ভারতীয় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে কভিডের ভ্যারিয়েন্ট

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতে টানা দুই মাস ধরে মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি ছবি: পিটিআই

সাম্প্রতিক সময়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা। বর্তমানে কভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে অবস্থার আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

সর্বশেষ জরিপের ফলাফলগুলো ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) কঠিন নীতিমালার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে চাপ প্রয়োগ করছে। এরই মধ্যে টানা দুই মাস দেশটিতে মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিকের চেয়ে শতাংশের বেশি হারে প্রবাহিত হচ্ছে।

আরবিআই জানায়, গত সপ্তাহের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী অর্থনীতি আরো উজ্জ্বল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির হারও ক্ষণস্থায়ী বলে ধারণা করা হয়েছিল। অধিকাংশ সম্পদশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় এমনটা আশা করা হয়েছিল। তবে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে কভিড-১৯-এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দ্রুতগতির সংক্রমণ বিশ্বজুড়ে এই ভ্যারিয়েন্টের ক্রমাগত প্রভাব অর্থনীতিকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ অর্থনীতির পাশাপাশি ভারতে কভিড-১৯-এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপকেও বিতর্কিত করছে।

১৫-২২ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এক জরিপে ৫২ জন অর্থনীতিবিদ মত প্রকাশ করেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকেও প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনায় অবনতি দেখা দেবে। কিন্তু পরবর্তী বছরের একই সময়ে তা উত্তরণের সুযোগ রয়েছে। জরিপে অংশ নেয়া দুই-তৃতীয়াংশ অর্থনীতিবিদ অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তরে জানান, কভিড-১৯ ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি করবে, যা কয়েকটি ক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অব সিঙ্গাপুরের (ডিবিএস) অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও জানান, চলতি বছর অর্থনীতির পুরোটা সময়ই সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধি যেকোনো নতুন ভ্যারিয়েন্টের আগমনের ঝুঁকি নিয়ে কাটাতে হবে। বিশেষ করে যখন টিকাদান কার্যক্রম সমালোচনা এড়িয়ে চলার জন্য যথেষ্ট পরিমাণের চেয়ে কম গতিতে পরিচালিত হচ্ছে।

রয়টার্স পরিচালিত আরেকটি জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতগুলোতে আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হারের ওপর নির্ভর করছে ঝুঁকি মোকাবেলায় কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। এসব অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে ভারতের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ জাতীয় উৎপাদন অধিকাংশ কর্মী এখানে শ্রম দিয়ে থাকেন। জরিপে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানান, আগামী অক্টোবরে ভারতে নতুন আরেকটি সংক্রমণের ঢেউ শুরু হতে পারে।

গত অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারত। চলতি অর্থবছরে আশা করা যাচ্ছে, দেশটির অর্থনীতি দশমিক শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। সর্বশেষ ২০১০ সালে অর্থনীতি এতটা গতি নিয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। সর্বশেষ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী বিস্তৃতির হার মে মাসে পরিচালিত জরিপের ফলাফল দশমিক শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়েছে। এপ্রিলে হারের পরিমাণ ছিল ১১ শতাংশ। বর্তমান বিস্তৃতির হার আরবিআইয়ের সর্বশেষ ধারণা দশমিক শতাংশ থেকে সামান্য কম।

চলতি বছরে কভিড সংক্রমণের মারাত্মক অবনতির বিষয়টি মাথায় রেখে অর্থনীতিবিদরা ভারতীয় অর্থনীতি শতাংশ থেকে শতাংশের মধ্যবর্তী পরিমাণ শতাংশ বাড়ার কথা বলছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কোনো অবস্থাতেই দশমিক শতাংশ থেকে হ্রাস পাবে না বলেও আশা করছেন তারা। অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন, চলতি অর্থবছর পরবর্তী অর্থবছরে ভারতের মূল্যস্ফীতির হার গড়ে যথাক্রমে দশমিক শতাংশ দশমিক শতাংশ পর্যন্ত স্থির থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন