চলমান বিধিনিষেধ অমান্য করে চলছে নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতিহাট ও চৌবাড়িয়া পশুর হাট।
এতে দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
এছাড়া হাট দুটিতে ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি গরুতে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা ও ছাগলে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা হাসিল আদায়ের নিয়ম থাকলেও এ দুই হাটে প্রতিটি গরুর জন্য ক্রেতার কাছ থেকে ৬০০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
এছাড়া প্রতিটি ছাগলের জন্য ক্রেতার কাছ থেকে ৪০০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
ইজারাদারের এ অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সতিহাট ও চৌবাড়িয়া পশুর হাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়লেও জমজমাট পশুর হাট।
হাটের ভেতরে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি।
সরকারিভাবে প্রতিটি গরুতে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা ও ছাগলের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা হাসিল আদায় নির্ধারণ করা থাকলেও গরুপ্রতি ৬০০ টাকা ও ছাগলের জন্য ৪০০ টাকা করে হাসিল আদায় করা হয়েছে।
এছাড়া লিখনিতে গরু বিক্রেতার থেকে ৫০ টাকা এবং ছাগল বিক্রেতার থেকে ২০ টাকা করে নেয়া হয়।
অতিরিক্ত এ হাসিল আদায় করা হলেও রসিদে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই।
সতিহাট পশুর হাটে ছাগল কিনতে এসেছেন উপজেলার বাখরাবাদ গ্রামের মমতাজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ছাগল পালনের জন্য ২ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনেছি।
মাত্র ২ হাজার টাকা দিয়ে কেনা এ ছাগলের জন্য আমার থেকে ৪০০ টাকা হাসিল নেয়া হয়েছে।
আবার ছাগলের বিক্রেতার কাছে ২০ টাকা লিখনি বাবদ নিয়েছে।
অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রতিবাদ করলেও ইজারাদারের লোকেরা কর্ণপাত করে না।
তারা বলে এটাই সরকার নির্ধারিত হাসিল রেট।
চৌবাড়িয়া পশুর হাটে গরু কিনতে এসেছেন উপজেলার বাঘাপুর গ্রামের বেলাল হোসেন।
তিনি বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হাটে গরু কিনতে এসেছি।
গরু খুঁজে খুঁজে সবশেষে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেছি।
এ গরুতে সরকার নির্ধারিত হাসিল ৪০০ টাকা হলেও আমার থেকে ৬০০ টাকা হাসিল নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও গরু বিক্রেতার কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়েছে।
৬৫০ টাকা নিলেও হাসিল আদায়ের রসিদে টাকার কোনো পরিমাণ উল্লেখ নেই।
অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের প্রতিবাদ করলেও লাভ হয় না।
ইজারাদাররা কাউকে তোয়াক্কা করে না।
চৌবাড়িয়া পশুর হাটের হাসিল আদায়কারী আশরাফুল ইসলাম বলেন, হাটে প্রতিটি গরুর ক্রেতার থেকে ৬০০ টাকা করে হাসিল নেয়া হয়।
এটাই সরকার নির্ধারিত হাসিলের রেট।
চৌবাড়িয়া হাট ইজারাদার আব্দুস সামাদ অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হাট বসানোর মতো কোনো জায়গা নেই।
এখানকার কিছু ব্যক্তিমালিকানা জমি ও কলেজের ভেতরের জায়গা ভাড়া নিয়ে সেখানে হাট বসানো হয়।
এজন্য আমাদের অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়।
তাই কিছু টাকা বেশি নিতে হয়।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বণিক বার্তাকে বলেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই।
স্থানীয় সরকার বিভাগ নওগাঁর উপপরিচালক উত্তম কুমার রায় বণিক বার্তাকে বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধে চৌবাড়িয়া পশুর হাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এর পরও পশুর হাট পরিচালনা করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।