প্রায় দুই মাস হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের গাড়িতে করে হাসপাতাল থেকে নিজ বাসভবনে পৌঁছান তিনি। হাসপাতাল থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় তাকে পৌঁছে দেয়া হয়। বাসায় পৌঁছালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও শামীম এস্কান্দার তাকে শুভেচ্ছা জানান।
এর আগে দুপুরে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বৈঠক করে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করে বাসায় নিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। এর পরই তাকে বাসায় নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
গতকাল রাতে খালেদা জিয়া বাসায় পৌঁছানোর পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরা হয়। গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজার সামনে করা ওই ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. এফএম সিদ্দিকী বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন, তাই ওনাকে বাসায় আনা হয়েছে। দু-তিন সপ্তাহ পর উনাকে আবার নিয়মিত কিছু পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেয়া লাগতে পারে। খালেদা জিয়ার লিভার-সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে, তার চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার গুঞ্জন ওঠে। পরদিন ১১ এপ্রিল জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে বিএনপি। সে সময় খালেদা জিয়া ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজায় আরো আট জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, খুব লো টাইপের সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার (খালেদা জিয়া)।
পরবর্তী সময়ে গত ২৭ এপ্রিল খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। ছয়দিন পর তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে জরুরিভাবে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেদিন থেকে হাসপাতালের হূদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলে আসছিল।
৭৫ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তিন বছর আগে দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান। দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তাকে মোট দুই দফায় এ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।