সিপিডির ওয়েবিনারে বক্তারা

এক বছরে ডিজিটাল প্লাটফর্মে পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ডিজিটাল প্লাটফর্মনির্ভর অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে ডিজিটাল অবকাঠামো এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী এক বছরে প্লাটফর্মে পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। গতকাল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ফ্রেডরিখ-ইবার্ট-স্টিফটুংয়ের (এফইএস) উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল প্লাটফর্ম ইকোনমি শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক . ফাহমিদা খাতুন, এফইএস বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফেলিক্স কোলবিত্জ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক . এম আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সিনিয়র সহসভাপতি ফারহানা রহমান, পাঠাও-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হুসেইন মো. ইলিয়াস, এক্সওয়াইজেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা চিফ অপারেশনস অফিসার ইলমুল হক সজীব, গারবেজম্যানের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম উদ্দিন শুভ, আইফার্মার সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ ইফাজ এবং ডক্টোরোলা লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা পালস হেলথকেয়ার সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আবদুল মতিন ইমন। ওয়েবিনারে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আগামীতে এগিয়ে নেয়ার বিশেষ করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ইকোনমির গুরুত্ব অপরিসীম। এক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে সফলতা সুনিশ্চিত।

মূল প্রতিবেদনে সৈয়দ ইউসুফ বলেন, বিশ্বের অনলাইনভিত্তিক শ্রমবাজারের ১৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। এছাড়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইনভিত্তিক শ্রম সরবরাহকারী দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে দুই হাজার ওয়েবভিত্তিক উদ্যোক্তা এবং প্রায় ৫০ হাজার ফেসবুকনির্ভর উদ্যোক্তা রয়েছেন। বিশেষত চলমান কভিড-১৯ অতিমারীর পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার সুযোগ বেড়েছে। আগামী এক বছরে প্লাটফর্মে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তিনি আরো বলেন, ইন্টারনেট বিস্তার এবং স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তার কারণে প্রচুর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বাজারে আসছে। কিন্তু সে অ্যাপগুলোর বিষয়ে এখনো যথাযথ নীতিমালা তৈরি হয়নি। গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মে কৌশলগত পরিবর্তন আনার পাশাপাশি গ্রাহকসেবার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা, সময়মতো পরিষেবা সরবরাহ করা, -শপের জন্য দক্ষ ইনভেন্টরি পরিচালনা, নমনীয় রিটার্ন পলিসি, সার্বিক স্বচ্ছতা প্রভৃতি বিষয় নিশ্চিতের সুপারিশও করেন তিনি।

এর আগে সূচনা বক্তব্যে . ফাহমিদা খাতুন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে হলে আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানো, আর্থিক সুবিধা এবং নীতিমালা তৈরি করে খাত থেকে আমরা লাভবান হতে পারব। উদ্যোক্তা ভোক্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ডিজিটাল প্লাটফর্মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

ডিজিটাল প্লাটফর্মভিত্তিক অর্থনীতি একটি সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে ফেলিক্স কোলবিত্জ বলেন, প্রভাবশালী স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্তির মাধ্যমে ধরনের গবেষণা আলোচনা এই নতুন খাতগুলোর প্রসারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করবে বলে মনে করি।

. এম আসাদুজ্জামান বলেন, খাতে ক্রমাগত প্রযুক্তিগত অভিযোজনের ব্যাপার থাকে। যে কারণে প্রশিক্ষিত প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল অপরিহার্য।

খাতে বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিংয়ে রেমিট্যান্স নিয়ে আসার বিষয়টিকে সহজ করার জন্য যথেষ্ট নীতিসহায়তা বা পলিসি সাপোর্ট প্রয়োজন মন্তব্য করে ফারহানা রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজার বাড়ানোর জন্য দেশীয় প্লাটফর্মের ব্যবহার, আরো বেশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে নজর দেয়া, ফেসবুকনির্ভর -কমার্সের ক্ষেত্রে একটি ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে অথেনটিকেশন গড়ে তোলা জরুরি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন