আরো ১৫ দিনের জন্য পুঁজিবাজারে বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন স্থগিত থাকবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে ২১ দফায় কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখার মেয়াদ বাড়ানো হলো।
তথ্যমতে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন আরো ১৫ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ হিসেবে ২০ জুলাই থেকে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকবে।
এর আগে আরো ২০ দফা কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, দ্বিতীয় দফায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত, তৃতীয় দফায় ৮ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত, চতুর্থ দফায় ২৩ অক্টোবর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত, পঞ্চম দফায় ২২ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ষষ্ঠ দফায় ৭ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত, সপ্তম দফায় ২২ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত, অষ্টম দফায় ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত, নবম দফায় ২১ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, দশম দফায় ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১১তম দফায় ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত, ১২তম দফায় ৭ মার্চ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত, ১৩তম দফায় ২২ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত, ১৪তম দফায় ৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত, ১৫তম দফায় ২১ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত, ১৬তম দফায় ৬ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত, ১৭তম দফায় ২১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত, ১৮তম দফায় ৫ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত, ১৯তম দফায় ২০ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত এবং ২০ দফায় ৫ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ ছিল।
কোম্পানিটির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদ অনুসারে, চলতি ২০২০-২১ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৬৫ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৬০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২১ শেষে কোম্পনিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দায় দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি বেক্সিমকো সিনথেটিকস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৯ টাকা ২০ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩ টাকা ৪৬ পয়সা। ৩০ জুন প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় দাঁড়ায় ১ টাকা ৪০ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছর শেষে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৪ টাকা ১৩ পয়সা।
পুঁজিবাজার থেকে স্বেচ্ছায় তালিকাভুক্তি প্রত্যাহারের জন্য গত বছর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করেছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো সিনথেটিকস। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির আবেদন গ্রহণ করে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে এর শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখার জন্য দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বেক্সিমকো সিনথেটিকস শেয়ারহোল্ডারদের জানায়, ড্রন টেক্সচারড ইয়ার্ন (ডিটিওআই) নামে এক ধরনের পলিয়েস্টার সুতা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য কোম্পানিটি ১৯৯০ সালের ১৮ জুলাই ‘যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর’-এ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। ১৯৯৩ সালের ৪ ও ৬ নভেম্বর যথাক্রমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) তালিকাভুক্ত হয় কোম্পানিটি।
সাত বছর ধরে সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও কোম্পানি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন বা মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয় তাদের। এ কারণে কয়েক বছর ধরে কোম্পানিটির শেয়ার অভিহিত মূল্যের চেয়েও কম দরে কেনাবেচা হয়ে আসছে। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি উৎপাদন কার্যক্রম ও কারখানা বন্ধে বাধ্য হয়।