আরো কঠিন হলো পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থবিল পাস হয়েছে। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিদ্যমান সুযোগ রহিত করা হলেও পাস হওয়া অর্থবিলে সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে করের পরিমাণ বাড়িয়ে আড়াই গুণ করা হয়েছে। অবশ্য করের পরিমাণ বাড়িয়ে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেয়া হলেও সেটি খুব একটা কার্যকর হবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

গতকাল পাস হওয়া অর্থবিলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ কর এবং করের ওপর শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার কথা বলা হয়েছে। এক বছর পর্যন্ত বিনিয়োগ করা অর্থ পুঁজিবাজারে রাখতে হবে। কেউ যদি এক বছরের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়ে যান তাহলে সেক্ষেত্রে আরো ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ২১১ জন করদাতা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে ২৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করেছেন। এর বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে তারা সরকারকে ২৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার কর দিয়েছেন। চলতি অর্থবছরের বাজেটে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈধ করার বিষয়টি তুলনামূলক সহজ ছিল। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারের সিকিউরিটিজে ১০ শতাংশ কর পরিশোধ করে এক বছরের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতারা পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। সিকিউরিটিজ বলতে স্টক, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, বন্ড, ডিবেঞ্চার, সরকারি বন্ড সিকিউরিটিজ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অনুমোদিত অন্য যেকোনো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে। প্রথমে বাজেট প্রস্তাবে তিন বছরের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার কথা বলা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বাজারসংশ্লিষ্টদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সময়সীমা তিন বছর থেকে কমিয়ে এক বছর করা হয়।

পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার জন্য গত বছরের বাজেট প্রস্তাবে বিষয়টি উত্থাপন করেছিল মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আগামী অর্থবছরের বাজেটেও অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে বৈধ করার সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছিল সংগঠনটি। বিদ্যমান হারের তুলনায় আড়াই গুণ কর বাড়িয়ে অর্থবিলে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে বিএমবিএর প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, চলতি অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর এক বছরের জন্য বিনিয়োগ রাখার শর্ত দিয়েও খুব বেশি করদাতাকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করা যায়নি। অবস্থায় করের পরিমাণ আরো বাড়ানো হলে করদাতারা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আরো বেশি নিরুৎসাহিত হবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন