করোনার টিকার বয়সসীমা ১৮ করার ঘোষণা আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা নেয়ার বয়সসীমা ১৮ বছর করছে সরকার। শিগগিরই বিষয়ে ঘোষণা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম। গতকাল রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি কথা বলেন।

মহাপরিচালক বলেন, টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধনের সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর করে দেয়া হবে। এটার ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় শুক্রবার সকাল বেলা আমাকে জানিয়েছেন। আমরা এটা আমাদের কমিটিতে আলোচনা করব এবং কীভাবে এটা করা যাবে সেটা আমরা জানাব। গ্রাম পর্যায়ে টিকা দেয়ার বিষয়ে অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, অন্যান্য সরকারি টিকা যেভাবে দেয়া হয়, করোনার টিকা সেভাবেই দেয়া আরো সহজ কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে সরকার ভাবছে।

এর আগে ১৫ জুলাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও বলেছিলেন, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি টিকার জন্য নিবন্ধনের বয়সসীমা ১৮ বছর পর্যন্ত করার সুপারিশ করেছে। আমরা চিন্তা করছি টিকার জন্য বয়সসীমা আরো কমিয়ে আনা যায় কিনা। বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। তারও একটা নির্দেশনা আছে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটিও জানিয়েছে, ১৮ বছর এবং তার ঊর্ধ্বে টিকা দেয়া যায় কিনা। তিনি আরো বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। শিক্ষকদের টিকা দিচ্ছি, এখন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছে, তাদেরও টিকার আওতায় নিয়ে আসব।

তারও আগে ১২ জুলাই কভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি আরো মানুষকে দ্রুত টিকার আওতায় নিয়ে আসতে বয়সসীমা ১৮ বছরে কমিয়ে আনতে সুপারিশ করেন।

নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার থেকে নতুন করে লকডাউন শুরুর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ঈদের আগে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। তবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ কমেছে। আজকে (গতকাল) থেকে যে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে, সেটা কয়েকদিন গেলে বোঝা যাবে। পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তবে এটা আমি জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকারের ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ভালো আছে।

খুরশীদ আলম বলেন, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে দিনে ২০০ টনে পৌঁছেছে। স্বাভাবিক সময়ে অক্সিজেনের চাহিদা থাকে ৭০ থেকে ৯০ টনের মতো। তবে দেশে এখনো অক্সিজেনের মজুদ আছে এবং ভারত থেকেও আমদানি হচ্ছে। কভিড রোগীর চাপ সামলাতে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ফিল্ড হাসপাতাল করার পরামর্শ এসেছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে গত ২৬ জানুয়ারি টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। শুরুতে ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। পরে তা তিন ধাপে কমিয়ে ৩০ বছরে নামিয়ে আনা হয়। অর্থাৎ যাদের বয়স ৩০ বছর বা তার বেশি, কেবল তারাই এখন সুরক্ষা প্লাটফর্মের ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। তবে মহামারী মোকাবেলায় সম্মুখসারির কর্মী, বেশকিছু পেশাজীবী শ্রেণী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রবাসী কর্মী এবং প্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নির্ধারিত বয়সসীমার বাইরেও নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন