এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভ্রমণ বিধিনিষেধে রয়েছে পুরো বিশ্ব।
বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হতে শুরু করেছে।
সহজ করা হচ্ছে কোয়ারেন্টিন বিধিনিষেধ।
কর্মীদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে অফিসে।
ফলে বিশ্বজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ব্যবসায়িক ভ্রমণ।
সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক ভ্রমণ আগের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
তবে করপোরেট এ ভ্রমণের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কভিডজনিত বিধিনিষেধের ওপর।
খবর দ্য ন্যাশনাল।
ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা ভিস্তাজেট এবং ব্যবসায়িক ও প্রযুক্তিনির্ভর ওয়েবসাইট ডব্লিউএসজে ইন্টেলিজেন্সের এ সমীক্ষায় প্রায় ৮১ শতাংশ ব্যবসায়ী নেতা করপোরেট ভ্রমণের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
‘দ্য ফিউচার অব বিজনেস ট্রাভেল: ড্রাইভিং গ্লোবাল সাকসেস’
শীর্ষক সমীক্ষাটিতে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে লকডাউনের পরে সংস্থাগুলো ধীরে ধীরে কর্মীদের অফিসে ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
সমীক্ষায় ১০ জনের মধ্যে ছয়জন অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা কভিড-১৯ মহামারীর আগের সময়ের চেয়ে ভবিষ্যতে সরাসরি সভা আরো বাড়বে বলে আশা করেন।
যদিও মহামারীর সময় ভার্চুয়াল সভা বেড়ে গিয়েছিল।
ঘন ঘন ব্যক্তিগত উড়োজাহাজের যাত্রীরা, বিশেষ করে যারা বছরে আট বা ততোধিক ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ভ্রমণ করেন, তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ব্যবসায়ী সরাসরি মিটিংয়ে মিলিত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ সরাসরি সভা বৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী নন।
কভিড-১৯ মহামারীতে বেশির ভাগ দেশ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় ব্যবসায়িক ভ্রমণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফলে লাখ লাখ কর্মী ও ব্যবসায়ী দূর থেকে কাজ করতে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যয়সংকোচনে বাধ্য হয়েছে।
করপোরেট ভ্রমণ উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলোর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এয়ারলাইনসগুলোর যাত্রীদের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ হলেও প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের ২০ থেকে ৩০ শতাংশের জোগান দেয় এ ব্যবসায়িক ভ্রমণ।
আর এ কারণ হলো ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ভ্রমণ।
সমীক্ষায় ৫৫ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সম্পর্ক বাঁচাতে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে ভ্রমণ করতে চান।
এক্ষেত্রে ৫০ লাখ ডলারেরও বেশি ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকা ক্লায়েন্টদের প্রাধান্য দেয়া হবে।
এছাড়া ৫০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের ব্যবসায়িক চুক্তি কিংবা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে অংশ নিতে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রায় অর্ধেক ব্যবসায়ী।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরাসরি সাক্ষাত্কার কিংবা সভা সম্পর্কের রসায়নে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করে।
আর এগুলো মোবাইল কিংবা কম্পিউটার স্ক্রিনে সম্ভব নয়।
ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক ভ্রমণ মূলত বিধিনিষেধের ওপর নির্ভর করছে।
৪৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা গন্তব্যগুলো পুনরায় খোলার অপেক্ষায় রয়েছেন এবং ৪২ শতাংশ ব্যবসায়ী তাদের গন্তব্যের জন্য বিধিনিষেধ হালনাগাদ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ব্যবসায়িক ভ্রমণ বাতিল হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের সুযোগ ও তাদের কাজকর্মকেও প্রভাবিত করেছে।
সমীক্ষায় মাত্র ১০ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাদের সংস্থাগুলো ব্যবসায়িক ভ্রমণকে সীমাবদ্ধ করেনি।
অন্যদিকে ২৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তাদের সংস্থা ভ্রমণের অনুমতি দেয় না।
তার পরও ৯৭ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, ব্যবসায়িক ভ্রমণ বিধিনিষেধের কারণে তাদের সংস্থাগুলোয় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
৩৪ শতাংশ সুযোগ হাতছাড়া হওয়া এবং ৩৩ শতাংশ চুক্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ভিস্তাজেটের বিপণন ও উদ্ভাবন বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ম্যাতিও আট্টি বলেন, কিছু ব্যবসায়িক ভ্রমণ সত্যিই অপরিহার্য।
ব্যক্তিগত ভ্রমণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংস্থাগুলোকে অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে।
এক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর হয়তো কিছু অর্থ সাশ্রয় হয়েছিল।
তবে সেটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার তুলনায় খুব সামান্যই।
এক্ষেত্রে লাখ লাখ ডলারের ক্ষতি হয়েছে।