কভিড ও ব্রেক্সিটের প্রভাব

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানের সুপারশপের তাকগুলো এভাবেই খালি হয়ে পড়েছে ছবি: রয়টার্স

ব্রিটেনে কভিড-১৯-এর সংক্রমণ হঠাৎ বাড়ার ফলে ঘরবন্দি জীবনযাপন করছেন কয়েক লাখ শ্রমিক। পাশাপাশি ব্রেক্সিটের প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনীয় খাদ্য পেট্রলের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে দেশটির বিভিন্ন স্থানে খাদ্য জ্বালানির সংকট তৈরি হয়েছে। খবর সিএনএন বিজনেস।

যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি সুপারমার্কেট জানায়, তারা বেশকিছু পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুদ রাখতে পারছে না। একই সময়ে গ্যাস স্টেশনগুলো জানায়, বেশকিছু পাম্প জ্বালানির অভাবে ধুঁকছে।

এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম জানায়, যুক্তরাজ্যে আমাদের কিছু খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রের সরবরাহ চেইনে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যার ফলে আমাদের কিছু কেন্দ্র অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব পাম্পে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিজেল পেট্রলের মজুদ নেই।

ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম জানায়, একদিনের মধ্যেই এসব ঘাটতির অধিকাংশই পূরণ করা সম্ভব হবে। তারা জানায়, যুক্তরাজ্যজুড়ে ট্রাকচালকস্বল্পতার কারণে এমনটা ঘটছে। শ্রমিক সংকটের দরুন তারা বিভিন্ন স্থানে জ্বালানি সরবরাহ টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়েছে বলেও জানায় ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার কারণে অধিকাংশ শ্রমিকই বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যের শ্রমিকদের কভিড টেস্টে পজিটিভ ফলাফল এলে ১০ দিনের আইসোলেশন পালন করতে হয়। এছাড়া জাতীয় টেস্ট ট্রেস সার্ভিস অ্যাপ কর্তৃক সতর্কীকরণ এলাকার কাছাকাছি অঞ্চলে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। জাতীয় টেস্ট ট্রেস সার্ভিস যুক্তরাজ্যে করোনা সংক্রমিত এলাকাগুলোকে অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে শনাক্ত করে থাকে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার তথ্যানুসারে প্রতিদিন দেশটিতে ৫০ হাজার নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে -১৪ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে আনুমানিক লাখ ২০ হাজার লোক আইসোলেশন পালন করেছে।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, অধিক সংখ্যক শ্রমিক আইসোলেশনে থাকার ফলে তারা তাদের মজুদ পরিপূর্ণ করার মতো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। সুপারমার্কেট চেইন লিডেলের এক মুখপাত্র জানায়, পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় সুপারমার্কেটের নিয়মিত লেনদেন ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অন্যান্য খুচরা বিক্রেতার মতো আমাদের অবস্থাও দিনের পর দিন আরো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে হচ্ছে। আমাদের অধিকাংশ সহকর্মী জাতীয় ট্র্যাক অ্যান্ড ট্রেস পদ্ধতির বার্তার মাধ্যমে স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে আছেন।

আরেক সুপারমার্কেট চেইন সেইনসবোরি জানায়, ভোক্তাদের চাহিদা পূরণে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। গ্রোসারি চেইন শপ কো-অপ জানায়, ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী কিছু পণ্যের ঘাটতি রয়েছে। তবে সরবরাহকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে ক্রমাগত নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি কর্মীদের আইসোলেশনে যাওয়ার ফলে দেশটিতে ট্রাকচালক সংকট দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। রোড হলেজ অ্যাসোসিয়েশনের পলিসি অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রড ম্যাকেনজি জানান, যুক্তরাজ্যে বর্তমানে এক লাখ ট্রাকচালকের সংকট রয়েছে। এরমধ্যে ২০ হাজার চালক ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিক। এসব চালক ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য ছেড়ে চলে যান। ব্রেক্সিটের ফলে সীমান্তে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্রাকচালকরা যুক্তরাজ্যে আসতে পারছেন না। মহামারী না থাকলেও আমদের চালক সংকট থাকত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন