তাজউদ্দিন আহমদের ৯৬তম জন্মদিন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৬তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালের এই দিনে গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৌলভী মো. ইয়াসিন খান ও মা মেহেরুননেসা খান। মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি ঘটে তাজউদ্দীন আহমদের। ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার পরের বছরই ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগে যোগদান করেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সংগঠনটির নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। 

১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন তাজউদ্দিন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।  ১৯৭২ সাল পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯৫০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন তাজউদ্দিন আহমদ। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনকালে গ্রেফতার হন এবং নির্যাতন ভোগ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এলএলবি পাস করেন। 

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতে যান। প্রবাসী সরকার গঠনের লক্ষ্যে ৪ এপ্রিল দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে  বৈঠক করেন তাজউদ্দীন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে সফল সমাপ্তির দিকে নিয়ে যেতে অসামান্য অবদান রাখেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তাজউদ্দীন। পরে ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় আরও তিন নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মনসুর আলী ও আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে তাজউদ্দীনকে হত্যা করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন