দক্ষিণ এশিয়ার
দেশগুলোয়
পুত্রসন্তানদের
প্রতি
বাড়তি
মনোযোগ
আর
মায়ের
পক্ষপাতমূলক
আচারণ
মেয়েদের
আত্মোন্নয়ন
এবং
পরবর্তী
কর্মজীবনে
প্রতিষ্ঠিত
হওয়ার
সম্ভাবনা
সীমিত
রেখেছে।
সন্তান
ভূমিষ্ঠের
আগে
লিঙ্গ
যাচাই,
গর্ভপাত
ও
প্রসব-পরবর্তী
কন্যাশিশু
হত্যা
জনসংখ্যায়
ভারসাম্যহীনতার
অন্যতম
কারণ।
সুনির্দিষ্টভাবে
বলতে
গেলে,
এ
অঞ্চলে
পুরুষের
চেয়ে
নারীর
সংখ্যা
অপেক্ষাকৃত
কম,
যেটি
সমাজে
বিদ্যমান
নারীবিদ্বেষী
সংস্কৃতি
ও
মানসিকতার
বহিঃপ্রকাশ।
নোবেল বিজয়ী
অর্থনীতিবিদ
অমর্ত্য
সেনের
মতে,
গর্ভধারণের
ক্ষেত্রে
লিঙ্গবৈষম্য
এবং
পুত্রসন্তানের
আকাঙ্ক্ষা
সমাজে
বিদ্যমান
নারী-পুরুষের
অসমতা
আরো
প্রকট
করছে।
গর্ভধারণের
সময়
পুত্রসন্তানের
প্রতি
অগ্রাধিকার
প্রদানের
বিষয়টি
বৃহত্তর
সামাজিক
সমস্যাকে
স্থায়ী
রূপ
দিয়েছে।
এখনো
সমাজের
একটি
বড়
অংশ
কন্যাশিশুর
তুলনায়
পুত্রসন্তানকে
অনেক
বেশি
গুরুত্ব
দেয়।
হিন্দু
ধর্মে
যেমন
মা-বাবার
মৃত্যুর
পর
তাদের
সত্কারে
রীতি-রেওয়াজ
পরিপালনে
ছেলেরা
গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা
পালন
করে।
পুত্রসন্তানদের
অগ্রাধিকার
প্রদানের
ক্ষেত্রে
সাংস্কৃতিক
ঐতিহ্যও
বড়
ভূমিকা
রাখে।
দক্ষিণ
এশিয়ায়
দাম্পত্য
সহিংসতা,
বাল্যবিবাহ
এবং
যৌতুক
প্রথার
কারণে
কন্যাসন্তানের
অনাকাঙ্ক্ষিত
মৃত্যুর
ঘটনা
বেড়েছে।
পাশাপাশি
ঐতিহাসিকভাবে
সব
ক্ষেত্রে
পুত্রসন্তানদের
সামাজিক
অগ্রাধিকার
এ
অঞ্চলে
মানব
উন্নয়নের
পথে
বড়
প্রতিবন্ধক।
বিশ্বের অন্য
যেকোনো
দেশের
তুলনায়
ভারতে
সমস্যাটির
ব্যাপকতা
অনেক
বেশি।
শিক্ষা
ও
অর্থনৈতিক
সুযোগ
প্রাপ্তিতে
মেয়েরা
ছেলেদের
তুলনায়
অনেক
পিছিয়ে
এবং
সমাজে
বড়
ধরনের
অসমতা
বিদ্যমান।
১৯৯০-এর
দশক-পরবর্তী
দেশটি
দ্রুত
অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধি
অর্জন
করলেও
লৈঙ্গিক
দৃষ্টিভঙ্গি
ও
প্রচলিত
সামাজিক
মূল্যবোধের
ক্ষেত্রে
বৃহৎ
পরিসরে
তেমন
কোনো
পরিবর্তন
আসেনি।
সন্তান
জন্মের
আগে
লিঙ্গ
যাচাইয়ের
প্রযুক্তি
প্রসারের
মধ্য
দিয়ে
এ
বৈষম্য
আরো
প্রকট
হয়েছে।
শিক্ষা
ও
কর্মক্ষেত্রে
লাখ
লাখ
নারীর
অনুপস্থিতিসহ
দেশটিতে
নারী
ও
পুরুষ
অনুপাতের
বড়
ধরনের
ভারসাম্যহীনতা
তৈরি
হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত
সমস্যাগুলো
ক্রমে
প্রকট
হচ্ছে।
জন্মোত্তর
লিঙ্গ
শনাক্তের
কারণে
পাঁচ
বছরের
কম
বয়সী
মেয়েদের
মৃত্যু
বেড়েছে।
আলট্রাসাউন্ড
প্রযুক্তির
প্রসার
একে
আরো
ভারসাম্যহীন
করে
তুলেছে।
ফলস্বরূপ,
৫০
বছরে
ভারতের
জনসংখ্যায়
পুরুষের
বিপরীতে
নারীর
ঘাটতি
বেড়েছে
দ্বিগুণ।
জাতিসংঘের
স্টেট
অব
দ্য
ওয়ার্ল্ড
পপুলেশন
২০২০
প্রতিবেদন
অনুসারে,
শুধু
ভারত
থেকেই
হারিয়ে
গেছে
৪৬
মিলিয়ন
নারী
শিশু,
যা
বিশ্বের
মোট
জনসংখ্যার
প্রায়
এক-তৃতীয়াংশ।
এক্ষেত্রে
টেকসই
উন্নয়ন
অভীষ্ট
(এসডিজি) অর্জনে
সহায়ক
সঠিক
নীতিমালা
প্রণয়নের
জন্য
লিঙ্গভিত্তিক
অসম
ও
পক্ষপাতমূলক
আচরণের
মূল
উৎস
সম্পর্কে
স্বচ্ছ
ধারণা
লাভ
করা
প্রয়োজন।
এসডিজির
চতুর্থ
ও
পঞ্চম
লক্ষ্যমাত্রায়
মানসম্পন্ন
শিক্ষা
এবং
লিঙ্গসমতার
কথা
উল্লেখ
করা
হয়েছে।
কারণ
এটি
বিশেষ
করে
গ্রামীণ
ও
দারিদ্র্যপীড়িত
অঞ্চলগুলোয়
মা-বাবার
কাছে
তাদের
কন্যাসন্তানকে
সমসুযোগ-সুবিধা
প্রদানের
গুরুত্ব
তুলে
ধরে।
লক্ষ্য
অর্জনে
দক্ষিণ
এশিয়ায়
বিদ্যমান
বড়
ধরনের
লিঙ্গবৈষম্যের
কারণগুলোকে
গোড়া
থেকেই
চিহ্নিত
করা
জরুরি।
প্রচলিত লিঙ্গভিত্তিক
সামাজিক
প্রথা
এবং
প্রচলিত
রীতি
যেমন
পুরুষেরা
বাইরে
যাবে,
নারীরা
ঘর-গৃহস্থালি
সামলাবে—এটি
একার্থে
পুত্রসন্তানদের
প্রতি
সমাজের
অসম
দৃষ্টিভঙ্গির
প্রতিফলন।
একই
সঙ্গে
এটি
আমাদের
সমাজে
পুত্রসন্তানের
অর্থনৈতিক
প্রয়োজনীয়তা
ব্যাখ্যা
করে। যেমন
একটা
প্রচলিত
ধারণা
আছে
যে
পুত্রসন্তান
ভূমিষ্ঠ
হলে
তা
এক
ধরনের
আর্থিক
সুবিধা
প্রদান
করে
বা
ছেলের
বিয়ে
দিয়ে
বড়
অংকের
যৌতুক
আনা
সম্ভব।
প্রচলিত
এ
ধ্যান-ধারণাগুলো
শিক্ষা
ক্ষেত্রে
লিঙ্গবৈষম্য
প্রকট
করে,
যার
ব্যাপ্তি
পরবর্তী
প্রজন্মের
মধ্যেও
সামাজিক
বৈষম্য
বাড়িয়ে
তুলবে।
সঠিক
নীতিমালা
প্রণয়নের
মাধ্যমে
শিক্ষা
ক্ষেত্রে
সামাজিক
বৈষম্য
দূর
করার
সুফল
অনেক,
যেমন
শিক্ষিত
নারীরা
ছোট
পরিবার
গঠনের
মাধ্যমে
তাদের
সন্তানদের
সুস্বাস্থ্য
ও
উন্নত
শিক্ষা
নিশ্চিত
করেন।
অতত্রব, পুত্রসন্তানদের
প্রতি
পক্ষপাতিত্ব,
চিকিৎসা
ক্ষেত্রে
অগ্রাধিকার
এবং
কন্যাশিশুদের
শিক্ষার
পেছনে
বিনিয়োগ
অনীহা—এ
সবকিছুর
সমাধান
জরুরি।
এক্ষেত্রে
বেশকিছু
বিষয়ে
বাংলাদেশ
দীর্ঘমেয়াদি
সামাজিক
অগ্রগতির
অনন্য
দৃষ্টান্ত
সৃষ্টি
করেছে।
সম্প্রতি
পরিচালিত
একটি
গবেষণা
থেকে
প্রাপ্ত
তথ্য
ও
উপাত্তের
ওপর
ভিত্তি
করে
আমরা
হাজারো
বাংলাদেশী
নারীর
সন্তান
ধারণ-সংক্রান্ত
কাঙ্ক্ষিত
ও
প্রকৃত
পছন্দগুলো
বিশ্লেষণ
করেছি।
গবেষণার
ফল
সম্প্রতি
ওয়ার্ল্ড
ডেভেলপমেন্ট
জার্নালে
Is son
preference disappearing from Bangladesh? (বাংলাদেশ
থেকে
পুত্রসন্তান
প্রীতি
কি
অদৃশ্য
হয়ে
গেছে?)
শিরোনামের
একটি
প্রবন্ধে
প্রকাশিত
হয়েছে।
নিবন্ধে
বিষয়টির
আরো
বিস্তারিত
ব্যাখ্যা
রয়েছে।
কেউ
চাইলে
এটি
দেখতে
পারেন। (https://www.sciencedirect.com/science/article/abs/pii/S0305750X20304812)
এখনো গর্ভধারণের
সময়
পুত্রসন্তান
ভূমিষ্ঠের
বিষয়টি
কিছুটা
গুরুত্ব
পায়,
তবে
আমাদের
জরিপের
ফল
বলছে
অনাগত
সন্তান
ছেলেই
হবে—মায়েদের
মধ্যে
এ-জাতীয়
আকাঙ্ক্ষা
কমেছে।
যে
নারীরা
মাধ্যমিক
শিক্ষার
গণ্ডি
পেরিয়েছেন,
তারা
সন্তান
ধারণকালে
লিঙ্গসমতার
বিষয়টি
গুরুত্ব
দিচ্ছেন।
তাহলে
এ
পরিবর্তন
কেন
হচ্ছে?
উল্লেখ্য, তিন
দশক
আগে
বাংলাদেশের
শিক্ষিত
নারীদের
সামনে
অর্থ
উপার্জনের
সুযোগ
ছিল
সীমিত,
তাদের
আর্থিক
অবস্থাও
ছিল
অনুন্নত।
তাই
তাদের
কাছে
কাঙ্ক্ষিত
শিশুর
সংখ্যা
ও
লিঙ্গ
নির্ধারণের
ক্ষেত্রে
কন্যাসন্তানের
চেয়ে
পুত্রসন্তানই
প্রাধান্য
পেত।
শিক্ষিত
মায়েদের
মধ্যেও
পক্ষপাতমূলক
মনোভাব
ছিল
প্রকট।
পরবর্তী
সময়ে
মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ে
উপবৃত্তি
প্রকল্পের
আওতায়
দেশব্যাপী
নারীশিক্ষা
ত্বরান্বিত
করার
উদ্যোগ
নেয়া
হয়।
কর্মসূচিটি
শুরু
হয়
১৯৯০-৯১
সালে।
এর
আওতায়
নারী
শিশুদের
শিক্ষায়
বিশেষ
তহবিল
বরাদ্দ
এবং
বাল্যবিবাহের
বিপরীতে
স্কুলে
যাওয়াকে
উৎসাহিত
করা
হয়।
মূলত
তখন
থেকেই
বাংলাদেশ
নারীশিক্ষায়
ভারতকে
ছাড়িয়ে
যেতে
থাকে।
উপবৃত্তি কর্মসূচি
বিদ্যালয়ে
শিক্ষার্থী
ভর্তির
ক্ষেত্রে
লিঙ্গবৈষম্য
দূর
করতে
গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা
পালন
করে,
যা
পরবর্তী
সময়ে
শ্রমবাজারেও
বড়
ধরনের
পরিবর্তন
এনে
দেয়।
মেয়েদের
স্কুলে
ভর্তির
সংখ্যা
বৃদ্ধির
সঙ্গে
তৈরি
পোশাক
রফতানি
খাতের
উন্নয়নে
এটি
সম্পূরক
ভূমিকা
রাখে।
এ
দুটো
প্রক্রিয়া
সম্মিলিতভাবে
পরবর্তী
সময়ে
বাংলাদেশে
লাখো
নারীর
কর্মসংস্থানের
পথ
উন্মোচিত
করে। গবেষণা
থেকে
আমরা
আরো
যে
বিষয়টি
জেনেছি
তা
হচ্ছে,
বেতনভুক্ত
কাজের
সুযোগপ্রাপ্ত
নারীদের
মধ্যে
নির্দিষ্ট
লিঙ্গের
সন্তানের
আকাঙ্ক্ষা
কমে
এসেছে।
বিশেষ
করে
যেসব
এলাকায়
তৈরি
পোশাক
শিল্পের
প্রসার
ঘটেছে,
সেখানে
নারীদের
মধ্যে
কাঙ্ক্ষিত
শিশুর
ক্ষেত্রে
লিঙ্গসমতা
এসেছে।
সব মিলিয়ে
নারীশিক্ষার
অগ্রগতি
ও
নারীদের
কর্মসংস্থান
বৃদ্ধি
লৈঙ্গিক
ভারসাম্য
প্রতিষ্ঠায়
সহায়ক
ভূমিকা
রেখেছে।
অনাগত
সন্তানটি
ছেলে
হবে
না
মেয়ে—নারীদের
মধ্যে
এমন
আকাঙ্ক্ষাও
দূর
করা
সম্ভব
হয়েছে।
এটি
বাংলাদেশের
জনসংখ্যায়
সাম্প্রতিককালে
অর্জিত
লিঙ্গ
ভারসাম্য
নির্দেশ
করে।
বিশেষ
করে
পাঁচ
বছর
বয়সী
কন্যাশিশু
মৃত্যুর
হার
কমে
৩
শতাংশে
দাঁড়িয়েছে,
যা
প্রজননের
ক্ষেত্রে
লিঙ্গ
ভারসাম্যের
বিষয়টিও
সমর্থন
করে।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক
মুখ্য
অর্থনীতিবিদ
লরেন্স
এইচ
সামারস
১৯৯২
সালে
উন্নয়নশীল
দেশগুলোর
ক্ষেত্রে
নারীশিক্ষায়
বিনিয়োগের
বিষয়টিকে
সবচেয়ে
লাভজনক
ও
প্রভাবশালী
বিনিয়োগ
হিসেবে
উল্লেখ
করেন।
আমাদের
গবেষণায়ও
এটি
সত্য
প্রমাণিত
হয়েছে।
নারীশিক্ষা
সম্প্রসারণে
স্কুল
পর্যায়ে
বিনিয়োগ
এবং
নারীদের
অর্থনৈতিক
অংশগ্রহণের
সুযোগ
সৃষ্টির
মাধ্যমে
দীর্ঘমেয়াদে
নারী
উন্নয়নে
ইতিবাচক
প্রভাব
রাখা
সম্ভব—বাংলাদেশ
থেকে
দক্ষিণ
এশিয়ার
দেশগুলো
এ
নীতিগত
শিক্ষা
নিতে
পারে।
[স্বত্ব:
প্রজেক্টসিন্ডিকেট
]
নিয়াজ আসাদুল্লাহ: উন্নয়ন
অর্থনীতির
অধ্যাপক
মালয়া
বিশ্ববিদ্যালয়,
কুয়ালালামপুর
নাজিয়া মনসুর: প্রভাষক
প্যারিস-ডাউফিন
বিশ্ববিদ্যালয়,
লন্ডন
ক্যাম্পাস
তেরেসা রান্ডাজো: সহকারী
অধ্যাপক
সি
ফুসকারি
ইউনিভার্সিটি
অব
ভেনিস
জাকি ওয়াহাজ: সহযোগী
অধ্যাপক
কেন্ট
বিশ্ববিদ্যালয়
ভাষান্তর: রুহিনা ফেরদৌস