এসএসসি নভেম্বরে, এইচএসসি ডিসেম্বরে: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষা বছরের নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং এইচএসসি ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। গতকাল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষার ভিত্তিতে, বাকি আবশ্যিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন হবে এসএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষার বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে। আর যদি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয় তাহলে অ্যাসাইনমেন্ট বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। অথবা শুধু বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমেও মূল্যায়ন হতে পারে। সেটি পরে জানানো হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এবার মূল্যায়নের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের ফলাফল দিতে চাই। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে খুব অল্প সময়ে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এজন্য নতুন করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করা হবে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ১২ সপ্তাহে ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ১৫ সপ্তাহে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বিষয়ে দীপু মনি বলেন, এখন শিক্ষার সংকট বিশ্বব্যাপী। ইউনিসেফ-ইউনেসকো অতি সম্প্রতি বলেছে, যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, শিক্ষার সংকট বিপর্যয়কর হতে পারে। তারা আরো বলেছে, স্কুল খুলে দিলে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। সবকিছু বিবেচনায় খুলে দেয়া দরকার। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণের যে হার এবং এখন মৃত্যুর সংখ্যাও যা, তাতে মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। এটি নিশ্চয়ই সবাই মনে করেন। আর এখন করোনার ডেল্টা ধরনের পর অনেক শিশুও আক্রান্ত হচ্ছে। এটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা তখনই খুলে দিতে পারব, যখন মনে করব এখন আশঙ্কা অনেক কম। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও মোটামুটি একটি অবস্থায় নিয়ে আসতে পারি, যখন তাদের মাধ্যমে পরিবারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে না। সংক্রমণের হার কিছুটা কমে গেলে হয়তো প্রস্তুতি নিয়ে খুলতে পারব।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে তিনি বলেন, আমরাও মনে করি যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক অবস্থায় শ্রেণীকক্ষের পাঠদানে ফিরিয়ে নিতে পারব, ততই মঙ্গল। আমরা এখন অনলাইন টিভির মাধ্যমে পাঠদান, অ্যাসাইনমেন্ট এগুলোর কোনোটিই শ্রেণীকক্ষের আদর্শ বিকল্প নয়। শ্রেণীকক্ষের পাঠদানের অনেক সুফল রয়েছে। শুধু সামনাসামনি শিক্ষকের সঙ্গে আদান-প্রদান, বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে শেখার শুধু এসব সুফল রয়েছে তা- নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন শিক্ষার্থী আসে, তখন তার শারীরিক মানসিক বিকাশে স্বাভাবিক যে সুযোগ থাকে, সেই সুযোগ থেকেও শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এটি বোঝার জন্য, জানার জন্য নিশ্চয়ই দাতা সংস্থার মন্তব্যের প্রয়োজন পড়ে না।

করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি আছে। যদিও সরকার ২৩ জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত আবারো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও স্বাভাবিকভাবে বাড়বে। এরমধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে বিষয়টি আরো স্পষ্ট যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত আর খুলছে না।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি মাদ্রাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন