভরা মৌসুমেও পানের দাম না পেয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের দাবি, করোনায় পরিবহন সংকটের সুযোগে পাইকাররা সিন্ডিকেট করে পানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে তারা চরমভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অথচ গ্রাম থেকে যাওয়া পান নগরীতে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকাররা বলছেন, করোনায় পানের চাহিদা আগের তুলনায় কম। তাই গ্রাম থেকে কম পান কিনছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বরিশালে বছর পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনার কারণে পান রফতানি বন্ধ। তার ওপর পাইকাররা চাষীদের কাছ থেকে মহামারীর সুযোগ নিচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হূদয়েশ্বর দত্ত জানান, বরিশাল জেলায় হাজার ৯৩১ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গৌরনদী উপজেলায় হাজার ৫০ হেক্টর, বাকেরগঞ্জে ৫০, উজিরপুরে ৩১৫ আগৈলঝাড়ায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ২০ হাজার ২২৪ টন পান চাষ হয়েছে। এতে ফলন হয়েছে গড়ে দশমিক ৯০ টন, যা বাম্পার ফলন বলে উপপরিচালক দাবি করেছেন।

জানতে চাইলে উজিরপুর পৌর এলাকার নম্বর ওয়ার্ডের পানচাষী মনির সরদার বলেন, করোনার কারণে পানের বাজার খুবই মন্দা। বাজারে ঠিকমতো পাইকাররা আসেন না। যারা আসেন তারা যে দাম দেন, ওই দামেই বিক্রি করতে হয়। বছর পান রফতানির কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় এখন ক্ষতি হলেও কিছু করার নেই।

উজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের চেষ্টা থাকে যাতে পানের ফলনে কোনো সমস্যা না হয়। উজিরপুরের শিকারপুরে সবচেয়ে বেশি পান উৎপাদন হয়। অঞ্চলের পান মধ্যপ্রাচ্যে যায়। কিন্তু করোনার কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে।

গৌরনদীর বার্থি ইউনিয়নের গোরক্ষডোবা গ্রামের পানচাষী সজিব মিয়া বলেন, এখন পানের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু দাম পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি করোনায় পরিবহন সংকটকেই দায়ী করেছেন। ঢাকায় পান পাঠাতে পারছি না। কারণ গাড়ি নেই, লঞ্চ নেই। ভালো মানের এক বিড়া পান গত বছর ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়, মাঝারি আকারের পান ৭০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে বরিশাল নগরীর পানের পাইকারি বাজার নথুল্লাবাদের পাইকার আব্দুল জব্বার বলেন, করোনায় পানের চাহিদা কম। পরিবহন সংকটের কারণে পান আনতে ব্যয় বেশি। তাছাড়া তাদের কাছে পর্যাপ্ত পান মজুদ আছে। তাই নতুন করে তারা পান কিনছেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন