সৌদি আরবে বেড়েছে খুচরা বিক্রি, কমছে দোকান ভাড়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

সৌদির ৪৪ শতাংশ ক্রেতা দোকানে গিয়ে পণ্য কেনার ব্যাপারে স্বাচ্ছন্দ্যের কথা জানিয়েছেন ছবি: এপি

বিশ্বের বেশির ভাগ বড় অর্থনীতির দেশই মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবেও খুচরা খাতের বিক্রিতে বেশ পুনরুদ্ধার দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে দোকানগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি বেড়েছে। তবে এর পরও দেশটির দোকান মালিকরা ভাড়া কমে যাওয়ার কারণে বেশ চাপে রয়েছেন। কেননা এরই মধ্যে বাজারে নতুন নতুন ব্যবসাক্ষেত্র আসতে শুরু করেছে।

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রিয়েল এস্টেট-সংক্রান্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেএলএল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় পয়েন্ট অব সেল লেনদেন তুলনামূলক বেড়েছে। গত বছরের সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে তা প্রায় দ্বিগুণ। এর অর্থ এই যে, ভোক্তাদের আচরণ পরিবর্তিত হলেও কিংবা ক্রেতাদের একটি অংশ অনলাইনে কেনাকাটার দিকে ঝুঁকলেও এখনো অনেক ক্রেতা সরাসরি দোকানে গিয়ে কেনাকাটা পছন্দ করছেন।

বৈশ্বিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কের্নি ক্রেতা আচরণের ওপর নির্ভর করে জুনে একটি জরিপ পরিচালনা করে। সেখানে দেখা যায়, ৫৭ শতাংশ বিক্রেতা মনে করছেন, মহামারীর কারণে ক্রেতাদের মধ্যে অনলাইনে কেনাকাটার যে অভ্যাস গড়ে উঠেছে তা আরো অন্তত ছয় মাস বহাল থাকবে। ৪৪ শতাংশ ক্রেতা সরাসরি দোকানে গিয়ে দেখে-শুনে পণ্য কেনার ব্যাপারে নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা জানিয়েছেন।

চলতি বছরের প্রথমার্ধে রিয়াদ মক্কায় নতুন ২৮ হাজার বর্গমিটার ৫৭ হাজার বর্গমিটারের নতুন বাণিজ্যকেন্দ্র তৈরি হয়েছে। জেদ্দা দাম্মামের মেট্রোপলিটন এলাকায় যোগ হয়েছে ৫৩ হাজার বর্গমিটার ১২ হাজার বর্গমিটার জায়গা।

খুচরা বাণিজ্যকেন্দ্রগুলোতে সংযোজন ভাড়ার ওপর চাপ তৈরি করেছে। ফলে রিয়াদের বিলাসবহুল শপিং মলগুলোর ভাড়া আগের বছরের তুলনায় শতাংশ কমেছে। শতাংশ কমেছে ছোট অঞ্চলগুলোর দোকান ভাড়া। সবচেয়ে বেশি আঘাত পড়েছে মক্কা নগরীতে। সেখানে কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ।

কেবল ভাড়ার ক্ষেত্রেই নয়, অন্য সব খাতেই মহামারী কিছু না কিছু প্রভাব রেখে গেছে। গত বছর সৌদি আরবের চারটি প্রধান শহরে কেবল হাজার ৯০০ বর্গমিটার অফিস স্পেস হস্তান্তর করা হয়েছে। আরো অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা মহামারীর কারণে পিছিয়ে গেছে। সময়ের মধ্যে আবাসিক সম্পত্তি বন্ধকের পরিমাণ বেড়েছে ৪৮ শতাংশ।

আবাসিক ভিলার চাহিদা বাড়ায় দেখা গেছে, মোট বন্ধকের ৮০ শতাংশই ধরনের সম্পদ। গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের সাকানি প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৭৭ হাজার আবাসন ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে। গোটা বছরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে লাখ ৪০ হাজার ইউনিট। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রথম পাঁচ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক পূরণ হয়ে গেছে।

দেশটির আতিথেয়তা খাতের কর্মকাণ্ডে কিছুটা উন্নতি দেখা দিয়েছিল। ২০২১ সালের প্রথমার্ধের মধ্যেই রিয়াদের খাতে ৫৯০টি হোটেল কক্ষ যুক্ত হয়েছে। সেখানে অবশ্য জেদ্দায় কেবল একটি হোটেলের কাজ শেষ হয়েছে। বেশির ভাগ হোটেলই নতুন সেবা খাতের উদ্বোধনের জন্য ফর্মুলা ওয়ান আসরের জন্য অপেক্ষা করছে। যেটি চলতি বছরের ডিসেম্বর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে বছর কেবল স্থানীয়দের হজের সুযোগ দেয়ায় মক্কার আতিথেয়তা খাত চাপের মুখে পড়েছে। কারণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অন্য দেশ থেকে হজযাত্রী আসা বন্ধ রয়েছে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে মক্কার খাতসংশ্লিষ্টদের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন