নমুনা পরীক্ষার সঙ্গে কমেছে শনাক্ত, ১৬৬ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা কমেছে। এর প্রভাবে কমেছে শনাক্তের সংখ্যাও। গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় হাজার ৩৬৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সময় আরো ১৬৬ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দেশে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৩৯টি পরীক্ষাগারে ২০ হাজার ৪৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক শূন্য শতাংশ। দেশে মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার দশমিক ৬৪ শতাংশ। নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৪। আর মারা গেছেন মোট ১৮ হাজার ৮৫১ জন।

ঈদের ছুটিতে নমুনা পরীক্ষা এক-চতুর্থাংশে নেমে আসায় এর আগের দিন কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের সংখ্যা তিন হাজারে নেমে এসেছিল। প্রায় সাড়ে ১১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে হাজার ৬৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। শুক্রবার নমুনা পরীক্ষা কিছুটা বাড়লেও তা আগের তুলনায় কম। দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের মার্চ। চলতি বছরের ১৮ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা ১১ লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে ১২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। চলতি মাসের ১৯ তারিখে তা ১৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সেদিনই সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যু হয়।

গতকাল মারা যাওয়া ১৬৬ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। ৩৩ জন করে ৬৬ জন চট্টগ্রাম খুলনা বিভাগের, সাতজন রাজশাহী, ১২ জন রংপুর, আটজন সিলেট, তিনজন ময়মনসিংহ ১০ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মধ্যে ৪৬ জন ছিলেন ৬১-৭০ বছরের কোটায় এবং ৫১-৬০ বছর বয়সী ৩২, ৭১-৮০ বছর বয়সী ২৭ ৪১-৫০ বছর বয়সী ২৪ জন ছিলেন। মৃতদের মধ্যে ৯৫ জন পুরুষ ৭১ জন নারী। যাদের ১২৩ জন সরকারি ৩৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং চারজন বাসায় চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান।

গত একদিনে কেবল ঢাকা বিভাগেই হাজার ৬৮৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে শনাক্ত হয়েছে হাজার ১৮৯ জন। এই দুই বিভাগেই শনাক্ত হয়েছে সারা দেশের মোট শনাক্ত রোগীর প্রায় ৭৭ শতাংশ। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় হাজার ৮২৭ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৪৫১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বাকিদের মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩০ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১৭ জন, রংপুর বিভাগে ২০২ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬১ জন, বরিশাল বিভাগে ১৮৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ৩৮৪ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

এদিকে গত আটদিনের জন্য শিথিল হওয়া বিধিনিষেধ গতকাল সকাল থেকে আবার শুরু হয়েছে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী কঠোর বিধিনিষেধ আগামী আগস্ট পর্যন্ত বলবত্ থাকবে। সময়ে অন্যান্যবারের মতো কলকারখানা খোলা থাকছে না। জরুরি ছাড়া কোনো যানবাহনও চলতে দিচ্ছে না সরকার।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে এক শতাধিক দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মাহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদানে এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন