সাপ্তাহিক লেনদেন

বাজার মূলধন ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে লাগাম টানতে সরকারের জারি করা বিধিনিষেধের মধ্যেই স্বাভাবিক লেনদেন চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। স্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে সপ্তাহ শেষে উভয় এক্সচেঞ্জের সবগুলো সূচক লেনদেনের সঙ্গে বাজার মূলধন কমেছে হাজার কোটি টাকার বেশি। সেই সঙ্গে উভয় এক্সচেঞ্জে সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ শেয়ারদর কমেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল লাখ হাজার ৯৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৪৪৯ টাকা। যা সপ্তাহজুড়ে লেনদেন শেষে কমে দাঁড়িয়েছে লাখ হাজার ১৩৪ কোটি ৮২ লাখ ৪৭ হাজার ১০১ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহ শেষে পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে হাজার ৮০২ কোটি ৯৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪৮ টাকা বা দশমিক ৩৫ শতাংশ।

বাজার মূলধনের সঙ্গে গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অংকে মোট লেনদেন কমেছে। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর মোট লেনদেন হয়েছে হাজার ৭৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ৯৮ হাজার ২৫৫ টাকা। যেখানে তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১২ হাজার ১৮৮ কোটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৪৫ টাকা। সে হিসেবে টাকার অংকে ডিএসইর মোট লেনদেন কমেছে হাজার ৩৮৯ কোটি ৫৬ লাখ হাজার ৫৯০ টাকা বা ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

এদিকে গত সপ্তাহে টাকার অংকে ডিএসইর গড় লেনদেনও কমেছে। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর গড় লেনদেন হয়েছে হাজার ৯৫৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫১ টাকা। যা তার আগের সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ছিল হাজার ৪৩৭ কোটি ৬৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬৯ টাকা। সে হিসেবে গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন কমেছে ৪৭৭ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার ৩১৮ টাকা বা ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে হাজার ৫২ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল হাজার ৬৬ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক শূন্য পয়েন্ট বা দশমিক ৩৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে হাজার ১৯৭ দশমিক শূন্য পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল হাজার ২০৫ দশমিক ১০ পয়েন্টে।  ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে হাজার ২৯০ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল হাজার ২৯৯ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯ কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ২১০টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির আর লেনদেন হয়নি ৪টির।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ১০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ১০ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাতের। আর দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর আগে বাজার মূলধন ছিল লাখ ৩৫ হাজার ২৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা সপ্তাহজুড়ে লেনদেন শেষে কমে দাঁড়িয়েছে লাখ ৩৩ হাজার ৬৭০ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহ শেষে পাঁচ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন কমেছে হাজার ৫৬৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা দশমিক ৩৫ শতাংশ।

সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ হাজার ২৩২ টাকার। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫২৭ কোটি ৪৫ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৩ টাকার। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৮২ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার ২১ কোটি টাকা বা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪ দশমিক ৪০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৭০ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৭ হাজার ৫৮৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৮টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪২টির, কমেছে ১৭৬টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন